Compensation: নার্সিংহোমে মৃত্যু, তবু জায়গা পেল মমতার দেওয়া সরকারি মৃতের তালিকায়!

Compensation: বাঁকুড়ার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিবেকানন্দ পল্লির বাসিন্দা শিবু মালাকার পেশায় ছিলেন মুটে। অভাবের সংসার কোনওভাবে চলে। গত ১১ অগস্ট সিভিয়ার ব্রেইন স্ট্রোক হয় শিবুর। তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে। সেখানে গত ১৬ অগস্ট পর্যন্ত চিকিৎসাধীন ছিলেন শিবু। চিকিৎসায় সাময়িক সুস্থ হয়ে ওঠায় তাঁকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়।

Compensation: নার্সিংহোমে মৃত্যু, তবু জায়গা পেল মমতার দেওয়া সরকারি মৃতের তালিকায়!
চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ খারিজ করলেন মৃতের স্ত্রী
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 16, 2024 | 6:50 PM

বাঁকুড়া: জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের জেরে হাসপাতালে চিকিৎসা পরিষেবা ঠিকমতো না পেয়ে মৃত্যুর অভিযোগ। কয়েকদিন আগে রাজ্য সরকার এমন ২৯ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে। হাসপাতালে পরিষেবা ঠিকমতো না পাওয়ায় তাঁদের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। মৃতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। মৃতদের তালিকাকে হাতিয়ার করে সুপ্রিম কোর্টেও হাসপাতালে পরিষেবা ব্যাহত হওয়ার কথা উল্লেখ করেছে রাজ্য। এই পরিস্থিতিতে মৃতের তালিকায় থাকা বাঁকুড়ার এক রোগীর পরিবার বলছে, হাসপাতালে মৃত্যু হয়নি তাদের রোগীর। নার্সিংহোমে মৃত্যু হয়েছে। একইসঙ্গে হাসপাতালে ভর্তি থাকার সময় ঠিকমতো পরিষেবা পেয়েছেন বলেও জানালেন ওই রোগীর পরিজনরা।

গত ৯ অগস্ট আরজি করে তিলোত্তমার নৃশংস পরিণতির প্রতিবাদে আন্দোলনে নামেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সেই আন্দোলন এখনও চলছে। রাজ্য সরকারের বক্তব্য, জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের জেরে ঠিকমতো পরিষেবা না পেয়ে ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেই ২৯ জনের তালিকায় নাম রয়েছে বাঁকুড়ার শিবু মালাকারের।

বাঁকুড়ার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিবেকানন্দ পল্লির বাসিন্দা শিবু মালাকার পেশায় ছিলেন মুটে। অভাবের সংসার কোনওভাবে চলে। গত ১১ অগস্ট সিভিয়ার ব্রেইন স্ট্রোক হয় শিবুর। তড়িঘড়ি তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে। সেখানে গত ১৬ অগস্ট পর্যন্ত চিকিৎসাধীন ছিলেন শিবু। চিকিৎসায় সাময়িক সুস্থ হয়ে ওঠায় তাঁকে ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীতে তিনি বাড়ি ফিরে যান। পরে ফের তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে নিকটবর্তী একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। সেই নার্সিংহোমেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২২ অগস্ট মৃত্যু হয় শিবুর।

এই খবরটিও পড়ুন

মৃতের স্ত্রী সুমিত্রা মালাকার বলেন, তাঁর স্বামীর স্ট্রোক হয়েছিল। তাঁরা বাঁকুড়া সম্মিলনীতে ভর্তি করেছিলেন। পাঁচদিন সেখানে রাখা হয়েছিল তাঁর স্বামীকে। একটু সুস্থ হতে বাড়িতে আনা হয়েছিল। ২ দিন পর আবার অসুস্থ পড়ায় কাছের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর স্বামীর। হাসপাতালে চিকিৎসায় কোনও গাফিলতি হয়নি বলে তিনি মন্তব্য করেন। ক্ষতিপূরণের টাকা এখনও তাঁরা পাননি বলে জানালেন। তিনি বলেন, “আমরা গরিব মানুষ। সরকার যদি দেয়, তাহলে টাকা নেব।”

শিবু মালাকারের নাম কীভাবে রাজ্য সরকার প্রকাশিত তালিকায় স্থান পেল, তা নিয়ে রীতিমত হতবাক মেডিক্যাল কলেজে কর্তৃপক্ষও। জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের জেরে শিবু মালাকারের চিকিৎসায় কোনও গাফিলাতি হয়নি বলে দাবি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের। শিবু মালাকারের মৃত্যুর দায় জুনিয়র চিকিৎসকদের আন্দোলনের উপরে চাপিয়ে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকরা। তাঁরা বলছেন, “সিনিয়ররা সবসময় কাজ করছেন। দরকার পড়লে আনঅফিসিয়ালি গিয়ে আমরা সাহায্য করছি। এখানে চিকিৎসায় কোনও গাফিলতি হয়নি।”

মৃতের পরিবার থেকে শুরু করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চিকিৎসায় গাফিলাতির অভিযোগ অস্বীকার করলেও স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর শেখ আজিজুল হাসপাতালে চিকিৎসায় গাফিলতির কথা বললেন। তিনি বলেন, “হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়ার পর নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয়। তার মানে হাসপাতালে ঠিকমতো পরিষেবা দেওয়া হয়নি। হাসপাতালে পরিষেবা পেলে নার্সিংহোমে নিয়ে যেত না। এখন হয়তো ওই পরিবার অন্য কথা বলছেন।”

স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠছে, শিবু মালাকারের নাম ওই তালিকায় স্থান পেল কীভাবে? হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, তারা কোনও নাম দেয়নি। তাহলে নাম প্রশাসনের কাছে পাঠাল কারা? উঠছে প্রশ্ন।