একটু দেরিতে হলেও বিগত কয়েক মাসে দেশের বাজারে বেশ কিছু ইলেকট্রিক গাড়ি (Electric Vehicle) লঞ্চ করেছে। এবার চিনের এক জনপ্রিয় ইলেকট্রিক গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থা BYD (Build Your Dreams) ভারতের বাজারেও তাদের গাড়ি লঞ্চ করেছে। প্রিমিয়াম সেই ইলেকট্রিক গাড়ির নাম MPV – e6। এটিই ভারতের প্রথম ব্যাটারি-পাওয়ার্ড MPV। পাশাপাশি আবার ভারতে কোম্পানির প্রথম ইলেকট্রিক ভেহিকলও বটে। প্রসঙ্গত, BYD চিনের মার্কেটে অন্যতম জনপ্রিয় ইলেকট্রিক গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থা। সেই সঙ্গেই আবার ইউরোপেও সম্প্রতি নিজেদের প্রভাব বিস্তার করেছে তারা। মূলত ইলেকট্রিক গাড়ি এবং বাস তৈরি করে থাকে এই কোম্পানি। এবার ভারতের পালা। এ দেশে ফ্লিট অপারেটরদেরই টার্গেট করছে BYD।
MPV – e6 গাড়িটির বিশেষত্ব কী?
বেশ বড় এবং প্রিমিয়াম প্যাকেজের একটি গাড়ি। গাড়ির সামনে ‘ড্রাগন ফেস’ স্টাইলিং দেওয়া হয়েছে। এই ইলেকট্রিক MPV-তে রয়েছে পাতলা ক্রোম বার, যার সঙ্গে হেডল্যাম্প অ্যাসেম্বল করা হয়েছে। প্রজেক্টর ল্যাম্প রয়েছে এবং লোয়ার সাইডে থাকছে DRL। গাড়ির সামনে কোনও প্রথাগত মেন গ্রিল দেওয়া হয়নি। তবে মেশ স্ট্রাকচার চমৎকার ভাবে ডিজাইন করা হয়েছে।
ব্ল্যাকড-আউট একাধিক এলিমেন্ট দেওয়া হয়েছে গাড়িটিতে। গাড়ির রিয়ারভিউ মিরর, বাম্পার এবং পিলার সবই কালো রঙের। গাড়ির রিয়ার প্যানেল থেকে আপনি দেখতে পাবেন যে ডিজাইন গাড়ির সমগ্র লুক কভার করছে। পাতলা ক্রোমবারে টেললাইট কানেক্ট করা রয়েছে, যা প্রিমিয়াম-নেস টাচ দিতে পারে এবং তার জন্য টেলগেটের উপরের স্পয়লার সিটিং কালো করা হয়েছে। ম্যানুয়ালি অপারেটেড টেলগেট খুললেই ৫৮০ লিটারের ট্যাঙ্ক আনলক করে। এত বড় ট্যাঙ্ক হলেও তা কিন্তু ব্যবহার করা খুবই সহজ।
ফার্স্ট-রো এক্সপিরিয়েন্স
সামনের আসনগুলিতে বসলেই আপনাকে সম্পূর্ণ ব্ল্যাকড-আউট কেবিনে স্বাগত জানানো হবে। গাড়ির চালকের কনসোল দুটি অ্যানালগ ঘড়ি এবং একটি মাঝামাঝি ডিজিটাল স্ক্রিন ব্যবহার করে যানবাহন এবং ভ্রমণের অবস্থা সম্পর্কে সমস্ত তথ্যের জন্য। ড্রাইভারের স্ক্রিন একটি মাল্টি-ফাংশন স্টিয়ারিং হুইল দ্বারা সুরক্ষিত। এই e6 গাড়ির কেবিনের ভিতরে থাকছে একটি ঘূর্ণায়মান টাচস্ক্রিন ইনফোটেনমেন্ট সিস্টেম। এটি আসলে গাড়ির ওরিয়েন্টেশন পরিবর্তন করতে পারে এবং মুহূর্তের মধ্যে সেটিকে ট্যাবলেটে কনভার্ট করতে পারে। ব্লুটুথ এবং WLAN-এর সাহায্যে এটি স্মার্টফোনের সঙ্গে পেয়ারও করা যাবে। পাশাপাশি আবার ম্যাপের সঙ্গে ইনবিল্ট নেভিগেশন ডিসপ্লে করবে এবং ব্যাটারি স্টেটাসও দেখা যাবে সেখান থেকে।
ড্রাইভ মোডের জন্য গাড়ির সেন্ট্রাল কনসোলে রয়েছে রোটারি ডায়াল যা দেখতে প্রিমিয়াম এবং আপ-ক্লাস টাচ দিতে পারে। কিন্তু দুঃখজনক বিষয়টি হল, এই গাড়িতে আকর্ষণীয় কিছু ফিচার্স আবার দেওয়া হয়নি। তার মধ্যে রয়েছে ওয়্যারলেস চার্জিং, ইলেকট্রিক্যালি অ্যাডজাস্টেবল বা ভেন্টিলেটেড সিট। তবে গাড়ির ভিতরে দ্বিতীয় রো-তেই সবথেকে বেশি সময় অতিবাহিত করবেন যাত্রীরা। কারণ এই সেকেন্ড রো-তে রয়েছে একটি বীভৎস লেগরুম। পাশাপাশি আবার ৬ ফুটেরও বেশি লম্বা মানুষজনের জন্য গাড়িটির হেডরুমও চমৎকার।
সব মিলিয়ে এই গাড়িতে সফর করলে সেই সফর যাত্রীর জন্য বেশ আরামদায়ক হবে। দ্বিতীয় রো-তে ২ থেকে ৩ জন অনায়াসে বসতে পারবেন। গাড়িটির পিছনে রয়েছে সিঙ্গেল এসি ভেন্ট। এছাড়াও এই গাড়িতে দুটি USB সকেট দিয়েছে কোম্পানি। এর ফলে সেকেন্ডে রো-তে বসেও যাত্রীরা স্মার্টফোন চার্জ করতে পারবেন। যদিও এই গাড়িতে আর একটি গুরুত্বপূর্ণ ফিচার দেওয়া হয়নি। কোনও ডিভাইস রাখার জন্য কোনও পকেট নেই এই ইলেকট্রিক গাড়িতে।
MPV – e6 কেনা উচিত?
এই ইলেকট্রিক গাড়ির দাম ২৯.১৫ লাখ টাকা। তবে ফিচার্স এবং লুকের দিক থেকে দামের সঙ্গে যথেষ্টই সামঞ্জস্যপূর্ণ এই MPV – e6। যদিও CKD হওয়ার কারণে এই গাড়ির দাম অনেকের কাছেই বেশি ঠেকতে পারে আর তা অস্বাভাবিকও নয়। সংস্থার তরফ থেকে জানানো হয়েছে, পরবর্তীতে গাড়িটি ভারতেই প্রস্তুতের চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। আর তাতে এই ইলেকট্রিক গাড়ির দাম কিছুটা কম হতে পারে। যে সব ফিচার্স এখন নেই, সে সময় সেই ফিচারগুলি কোম্পানি দেয় কি না, সেটাই এখন দেখার।
আরও পড়ুন: ওলা এস১ প্রো-র রিভিউ করলেন জনপ্রিয় এই ভ্লগার, কেমন ইলেকট্রিক স্কুটার, শুনে নিন তার মুখ থেকেই…
আরও পড়ুন: ভারতের প্রথম গাড়ি প্রস্তুতকারী সংস্থা হিসেবে এনএফটি লঞ্চ করল এমজি মোটর
আরও পড়ুন: স্পাইডার-ম্যান ও থোর কালার স্কিম পেল টিভিএস এনটর্ক ১২৫ সুপারস্কোয়াড এডিশন, দাম ৮৪,৮৫০ টাকা