বড় মন্ত্রিত্ব বিজেপিরই হাতে, কোন অঙ্কে ‘সন্তুষ্ট’ শরিকেরা?

অধরাই চারশো পারের স্বপ্ন, এনডিএ সরকারের ভরসা নীতীশ, নায়ডু। দর কষাকষিতে নরম হননি মোদী, বড় মন্ত্রিত্ব বিজেপিরই হাতে। কোন অঙ্কে ‘সন্তুষ্ট’ শরিকেরা? মসৃণ হবে জোটের পথ চলা? জোট সরকার কতটা সফল আমাদের দেশে? কোন কথা বলে ইতিহাস?

বড় মন্ত্রিত্ব বিজেপিরই হাতে, কোন অঙ্কে ‘সন্তুষ্ট’ শরিকেরা?
| Edited By: | Updated on: Jun 16, 2024 | 10:45 PM

স্লোগান উঠেছিল ‘অব কি বার চারশো পার’। বিজেপি ৩৭০, এনডিএ ৪০০। স্লোগানই সার, একক দল হিসেবে ম্যাজিক ফিগারই ছুঁতে পারেনি বিজেপি। কেন? কেন মসনদের লড়াইয়ে পিছিয়ে পড়ল গেরুয়া শিবির? কেন কথা দিয়েও কথা রাখতে পারলো না তারা? হারের কারণ কী? সে সব খোঁজ খবর তো চলছেই! প্রকাশ্যে মুখও খুলছেন দিলীপ ঘোষের মত নেতারা। সেখানে কাঠিবাজি থেকে আরও কত তত্ত্ব বেরিয়ে আসছে প্রতিদিন। পোস্টমর্টেম চলছেই। কিন্তু তারই মাঝে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে শপথ নিল এন ডি এ সরকার। ১৪ আর ১৯ দুবার একার জোরে ক্ষমতায় এসেছে বিজেপি। এবার কিন্তু শরিকরা অনেক বড় ভরসা। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপি একাই ৩০৩টি আসন জিতেছিল। এবার চারশো তো অনেক দূর, তিনশো পেরোয়নি! দেশ শেষ দশবছর এক পার্টি, এক নেতাকে ভোট দিয়েছে কারণ অতীতের আয়ারাম গয়ারাম জোট সরকারকে ভালো চোখে দেখেনি দেশের মানুষ। অটল বিহারী বাজপেয়ী নয়ের দশকে দুবার হোঁচট খেলেও ৯৯ তে পাঁচ বছর চালিয়েছেন। মনমোহন সিংকেও বারবার ঝড়ঝাপটা সামলে সরকার চালাতে হয়েছে। মোদীর কাছে প্রথম জোটের চ্যালেঞ্জ। কীভাবে সামলাবেন তিনি? কীভাবে সামলাবে বিজেপি? আজকের নিউজ সিরিজ ‘জোট রাজনীতির প্রত্যাবর্তন’।

আজকের নিউজ সিরিজে আছে চারটি পর্ব, দশ বছর পরে, জোটের সূত্রপাত, সফল অটল, মোদীর চ্যালেঞ্জ!

দশ বছর পরে

২৪ এর ভোটের আগে অবধি বার বার এক ফ্রেমে ধরা দিয়েছেন মোদী-শাহ। কখনও আবার মোদী-নাড্ডা। কিন্তু চার জুন দিনটা অনেক কিছু পাল্টে দিল। পাল্টে দিল এ দেশে দশ বছর ধরে চলে আসা রাজনীতির ধারা। এখন আসে পাশে কখনও নীতিশ কুমার আর কখনও চন্দ্রবাবু নাইডু!২০২৩। লোকসভা ভোটের দামামা তখন বেজেছে। একজোট হতে শুরু করলো বিরোধীরা। ২৩ জুন। বিহারের পটনায় ১৫টি বিজেপি বিরোধী দলের প্রথম বৈঠক হয়েছিল। ইন্ডিয়া জোটের প্রথম সূত্রধার ছিলেন নীতিশ কুমার।কিন্তু যখন ইন্ডি জোটে তৈরিতে মাঠে নেমেছেন রাহুল গান্ধী, শরদ পাওয়ার, সীতারাম ইয়েচুরি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তখনই ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গেলেন নীতিশ। বিহারে হঠাৎ ডিগবাজির খেলা! মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিলেন। আবার মুখ্যমন্ত্রী হলেন এন ডি এ -র দলগুলোর সমর্থনে। চারশো পারে স্লোগানেই কি ঘুরে গিয়েছিলেন নীতিশ? এখন সেই নীতীশকে নিয়েই পথ চলতে হবে মোদী-শাহকে! কোন ফর্মুলায় হবে কেল্লা ফতে?

জোটের সূত্রপাত

৯ জুন। ২০২৪। পথ চলতে শুরু করেছে বিজেপির নেতৃত্বে জোট সরকার। কিন্তু দেশ স্বাধীনের পর থেকে কংগ্রেসের নেতৃত্বেই বারবার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে একার জোরে সরকার তা সে নেহরুর নেতৃত্বে প্রথম ভোটের পর ৫২ সালেই হোক আর ৬৭ সালের ভোটে জিতে ইন্দিরার নেতৃত্বেই হোক। ইন্দিরার মৃত্যুর পর বিপুল আসন পেয়ে রাজীবের নেতৃত্বেও কংগ্রেসই একার জোরে সরকার গঠন করে। শেষ দুবার মোদীর নেতৃত্বেও দেশ দেখেছে একার জোরে কীভাবে আচ্ছে দিনের স্লোগানে ভর করে সরকার গঠন করেছে। কিন্তু জোট রাজনীতি। ভারতের সংসদীয় গণতন্ত্রে এই শব্দটার আনাগোনা কবে থেকে? কবে থেকে দেশে জোট রাজনীতির সূচনা? সেটাই দেখাব আজকের দ্বিতীয় পর্বে।

সফল অটল

আটের দশক। টালমাটাল দেশের রাজনীতি। এই দশকের গোড়াতেই ভাগ হয়েছিল জনতা পার্টি। তৈরি হয়েছিল নতুন দল বিজেপি। অটল বিহারি বাজপজপেয়ীর নেতৃত্বে বিজেপি প্রথম ভোটে লড়লো চুরাশি সালে। পেল মাত্র দুটো আসন। জনতা সরকারের বিদেশমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ীর ভারতীয় রাজনীতির পথে নতুন করে পথ হাঁটা শুরু সেদিন থেকেই। কংগ্রেস বিরোধিতার ঝড় তুঙ্গে তুলে এগিয়ে এলেন বাজপেয়ী। দুটো আসনে দমে না গিয়ে জোর কদমে লড়াই শুরু করলেন। নয় দশকে যখন দেশের রাজনীতি টালমাটাল। শক্তি বাড়িয়েছে আঞ্চলিক দলগুলো। ক্রমে শক্তি হারাচ্ছে কংগ্রেস, তখন কী করে বাজপেয়ী হয়ে উঠলেন দেশে রাজনীতির কিংমেকার? সেটাই দেখাব আজকের তৃতীয় পর্বে।

মোদীর চ্যালেঞ্জ!

লোকসভা নির্বাচনের রেজাল্ট তখনও বের হয়নি তখনও ৩৭০ টার্গেটকে ধরেই এগোচ্ছিল বিজেপি। সব এক্সিট পোলও সেরকমই ছবি তুলে ধরছিল। বিজেপি ক্ষমতায় আসছে, বিপুল আসন পেয়ে আসছে। কিন্তু ৪ তারিখ দেশ জুড়ে ছবি বদলেছে। বদলেছে অনেক চাওয়া পাওয়া। ইন্ডি জোট যে এত আসন পাবে কে ভেবেছিল? কে ভেবেছিল বিজেপিকে হাড্ডাহাড্ডি টুকরা দিয়ে ২৩০ পার করবে ইন্ডি জোট? পাঁকে পড়েছে পদ্ম! ঠেকনা ছাড়া চলা মুশকিল এখন বিজেপির! আর বিপদের দিনে ইন্ডি জোট কতটা পথের কাঁটা হবে বিজেপির? শরিকদের নিয়ে পথ হাঁটতে কোন কোন বাধার সম্মুখীন হতে পারেন মোদী? দেখাব আজকের চতুর্থ অর্থাৎ শেষ পর্বে।

Follow Us: