বার্নার ফোন (Burner Phone) যে আসলে কী জিনিস, খায় না মাথায় দেয়, তা নিয়ে বিন্দুবিসর্গও জানা ছিল না আম আদমির। আর সেই বার্নার ফোনই এখন শিরোনামে। কারণ? সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সিবিএস নিউজ় এবং ওয়াশিংটন পোস্টের তরফ থেকে হোয়াইট হাউসের কল লগস প্রকাশ করা হয়েছে, যেখানে দেখা গিয়েছে গত ৬ জানুয়ারি প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প (Donald Trump) ৭ ঘণ্টারও বেশি সময় হোয়াইট হাউসের কারও সঙ্গেই কথা বলেননি। প্রসঙ্গত, এই দিনই মার্কিন ক্যাপিটল সিজ় করেছিল একদল ক্ষিপ্ত জনতা, যাঁরা আসলে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমর্থক। এদিকে আবার এহেন বিবৃতির সঙ্গে একাধিক রিপোর্টের অসঙ্গতি দেখা যায়, যে সব রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল যে, ট্রাম্প সে দিন বর্তমান ভাইস-প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স, হাউস মাইনরিটি লিডার কেভিন ম্যাককার্থি এবং আলাবামা সেনেটর টম্মি টাবারভিলের সঙ্গে কথা বলছিলেন। আলাবামা সেনেটের, ট্রাম্পের সঙ্গে কথোপকথনের বিষয়টি মেনে নিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন যে, সে দিন ঠিক দুপুর ২টো নাগাদ ট্রাম্পের সঙ্গে কথা হয় তাঁর এবং ভাইস-প্রেসিডেন্টকে যে সিক্রেট সার্ভিস দ্বারা ক্যাপিটল থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে সেই বিষয়টি তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে জানিয়েছিলেন।
তাহলে কথোপকথন যেখানে হচ্ছে, তাহলে তা রেকর্ডেড হচ্ছে না কেন? সর্বোপরি কল লগের রিপোর্টেই বা তা ধরা পড়ছে না কেন? তাহলে কি প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বার্নার ফোনের ব্যবহার করেছিলেন? ওয়াশিংটন পোস্টের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলার সময় ডোনাল্ডা ট্রাম্প জানিয়েছেন যে, বার্নার ফোনের নামটাই তিনি আগে কখনও শোনেননি। শুধু ডোনাল্ড ট্রাম্প কেন। অনেকের কাছেই এই নাম অপরিচিত। তবে কেউ কেউ শুনে থাকতেও পারেন ২০০২ সালের আমেরিকান ক্রাইম ড্রামা ‘দ্য ওয়ার’-এর দৌলতে।
এদিকে আবার ট্রাম্পের প্রাক্তন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বল্টন প্রাক্তন প্রেসিডেন্টের এহেন দাবি খারিজ করে দিয়েছেন। সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজ়ের কাছে তিনি দাবি করেছেন যে, বার্নার ফোন আসলে কী, কী ভাবে কাজ করে, তা নিয়ে ট্রাম্পই তাঁকে একাধিক বিষয় জানিয়েছিলেন। এই ধরনের ফোনগুলি আসলে নামহীনতা বা বেনামী ফোনের অনুভূতি দিতে পারে। মার্কিন সংস্থা ট্র্যাকফোন এবং অ্যালকাটেল এই ধরনের ফোন বাজারে নিয়ে আসে। অপরাধমূলক কার্যকলাপ এবং সন্দেহের বশে স্ত্রী বা স্বামীকে ট্র্যাক করার জন্য ব্যবহৃত হয় আমেরিকায়। শুধু তাই নয়। পুলিশের নির্মমতা সম্পর্কে সরব প্রতিবাদীরা, পরকীয়ায় যুক্ত এমন স্বামী-স্ত্রী এবং রোমিং চার্জকে পাশ কাটিয়ে যেতে অনেক পর্যটকরাও এই ধরনের ফোন ব্যবহার করেন।
সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস-এর একটি রিপোর্টে বলা হচ্ছে, “মিস্টার ট্রাম্প নিজের সেলফোনটিকে খুব বিশ্বাস করেন, যখন হোয়াইট হাউসের ভিতরে কী চলছে, সিনিয়র সহকারীরা কী করছেন, তা জানার আগ্রহ জন্মায় তাঁর মধ্যে। অনেকের সঙ্গে এই ধরনের সেলফোনে কথাও বলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, যেমন ফক্স নিউজ়-এর সঞ্চালকের সঙ্গে। তাঁর রাজনৈতিক মতবাদ বা নির্দিষ্ট কোনও বিষয় নিয়ে তাঁর অভিযোগ জানাতেই ফক্স নিউজ়ের সঞ্চালকের সঙ্গে এই বার্নার ফোনে কথা বলেন ট্রাম্প।”
এদিকে সমগ্র বিষয়টি ট্রাম্প অস্বীকার করেছেন এবং বলেছেন, “এক্কেবারে ভুল খবর।” এখন এই প্যানেল তদন্ত করে দেখবে যে, ৬ জানুয়ারি সে দিন প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কি সত্যিই বার্নার ফোন ব্যবহার করেছিলেন, নাকি কোনও সাহায্যকারীর ফোন থেকে বা ব্যাক চ্যানেল ব্যবহার করে হোয়াইট হাউসে পোন করেছিলেন।
আরও পড়ুন: সবে লঞ্চ হয়েছে, এর মধ্যে ওয়ানপ্লাস ১০ প্রো ফোনে ১৬,৫০০ টাকা ছাড়, ৫ এপ্রিল থেকেই মিলবে অফার
আরও পড়ুন: হ্যাংআউটস-এ আর চ্যাট করতে পারবেন না! তবে চিন্তা নেই, বিকল্পের সন্ধানও নিয়ে এসেছে গুগল