AC And Ceiling Fan: এসি-র ঠান্ডা ছড়িয়ে দিয়ে ইলেকট্রিক বিল কমাতে পারে একমাত্র পুরনো ভাল সিলিং ফ্যান, দাবি গবেষণায়
AC Tips And Tricks: শুধু এসি চালালেই ঠান্ডা হবেন না আপনি। সঙ্গে পুরনো পাখাটাও চালিয়ে দিতে হবে। তবেই এসি-র যথাযথ ঠান্ডা ভাব আপনার কাছে পৌঁছবে এবং ইলেকট্রিক বিলও কম আসবে।
প্রচণ্ড গরমে এসি (AC) চালাচ্ছেন ঠিকই, কিন্তু আপনার এসি-রও যে উষ্ণপ্রবাহ থেকে নিস্তার নেই, তা কি জানেন? আর সেই কারণেই এসি চালানোর পরেও তার ঠিকঠাক ঠান্ডা আপনি তখনই অনুভব করতে পারেন, যখন আপনার মাথার উপরে পুরাতন, সুন্দর পাখাটি চালিয়ে দেবেন। সিলিং ফ্যানের (Ceiling Fan) হেলিকপ্টারের মতো পাখাই একটা এয়ার কন্ডিশনারের যথাযথ শীতল ভাব আপনার কাছে পৌঁছে দিতে পারে। শুধু তাই নয়। দীর্ঘ ক্ষণ একটা এসি চালিয়ে রাখলে যে মাত্রাতিরিক্ত ইলেকট্রিক বিল আসার সম্ভাবনা দেখা যায়, তা অনেকাংশেই কমিয়ে দিতে পারে সিলিং ফ্যান। সম্প্রতি একটি গবেষণা থেকে এমনই তথ্য উঠে এসেছে। সেখানেই বিজ্ঞানীরা পরিমাপ করে দেখেছেন যে, অতিরিক্ত গরমে মানুষ তখনই সবথেকে বেশি আরাম অনুভ করেন, যখন এসি-র সঙ্গে মাথার উপরে একটি পাখাও ঘুরতে থাকে। দেশের মোট ৮ শহরে ২,১৭৯ জন স্বেচ্ছাসেবকের সহযোগিতায় এই গবেষণাটি চালানো হয়েছে। অহমদাবাদ, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু, মুম্বই, কলকাতা, হায়দরাবাদ এবং সিমলার মতো আটটি শহরকে পাঁচটি জলবায়ু-ভিত্তিক অঞ্চলে ভাগ করা হয়েছিল।
কেপ্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন বিল্ডিং সায়েন্স অ্যান্ড এনার্জি ডিপার্টমেন্টের তরফ থেকে এই রিসার্চটি চালানো হয়েছে। মোট সাত জন বিশেষজ্ঞ এই গবেষণার বাস্তব রূপ দিতে সাহায্য করেছিলেন, যাদের মধ্যে একজন জার্মানির আচেন শহরের এবং বাকিরা অস্ট্রেলিয়ার সিডনি থেকে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, এসি চালিয়ে রাখলে এবং ০.৫ মিটার প্রতি সেকেন্ডে পাখা চালালে আহমদাবাদের এক ব্যক্তির থার্মাল কমফোর্ট লেভেল ২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড থেকে ৩২ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের আশেপাশে। তবে সিলিং ফ্যানের স্পিড এ ক্ষেত্রে ওঠানামা করতে পারে রেগুলেটরে ১ থেকে ৩-এর মধ্যে, যেখানে এসি চলতে পারে ইন্ডোর কন্ডিশনের জন্য সবথেকে স্বস্তিদায়ক অবস্থায়।
এদিকে আবার দিল্লিতে এসি চালিয়ে এবং প্রতি সেকেন্ডে ০.৩ মিটার বা ০.২ মিটারে পাখা চালিয়ে এক জন ব্যক্তির থার্মাল কমফোর্ট লেভেল ২৩ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। আবার হায়দরাবাদের ক্ষেত্রে প্রতি সেকেন্ডে ০.৫ মিটারে পাখার সঙ্গে এসি চালালে একজন ব্যক্তির থার্মাল কমফোর্ট লেভেল দেখা যাচ্ছে ২৪ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড থেকে ২৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড।
গবেষণায় অংশগ্রহণকারী এক গবেষক রঞ্জন রাওয়াল বলছেন, “কোনও একটা বাড়ির অভ্যন্তরে অত্যন্ত উষ্ণ পরিস্থিতিতে সিলিং ফ্যানের গতি তাপীয় অস্বস্তি কমাতে সাহায্যে করতে পারে এবং সেই সঙ্গেই এটি প্রচলিত শীততাপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার দ্বারা উদ্দীপিত শক্তিরও খরচ কমিয়ে দেয়।” মিস্টার রাওয়াল আরও যোগ করে বলছেন, “তবে আমাদের গবেষণায় একটা বিষয় পরিষ্কার হয়নি যে, কত স্পিডে পাখা চালালে তা ঘরের তাপমাত্রার সঙ্গে মানানসই হবে।”
ভারতে এই প্রথম এমন কোনও গবেষণা করে দেখা হল, যেখানে বাসস্থানের ক্ষেত্রে অ্যাডাপ্টিভ কমফোর্টের জন্য ভারতীয় মডেলকে কাজে লাগানো হয়েছে। পোশাকি ভাষায় এই ধরনের মডেলকে বলা হয়, ইন্ডিয়ান মডেল ফর অ্যাডাপ্টিভ কমফোর্ট ফর রেসিডেন্সেস বা আইম্যাক-আর। এর আগের মডেলটি ছিল আইম্যাক-সি, যা কমার্শিয়াল বিল্ডিংয়ের জন্য ২০১৬ সালে ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড অনুসারে ডেভেলপ করা হয়েছিল । রঞ্জন রাওয়াল আরও যোগ করে বললেন, “ভারতের সিলিং বা পাখা রয়েছে এমন ফ্যান ডিজ়াইন করা হয়েছে কেবল মাত্র হাই স্পিডে হাওয়া দেওয়ার জন্য। কিন্তু যখন এসি অন করা হচ্ছে, তখন আমাদের অস্বস্তি এড়াতে বায়ুর গতি কমই দরকার হয়।”
রঞ্জন রাওয়ালের টিমে আর যে সব সহকারী গবেষকরা ছিলেন, তাঁরা হলেন যশ শুক্লা, বিষ্ণু বর্ধন এবং স্নেহা আসরানি। তাঁরা আবার যুক্ত হয়েছিলেন মার্শেল স্যোয়েইকের ইনস্টিটিউট অফ অকুপেশনাল সোশ্যাল অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল মেডিসিন অফ ইউনিক্লিনিক রথ আচেন, জার্মানি; এবং রিচার্ড ডে ডিয়ার অফ স্কুল অফ আর্কিটেকচার, ইউনিভার্সিটি অফ সিডনির সঙ্গে। এই টিমের অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে ছিলেন, আইআইটি হায়দরাবাদের বিশাল গর্গ, জয়পুরের মালবিয়া এনআইটি-র জ্যোতির্ময় মাথুর এবং স্টুডিও ফর হ্যাবিট্যাট ফিউচার্সের সঞ্জয় প্রকাশ।
আরও পড়ুন: বাজারে হাজার একটা এসি! আপনার জন্য সেরাটি বাছবেন কী ভাবে?
আরও পড়ুন: এই গরমে ছটফট করার আগেই একটা এসি ভাড়া করে নিন! খরচ হবে মাত্র ১৫০০ টাকা, কী ভাবে নেবেন?
আরও পড়ুন: কম দামে এসির খোঁজ করছেন? ২০,০০০ টাকার মধ্যে সেরা হতে পারে এই ৭ মডেল