Cyborg Cockroach: জীব ও যন্ত্রের মিশ্রণে সাইবর্গ আরশোলা বানালেন বিজ্ঞানীরা, উদ্ধার-নজরদারির কাজ করবে সে

Cyborg Cockroach With Camera Backpack: ক্যামেরা ব্যাকপ্যাক দিয়ে সাইবর্গ আরশোলা বানিয়ে ফেলেছেন জাপানের একদল বিজ্ঞানী, যা উদ্ধারকার্য থেকে বিভিন্ন নজরদারির কাজে লাগবে। কীভাবে তৈরি করা হল ডিভাইসটি, জেনে নিন।

Cyborg Cockroach: জীব ও যন্ত্রের মিশ্রণে সাইবর্গ আরশোলা বানালেন বিজ্ঞানীরা, উদ্ধার-নজরদারির কাজ করবে সে
সেই সাইবর্গ আরশোলা।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 08, 2022 | 12:19 AM

Japan: কল্পবিজ্ঞানে আমরা সাইবর্গের কথা শুনেছি, যার অর্ধেক জীব এবং অর্ধেক যন্ত্র। মেশিন ও জীবকে মিশিয়ে কৃত্রিম উপায়ে সাইবর্গ তৈরি করা নিয়ে বিতর্ক আজকের নয়, অনেক দিন আগের। জীব ও মেশিনের এমন সাইবর্গ যে রোবটের মতোই বহু মানুষের কাজ খেয়ে নিয়ে পারে, সেই দিকটা নিয়েই মূলত বিতর্ক। যদিও একটা অংশের মানুষ আবার এদের সম্ভাব্য সুবিধাগুলির কথাও ভাবার কথা বলছেন। সাইবর্গের সুবিধা, অসুবিধা এবং যাবতীয় বিতর্কের মধ্যেই বিজ্ঞানীরা আপাতত এই ধরনের ইন্টারমিক্সের একটি ক্ষুদ্র সংস্করণ নিয়ে হাজির হয়েছেন, তা হল একটি সাইবর্গ আরশোলা। জ্যান্ত একটি আরশোলার সঙ্গে মেশিনের সংমিশ্রণে ওই সাইবর্গ ককরোচ বা সাইবর্গ আরশোলা তৈরি করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ ভাবে রিমোট দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা যাবে।

জাপানের রাইকেন সেন্টার ফর ইমারজেন্ট ম্যাটার সায়েন্সের একদল বিজ্ঞানী এই আরশোলাটি ব্যাকপ্যাক বা খোল তৈরি করেছেন, যা জ্যান্ত আরশোলার স্নায়ুতন্ত্রের সঙ্গে সংযুক্ত এবং তার পাওয়ার আউটপুট আগেকার ডিভাইসগুলির তুলনায় অন্তত 50 গুণ বেশি। এই সাইবর্গ আরশোলায় একটি অতি সূক্ষ্ম সোলার সেল দেওয়া হয়েছে, যা কোনও ভাবেই ওই আরশোলার স্বাভাবিক চলাচলকে প্রভাবিত করবে না। পরীক্ষার কাজে বিজ্ঞানীরা মাদাগাস্কার একটি বিশেষ প্রজাতির আরশোলাকে কাজে লাগিয়েছেন।

কীভাবে তৈরি হল এই সাইবর্গ আরশোলা

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, একটি আল্ট্রাথিন ফিল্ম ইলেকট্রনিক্স এবং একটি আঠালো ইন্টারলিভিং কাঠামোর সংমিশ্রণ ব্যবহার করে একটি সেল মডিউল তৈরি করা হয়। পরবর্তীতে সেই সেলটি বসিয়ে দেওয়া হয় একটি জ্যান্ত আরশোলার উপরে। আরশোলাটির বুকের সঙ্গে একটি ব্যাটারি এবং স্টিমুলেশন বা উদ্দীপনা মডিউল সংযুক্ত করে সৌর শক্তি চালিত এবং রিচার্জেবল কোষগুলিকে ডিজাইন করেছেন। তারপরই তাঁরা নিশ্চিত করেন যে, সৌর কোষ মডিউলটি আরশোলার পেটে লেগে থাকবে। বিষয়টি যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ ছিল, কারণ এমনটা না হলে আরশোলাটির চলাচল প্রভাবিত হতে পারত।

আরশোলাটির মুভমেন্ট যাতে আঘাতপ্রাপ্ত না হয় তা নিশ্চিত করার জন্য, বিজ্ঞানীরা বেশ কয়েকটি পাতলা ইলেকট্রনিক ফিল্ম পরীক্ষা করেছেন। পরবর্তীতে পর্যবেক্ষণও করে দেখেছেন যে সেগুলি কী ভাবে আরশোলার চলাচলকে প্রভাবিত করে। “একটি বাধা অতিক্রম করার জন্য প্রয়োজনীয় সময় পরিমাপ করে পাতলা-ফিল্ম সংযুক্তিকরণের কৌশলটির কার্যকারিতা পরিমাপ করা হয়েছিল,” দাবি করেছেন গবেষকরা।

শেষমেশ বিজ্ঞানীরা এমনই একটি ফিল্ম দিয়ে প্রক্রিয়াটি শেষ করেছেন যা মানুষের চুলের চেয়ে 17 গুণ পাতলা। তারপর তাঁরা দেখান যে, ওই ফিল্ম কী ভাবে আরশোলাটিকে ডান ও বামদিকে সরাতে পারে এবং তার স্নায়ুতন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত বেতার সংকেত ব্যবহার করে এটিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। “উদ্দীপনার জন্য ডিজাইন করা আউটপুট সংকেতগুলি একটি মডিউল ব্যবহার করে কোনও তারের সাহায্য ছাড়াই নিয়ন্ত্রিত হয়েছিল,” গবেষণাপত্রে লেখা হয়েছে।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, উদ্দীপনা সংকেতগুলি চার্জ করা ব্যাটারির মাধ্যমে 2.1 মিনিটের জন্য তারবিহীনভাবে প্রেরণ করা হয়েছিল। এই সময়ের মধ্যে একাধিকবার লোকোমোশন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করা হয়েছিল, যা নিশ্চিত করে ওয়্যারলেস নিয়ন্ত্রণ সফল ভাবে বারংবার সঞ্চালিত হয়েছিল। এখন এই সাইবর্গ আরশোলা মুভমেন্ট করতে সক্ষম, তবে তার কার্যকারিতা সম্পর্কে আরও গবেষণা করে দেখতে চান বিজ্ঞানীরা।

কী কাজে লাগতে পারে এই আরশোলা

পরিবেশ পর্যবেক্ষণ থেকে শুরু করে গতিবিধি ট্র্যাকিং এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় উদ্ধার ও অনুসন্ধান মিশনের সমন্বয়ের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে এই সাইবর্গ আরশোলা।