ভূমিকা বদলেছে, দর্শনও কি? হয়তো না। খেলোয়াড় জীবনে গৌতম গম্ভীর নানা বিবাদে জড়িয়েছেন। তার অন্যতম কারণ, ক্রিকেট ফিলোসফি। তাঁর কাছে একটা জিনিসই আসল, হয় জিত নয় হার, এর বাইরে কিচ্ছু নেই। ভালো খেলা, দুর্দান্ত চেষ্টার কোনও দাম নেই। ক্রিকেট কেরিয়ারে প্রতিদ্বন্দ্বিতা পছন্দ ছিল। এর জন্য প্রতিপক্ষ স্লেজিং করলেও সেটা তাঁর কাছে স্বাভাবিক মনে হত, নিজেও স্লেজিং করতেন। সবটাই যতক্ষণ মাঠের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে, তাতে কোনও ভুল দেখছেন না। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে বিরাট কোহলি, রঞ্জি ট্রফিতে মনোজ তিওয়ারিদের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছেন। সবটাই প্রতিদ্বন্দ্বিতার মানিসকতা থেকেই। মাঠের বাইরের গম্ভীর একেবারে আলাদা। ভারতীয় দলের হেড কোচ গৌতম গম্ভীর ক্রিকেট দর্শন নিজে কী খোলসা করেন?
শ্রীলঙ্কা সফরে রয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট টিম। তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জিতেছে ভারত। তৃতীয় টি-টোয়েন্টিতে অবশ্য চাপে ছিল ভারতীয় দল। শেষ অবধি সুপার ওভারে জয় ছিনিয়ে নেয়। প্রতিপক্ষর জন্য জোড়া সারপ্রাইজ রেখেছিলেন কোচ গৌতম গম্ভীর ও টি-টোয়েন্টি ক্যাপ্টেন সূর্যকুমার যাদব। ১৯তম ওভারে রিঙ্কু সিং এবং শেষ ওভারে সূর্য নিজে বোলিং করেন। এই দুই চমকের কারণেই ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে। সেখানে সহজেই জিতেছে ভারত। ওয়ান ডে সিরিজের প্রথম ম্যাচই টাই। শেষ দিকে ১৫ বলে ১ রান প্রয়োজন ছিল, হাতে তখনও ২ উইকেট, ক্রিজে শিবম দুবের মতো ব্যাটার। কিন্তু সেই ম্যাচ টাই হয়েছে।
ক্রিকেট দর্শন নিয়ে ব্রেকফাস্ট উইথ চ্যাম্পিয়ন অনুষ্ঠানের একটি এপিসোডে গৌতম গম্ভীর বলেন, ‘ছেলেবেলা থেকেই আমার প্রতিদ্বন্দ্বিতা পছন্দ। স্কুল ক্রিকেটেও একই মানসিকতা নিয়ে খেলেছি। অনেক সময় বন্ধুদের বিরুদ্ধেও ম্যাচ খেলেছি। তাতে তাগিদ কমেনি। তারা মাঠের বাইরে আমার বন্ধু, মাঠে প্রতিপক্ষ। আমার পরিষ্কার ক্রিকেট দর্শন, হয় জিত নয় হার। মাঝামাঝি কিছু নেই। আমি ডিপ্লোম্যাটিক হতে পারি না। চেষ্টা করেছি, পারিনি, এসবের কোনও দাম নেই। জিতেছি বা হেরেছি, এটাই হল শেষ কথা।’
কোচ হিসেবেও হয়তো এই দর্শনই ধরে রাখবেন গৌতম গম্ভীর। প্লেয়ারদেরও হয়তো এই বার্তাই দেবেন। ওয়ান ডে সিরিজের শুরুটা ভালো হয়নি। ম্যাচ টাই হলেও সান্ত্বনার জায়গা নেই। ম্যাচটা ভারতের হাতেই ছিল। বরং টাই হওয়াটা শ্রীলঙ্কার জন্য নৈতিক জয় হতে পারে। কাল সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ান ডে। এখন দেখার বাকি দু-ম্যাচে ভারতের পরিকল্পনা কী থাকে।