AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Alipurduar news: বঙ্গরত্ন ফুটবলার থেকে চা-ওয়ালি, তবু হার না মানা জেদে একাই টানছেন ডুয়ার্সের মেয়েদের প্রশিক্ষণ

Banga Ratna Awardee Footballer: এককালে বঙ্গরত্ন সম্মান পাওয়া ফুটবলার এখন যেন অনেকটাই ব্রাত্য। পরবর্তীতে কেউই আর ভবানির তেমন কোনও খোঁজ রাখেনি। এখন একটি চায়ের দোকান চালান ভবানি। কালচিনি থানার ঠিক সামনেই। সেখান থেকেই যা আসে, তা দিয়েই সংসার টানেন।

Alipurduar news: বঙ্গরত্ন ফুটবলার থেকে চা-ওয়ালি, তবু হার না মানা জেদে একাই টানছেন ডুয়ার্সের মেয়েদের প্রশিক্ষণ
চায়ের দোকান চালাচ্ছেন বঙ্গরত্ন সম্মানে ভূষিত ফুটবলার
| Edited By: | Updated on: Apr 25, 2022 | 3:31 PM
Share

আলিপুরদুয়ার : ডুয়ার্সের কৃতি ফুটবলার বঙ্গরত্ন ভবানী মুন্ডা। নিজস্ব একটি দলও রয়েছে। এই দল বিভিন্ন জায়গায় খেলতে যায়। বল পায়ে বহু পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি। কিন্তু এখন সেগুলিতে ধুলো জমছে। পুরস্কার, মেডেলগুলির উপর জমছে ধুলোর আস্তরণ। আলিপুরদুয়ারের কালচিনিতে এক চিলতে ঘরে থাকেন ভবানী। চরম আর্থিক অনটনের মধ্যে দিন গুজরান করছেন। এককালে বঙ্গরত্ন সম্মান পাওয়া ফুটবলার এখন যেন অনেকটাই ব্রাত্য। পরবর্তীতে কেউই আর ভবানীর তেমন কোনও খোঁজ রাখেনি। এখন একটি চায়ের দোকান চালান তিনি। কালচিনি থানার ঠিক সামনেই। সেখান থেকেই যা আসে, তা দিয়েই সংসার টানেন। আর ডুয়ার্সের আনাচে কানাচে পড়ে থাকা প্রতিভাবান মহিলা খেলোয়াড়দের খুঁজে খুঁজে বের করে আনেন।

ভবানীর কথায়, এই চায়ের দোকান তাঁর নিজের জন‍্য নয়। চা বাগান থেকে যাতে আরও প্রতিভাবান মহিলা খেলোয়াড়রা উঠে আসার সুযোগ পান, তার জন‍্য এই প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন ডুয়ার্সের কালচিনির বঙ্গরত্ন ফুটবলার ভবানী মুণ্ডা । একটি মহিলা ফুটবল টিমও রয়েছে তাঁর। নাম রেখেছেন কালচিনি ডুয়ার্স ইলেভেন। সব মিলিয়ে প্রায় ৬ টি টিমের শতাধিক ফুটবলারের এখন ত্রাতা এই বঙ্গরত্ন। সবাই চা বাগানের শ্রমিক পরিবারের সন্তান। আর্থিক অনটনের ছাপ সবার বাড়িতে স্পষ্ট। তাই তাঁরা কেউ সেভাবে বাইরে খেলতে যেতে পারেন না । ভবানীর আক্ষেপ, চা বাগানে অনেক প্রতিভা আছে যারা টাকার অভাবে বাইরে খেলতে যেতে না পেরে নষ্ট হচ্ছে। ভবানীর ইচ্ছা, যদি এদের জন‍্য কিছু একটা করা যায়… ।

ফুটবল ছাড়া আর কিছুই বোঝেন না ভবানী। ফুটবল দিয়েই দিনের শুরু, ফুটবলেই দিনের শেষ। ২০১৬ সালে  বঙ্গরত্ন সম্মানে ভূষিত হন ভবানী। সেই সময় এক লক্ষ টাকা আর্থিক পুরস্কার পেয়েছিলেন। সেটাও তিনি নিজের টিমের জন্যই খরচ করে দিয়েছিলেন। আর এখন, কালচিনি থানার সামনে ওই ছোট্ট চায়ের দোকানটাই তাঁর সম্বল। ওই দোকানে চা বিক্রি করেন সকাল থেকে। এরপর বিকেলে মেয়েদের নিয়ে ফুটবল শেখাতে নামেন। কিন্তু এত আর্থিক অনটনের মধ্যে এই বিশাল কর্মযজ্ঞ একা সামাল দিতে উঠতে খুবই সমস্যা হচ্ছে ভবানীর। তবু হাল ছাড়েননি তিনি। যতই সমস্যা হোক, টিমের প্রশিক্ষণ বন্ধ করেননি। চায়ের দোকান চালাচ্ছেন বলে কোনও আফশোস নেই তাঁর। ফুটবল-পাগল ভবামী শুধু চান, তাঁর টিমের কিছু একটা ব্যবস্থা হোক। ডুয়ার্সের চা বাগান থেকে আরও প্রতিভা উঠে আসুক।

চা-ওয়ালি বঙ্গরত্ন ফুটবলারের সঙ্গে কথা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। মাথা গোঁজার মতো একটি সরকারি কাজ হলে জীবনটা কিছু মসৃণ হয় তাঁর। টিমের আর্থিক সমস্যাও কিছুটা মেটাতে পারেন। কিন্তু কে দেবে তাঁকে কাজ? তাই তো অনেকটা অনাদরেই নষ্ট হচ্ছে ডুয়ার্সের প্রতিভা। কালচিনির বিডিও প্রশান্ত বর্মণের সঙ্গে এই বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে জানিয়েছেন, “আমি ওনার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। উনি একটি স্কুলে কাজ করছেন। ওনাকে বলেছি ব্লকে পিছিয়ে পড়া গ্রামে কন্যাশ্রীদের নিয়ে খেলোয়াড় টিম করার জন্য। কিন্তু উনি কাজে নামছেন। কী কারণে পিছিয়ে আসছেন, তা জানি না। ব্লক প্রশাসন সবসময় ভবানীর পাশে আছে।”

বিডিও যে স্কুলে কাজের কথা বলছিলেন, সেটির বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে জানা যায়, ভবানীকে একটি বেসরকারি স্কুলে ১৪০০ টাকা মাস মাহিনায় ঘর, বাথরুম পরিষ্কারের কাজ দেওয়া হয়েছিল। তিনি এখন আর ওই কাজ করেন না। এরপর আর কোনও কাজ পাননি ভবানী। বঙ্গরত্ন ভবানী জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী মিড ডে মিলের ব্যবস্থা করেছেন। কিন্তু কোনও কাজ তিনি পাননি। মহিলা ফুটবল টিম ও নিজের পরিবারের জন্য তাঁর একটা কাজ খুবই দরকার। না হলে… বঙ্গরত্ন চা-ওয়ালি হয়েই চলতে হবে।

আরও পড়ুন : Fire in Kolkata: জতুগৃহ ট্যাংরা, দমকলের ১৫ টি ইঞ্জিনের চেষ্টায় সাড়ে চার ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে আগুন