AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

AI on Environment: ঠান্ডা মাথায় কাজ করতে জল চাইছে AI!

AI শুষে নিচ্ছে জল! বর্জ্যে ভরিয়ে দিচ্ছে পরিবেশ!

AI on Environment: ঠান্ডা মাথায় কাজ করতে জল চাইছে AI!
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 02, 2025 | 6:26 PM

‘AI চাকরি খেয়ে নেবে’-র ভয় থেকে ‘AI গোপন ছবি ফাঁস করে দেবে’, ইদানিং ভয়-এর আপগ্রেডেশন হয়েছে ব্যবহারকারীদের মধ্যে। তবে শুধুই কি ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের আশঙ্কা? মোটেও নয়। সামগ্রিক পরিবেশ ও জলবায়ুর উপরেও রয়েছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের কুপ্রভাব বেড়ে চলার আশঙ্কা। কেন? রাষ্ট্রসংঘের পরিবেশ সংক্রান্ত বিভাগ UNEP-র সাম্প্রতিক রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, মানুষের মতোই দ্রুত ও মননশীল কাজ করতে পারলেও AI হার্ডওয়্যার নির্মাণ, ডেটা সেন্টারের জন্য পরিবেশে ব্যাপক প্রভাব পড়ছে।

১. ক্রমবর্ধমান জ্বালানি

AI মডেল, বিশেষত লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেল পরিচালনার জন্য ডেটা সেন্টারগুলিকে বিপুল কম্পিউটিং পাওয়ার ‘জেনারেট’ বা তৈরি করতে হয়। যার জন্য লাগে প্রচুর বিদ্যুশক্তি। আজও বিশ্বের অধিকাংশ দেশই বিদ্যুতের জন্য জীবাশ্ম জ্বালানির উপর নির্ভরশীল। বুঝতেই পারছেন এই বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদনের ফলে কার্বন নির্গমণ বেড়েই চলেছে। আগামী এক থেকে দু’বছরে পোড়া কার্বন উৎপাদন দ্বিগুণ হওয়ার আশঙ্কা রাষ্ট্রসংঘের। একটা সহজ হিসাব দিই। মাইক্রোসফটের মতো সংস্থা ২০২২ সালের তুলনায় ২০২৩ সালে কার্বন নির্গমণ বাড়িয়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ।

২. জলের খরচ

ডেটা সেন্টারগুলিকে ‘ঠাণ্ডা’ রাখতে লাগে প্রচুর জল। সমুদ্রের নোনা জলে হয় না, লাগে মিষ্টি পানীয় জলের সমতুল্য। এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশে পানীয় জল মাটির গভীরে নেমে যাচ্ছে। তুলে আনতে গভীর নলকূপের সাহায্য নিতে হচ্ছে। বুঝতেই পারছেন ভবিষ্যতে AI -এর চাহিদা যত বাড়বে, জলের চাহিদা পাল্লা দিয়ে বাড়বে। সেক্ষত্রে মানুষের পানীয় জলের ভাণ্ডারে টান পড়ার আশঙ্কা। ব্লুমবার্গের মে মাসের রিপোর্ট বলছে, মার্কিন মুলুকে মাত্র ১০০ মেগাওয়াটের একটি ডেটা সেন্টারকে ঠাণ্ডা রাখতে প্রতিদিন ২০ লক্ষ লিটার জল লাগে। ওই জলে ৬৫০০ পরিবারের জলের চাহিদার সমান। বিশ্বজুড়ে আজ ডেটা সেন্টারগুলি বার্ষিক ৫৬০ বিলিয়ন লিটার জল খরচ করে। ২০৩০-এ জল খরচের পরিমাণ বেড়ে হতে পারে ১২০০ বিলিয়ন লিটার।

৩. ইলেক্ট্রনিক বর্জ্যের রমরমা

AI মডেল তৈরিতে যে হার্ডওয়্যার প্রয়োজন, যেমন চিপ বা GPU– সেগুলি দ্রুতই বর্জ্যে পরিণত হয়। দিন দিন এই বর্জ্যের স্তূপ বাড়বে বই কমবে না। এসব বর্জ্য থেকে মাটিতে লেড বা পারদের মতো ক্ষতিকারক পদার্থের মাত্রা বাড়বে। যেখানে ই-বর্জ্য ফেলা হবে তার আশেপাশের এলাকার মাটিতে চাষের যোগ্য বা জল পানের যোগ্য থাকবে না বলে আশঙ্কা।

৪. অনিয়ন্ত্রিত মাইনিং

AI চিপ তৈরিতে লাগে বেশ কয়েকটি দুষ্প্রাপ্য খনিজ পদার্থ। যেগুলি খনি থেকে তুলে আনতে প্রায়ই কোনওরকম নিয়ম মেনে ‘মাইনিং’ বা খোঁড়াখুড়ি হয় না। মনে করুন, সম্প্রতি ইউক্রেনের উপর চাপ বাড়িয়ে এইরকমই দুষ্প্রাপ্য খনিজ উত্তোলনের অনুমতি একরকম জোর করেই আদায় করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কারণ ইউক্রেনে টাইটেনিয়াম, ইউরেনিয়াম, লিথিয়াম, গ্রাফাইটের মতো দুষ্প্রাপ্য খনিজের ভাণ্ডার রয়েছে। যেগুলি বড় বড় মার্কিন সংস্থার কর্ণধারদের ভবিষ্যতে AI নিয়ে গবেষণাতে প্রয়োজন।

সব মিলিয়ে AI যেন হয়ে উঠেছে এক আধুনিক যুগের ‘হীরক রাজার গবেষক’। যা চোখ ধাঁধানো কাণ্ড করে চলেছে সামনে, আর পিছন থেকে নিঃশব্দে খেয়ে নিচ্ছে বিদ্যুৎ, জল আর পরিবেশের ভারসাম্য! ভাবুন তো, এইসব কাণ্ড করে যদি AI একদিন পরিবেশকেই ‘মগজ ধোলাই’ করে দেয়! তাই প্রযুক্তির সঙ্গে পাল্লা দিতে হলে পরিবেশকেও রাখতে হবে নিয়ন্ত্রণে। নয়তো ভবিষ্যতের লোকজন শুধু ‘নস্টালজিয়া’ করেই বলবে—“একটা সময় ছিল, যখন গাছ দেখা যেত!”