World’s Smallest Antenna: DNA ব্যবহার করে বিশ্বের সবথেকে ছোট অ্যান্টেনা বানালেন বিজ্ঞানীরা, চুলের থেকেও ২০,০০০ গুণ ছোট!
Nanoantenna: মানুষের চুলের থেকেও ২০,০০০ গুণ ছোট এই ন্যানোঅ্যান্টেনা বিজ্ঞানীদের নতুন ওষুধ সনাক্ত করতে এবং প্রাকৃতিক ও মানব-পরিকল্পিত ন্যানো প্রযুক্তিগুলিকে আরও ভাল ভাবে বুঝতে সাহায্য করবে।
বিশ্বের সবথেকে ছোট অ্যান্টেনা (World’s Smallest Antenna) বানিয়ে ফেললেন মন্ট্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক। সিন্থেটিক ডিএনএ (Synthetic DNA) ব্য়বহার করে তৈরি হয়েছে সেই অ্যান্টেনা। এই অ্যান্টেনা ঠিক কতটা ছোট? গবেষকরা জানিয়েছেন, এটি মানুষের চুলের থেকেও ২০,০০০ গুণ ছোট। সহজে ব্যবহারযোগ্য এই অ্যান্টেনাকে গবেষকরা বলছেন ন্যানোঅ্যান্টেনা (Nanoantenna)। তাঁদের দাবি, বিজ্ঞানীদের নতুন ওষুধ সনাক্ত করতে এবং প্রাকৃতিক ও মানব-পরিকল্পিত ন্যানো প্রযুক্তিগুলিকে আরও ভাল ভাবে বুঝতে সাহায্য করবে এই ন্যানোঅ্যান্টেনা। ছোট্ট এই ডিভাইস ফিট করা হয়েছে কিছু ফ্লুরোসেন্ট অণুর সঙ্গে। মূলত প্রোটিনের গতি নিরীক্ষণের জন্যই এটি ডিজাইন করা হয়েছে বলে আরও জানালেন বিজ্ঞানীরা।
মন্ট্রিল বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি জারি করে এই ন্যানোঅ্যান্টেনার গবেষণা সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য জানানো হয়েছে। প্রফেসর অ্যালেক্সিস ভ্যালে-বেলিসলে এই গবেষণাপত্রের প্রধান লেখক। তিনি বলেছেন, “গবেষণার ফলাফল এতটাই উত্তেজনাপূর্ণ ছিল যে, আমরা বর্তমানে এই ন্যানোঅ্যান্টেনাটিকে বাণিজ্যিকীকরণ করতে এবং বেশিরভাগ গবেষক ও ফার্মাসিউটিক্যাল শিল্পের কাছে উপলব্ধ করার জন্য একটি স্টার্ট-আপ কোম্পানিও স্থাপন করতে চলেছি।”
কী ভাবে এই ন্যানোঅ্যান্টেনা কাজ করবে?
যেমনটা আমরা আগেই জানিয়েছি, ন্যানোঅ্যান্টেনার মূল উদ্দেশ্য হল প্রোটিনের গতি নিরীক্ষণ করা, যেখানে এটি মূলত সময়ের সঙ্গে সঙ্গে প্রোটিনের কাঠামোগত পরিবর্তন পর্যবেক্ষণ করবে। বিজ্ঞানীরা ব্যাখ্যা করছেন, এই ক্ষুদ্র ডিভাইসের ডিজাইন ডিএনএ-র ‘লেগো-র মতো’ প্রপার্টি দ্বারা অনুপ্রাণিত, যা পাঁচ ন্যানোমিটার লম্বা একটি অ্যান্টেনা (শেষ ভাগে রয়েছে ফ্লুরোসেন্ট) তৈরি করতে সাহায্য করেছে। এই গবেষণার আর এক গবেষক স্কট হারাউন ডিভাইসের কর্মক্ষমতার ব্যখ্যা করতে গিয়ে বলেছেন, অ্যান্টেনা বিভিন্ন রঙে আলো নির্গত করে প্রোটিনের কাঠামোগত পরিবর্তনের সংকেত দেয়।
স্কট হারাউনের কথায়, “এটি ঠিক একটি দ্বিমুখী রেডিয়োর মতো যা রেডিয়ো তরঙ্গ গ্রহণ এবং প্রেরণ করতে পারে। ফ্লুরোসেন্ট ন্যানোঅ্যান্টেনা একটি রঙে বা তরঙ্গদৈর্ঘ্যে আলো গ্রহণ করে এবং প্রোটিনের গতিবিধির উপর নির্ভর করে এটি অনুভূত হয়। তারপরে সেটি অন্য রঙে আলো প্রেরণ করে, যা আমরা সনাক্ত করতে পারি।”
বিজ্ঞানীরা ন্যানোঅ্যান্টেনাটির ইঞ্জিনিয়ার করার জন্য মানুষের ডিএনএ বেছে নিয়েছিলেন। কারণ তারা বিশ্বাস করেন যে, ডিএনএ রসায়ন তুলনামূলক ভাবে সহজ এবং সহজেই প্রোগ্রাম করা যায়। বিশেষজ্ঞরা যাঁরা এই গবেষণাপত্রটি ‘জার্নাল ন্যাচেরাল মেথডস’-এ প্রকাশ করেছিলেন, তাঁরা জানালেন, এই অ্যান্টেনার মাধ্যমে অ্যালকালাইন ফসফ্যাটাজ় ডিটেক্ট করতে সক্ষম হয়েছিলেন। অ্যালকালাইন ফসফ্যাটাজ় হল, ক্যান্সার এবং অন্ত্রের প্রদাহের মতো রোগের সঙ্গে যুক্ত একটি এনজ়াইম।
ডিভাইসটি সফল ভাবে পরীক্ষা করার পর গবেষকরা বলছেন যে, ন্যানোমেকানিক্স আরও উন্নত করার জন্য এটিকে নতুন ড্রাগস আবিষ্কার করার কাজেও লাগানো যেতে পারে। প্রফেসর অ্যালেক্সিস ভ্যালে-বেলিসলে বলছেন, “সম্ভবত আমরা যেটি দ্বারা সবচেয়ে উত্তেজিত হয়েছি তা হল এই উপলব্ধি যে বিশ্বের অনেক ল্যাব, একটি প্রচলিত স্পেকট্রোফ্লুরোমিটার দিয়ে সজ্জিত। এই ন্যানোঅ্যান্টেনা সহজেই ল্যাবগুলি তাদের প্রিয় প্রোটিন অধ্যয়নের জন্য নিয়োগ করতে পারে। নতুন ওষুধ শনাক্ত করা বা নতুন ন্যানো প্রযুক্তি বিকাশ করার ক্ষেত্রে ব্যাপক ভাবে কার্যকর হতে পারে এটি।”
তথ্যসূত্র: বিশ্বের ক্ষুদ্রতম অ্যান্টেনা তৈরি করতে ডিএনএ ব্যবহার করলেন রসায়নবিদরা