Ola Electric Scooter: কেউ বলছেন ‘পয়সা উসুল’, কারও মুখ ভার, ওলার ইলেকট্রিক স্কুটার নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া
এত সমস্যার পরেও অনেকেই ওলার ইলেকট্রিক স্কুটারের প্রশংসা করেছেন। কম সময়ে এক জায়গা থেকে অন্যত্র যাওয়া যাচ্ছে এই ইলেকট্রিক স্কুটারের সাহায্যে, এমনটা জানিয়েছেন অনেকেই।
২০২১ সালে গাড়ির দুনিয়ায় সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে ওলার ইলেকট্রিক স্কুটার (Ola Electric Scooter) নিয়ে। গত ১৫ অগস্ট ভারতে দু’টি ভ্যারিয়েন্ট এস১ এবং এস১ প্রো, (Ola S1 and S1 Pro) ওলার এই দুই ইলেকট্রিক স্কুটার লঞ্চ হয়েছিল। কিন্তু লঞ্চের আগে এই ইলেকট্রিক স্কুটার (Electric Scooter) যতটা সাড়া ফেলেছিল, লঞ্চের পর ঠিক ততটাই সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন গ্রাহকরা। বিভিন্ন ধরনের সমস্যার কথা শোনা গিয়েছে এই কয়েকদিন। তার মধ্যে সবার আগে রয়েছে দেরিতে স্কুটারের ডেলিভারি হওয়া। এই প্রসঙ্গে বেশ কয়েকজন গ্রাহকের সঙ্গে আলোচনা করে ওলার ইলেকট্রিক স্কুটারের বিভিন্ন সমস্যাগুলি প্রকাশ্যে নিয়ে এসেছে News9 সংস্থা।
ওলার ইলেকট্রিক স্কুটারের দেরিতে ডেলিভারি
প্রাথমিক ভাবে নভেম্বর মাসেই ওলার ইলেকট্রিক স্কুটার ডেলিভারির কথা ছিল। কিন্তু তা হয়নি। গত ১৫ অগস্ট ভারতে লঞ্চ হয়েছিল ওলার ইলেকট্রিক স্কুটার। লঞ্চের আগে জুলাই মাস থেকেই শুরু হয়েছিল প্রিবুকিং। মাত্র ৪৯৯ টাকার বিনিময়ে প্রিবুকিংয়ের সুবিধা ছিল। সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে আরও ২০ হাজার টাকা দিয়ে নিজেদের বুকিং কনফার্মও করেছিলেন অনেক গ্রাহক। এর পরেই ডেলিভারির প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কথা ছিল। প্রথমে শোনা গিয়েছিল অক্টোবর মাসে এই ইলেকট্রিক স্কুটারের ডেলিভারি শুরু হবে। তবে তা পিছিয়ে নভেম্বর মাসে করা হয়। সেখানেও ডেলিভারির শুরুর নির্ধারিত সময়ের ১০ দিন আগে আবার পিছিয়ে দেওয়া হয় ওলার ইলেকট্রিক স্কুটারের ডেলিভারি। শেষ পর্যন্ত ১৫ ডিসেম্বর শুরু হয়েছিল ওলার ইলেকট্রিক স্কুটারের ডেলিভারি। কিন্তু নতুন বছরের প্রথম মাসের অর্ধেক পার হয়ে গেলেও এখনও বহু গ্রাহক তাঁদের স্কুটার ডেলিভারি পাননি। অপেক্ষা করতে করতে বিরক্ত হয়ে গিয়েছেন তাঁরা। পুরো টাকা দেওয়ার পরেও দু’মাসের বেশি অপেক্ষা করে ফেলেছেন এই গ্রাহকরা। কিন্তু ইলেকট্রিক স্কুটারের ডেলিভারি পাননি। এমনকি অনেকের ক্ষেত্রে ওলার অ্যাপে দেখানো হয়েছে যে ইলেকট্রিক স্কুটার ডেলিভারি হয়ে গিয়েছে। অথচ গ্রাহক বাস্তবে স্কুটার চোখেও দেখতে পাননি।
নিম্নমানের কোয়ালিটি কন্ট্রোল, আচমকা ব্যাটারি চার্জ কমে যাওয়া, নেই অনেক ফিচারও
গ্রাহকদের অনেকেই টুইটারে স্ক্রিনশট শেয়ার করে জানিয়েছেন যে, ওলা সংস্থাকে স্কুটারের সমস্যা জানানোর পর তাদের তরফে যেভাবে এসে স্কুটারগুলো নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, সেই ব্যবস্থা মোটেই ভাল নয়। বেশিরভাগ গ্রাহকই ওলার এই নিম্নমানের কোয়ালিটি কন্ট্রোল দেখে হতাশ হয়েছেন। এমনকি ওলার ইলেকট্রিক স্কুটারের ডিজাইন নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। এর পাশাপাশি একাধিক গ্রাহকের ক্ষেত্রে আচমকা ইলেকট্রিক স্কুটারের চার্জ কমে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিয়েছে। অনেক ইউজারই এই সমস্যার কথা জানিয়েছেন। যেকোনও মুহূর্তে চার্জ কমে ২-৩ শতাংশ বা শূন্যে পৌঁছে যাচ্ছে। গ্রাহকদের মধ্যে অনেকে এই অভিযোগও জানিয়েছেন যে, চার্জ কমতে থাকার পর ইলেকট্রিক স্কুটার ইকো মোডে না গিয়ে সরাসরি পার্কিং মোডে চলে যাচ্ছে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ইকো মোড অনেকটা স্মার্টফোনের ব্যাটারি সেভার ফিচারের মতো কাজ করে। অনেকের ক্ষেত্রে এমন হয়েছে যে স্কুটারের ড্যাশবোর্ডে দেখানো হয়েছে যে একটি নির্দিষ্ট দূরত্ব বা রেঞ্জে তখনও চালানো যাবে ইলেকট্রিক স্কুটার। কিন্তু আসলে তা হচ্ছে না। মাঝরাস্তায় বিপদেও পড়েছেন অনেক গ্রাহক। কোথাও দেখাচ্ছে ৩ শতাংশ চার্জ রয়েছে। অথচ চার্জ দিতে শুরু করলে ১৯ শতাংশ থেকে চার্জ নিচ্ছে ব্যাটারি। একগুচ্ছ সমস্যা দেখা দিচ্ছে ওলার ইলেকট্রিক স্কুটার।
তবে এত সমস্যার পরেও অনেকেই ওলার ইলেকট্রিক স্কুটারের প্রশংসা করেছেন। কম সময়ে এক জায়গা থেকে অন্যত্র যাওয়া যাচ্ছে এই ইলেকট্রিক স্কুটারের সাহায্যে, এমনটা জানিয়েছেন অনেকেই। ওলার এস১ প্রো ইলেকট্রিক স্কুটারের ‘হাইপার মোড’- এর তারিফ করেছেন অনেকেই। আগামী দিনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ওলার ইলেকট্রিক স্কুটারে চার্জ দেওয়ার জন্য হাইপার চার্জিং স্টেশন বসানোর পাশাপাশি ব্যবসাও বাড়াবে নেদারল্যান্ডের এই সংস্থা। ভারত জুড়ে এক হাজার শহরে হয়েছে টেস্ট ড্রাইভও। অনেক সমস্যা থাকার পরেও ওলার ইলেকট্রিক স্কুটারকে ‘পয়সা উসুল’ বলে খেতাব দিয়েছেন অনেক গ্রাহকই।