AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Bankura: পাঁচ মাসও গেল না, হঠাৎ কী হল? মুখ্যমন্ত্রীর মডেল গ্রামে আজ ভূতুড়ে পরিবেশ!

Bankura: পটচিত্রিদের যে বাড়ি করে দেওয়া হয়েছিল তার বিভিন্ন জায়গায় দেখা দিয়েছে ফাটল, টালির ছাদ বিভিন্ন জায়গায় ভেঙে পড়েছে। পচে গিয়েছে ছাদ তৈরিতে ব্যবহৃত কাঠ। কোনও বাড়ির দেওয়াল বসে গিয়ে কাত হয়ে পড়েছে। শৌচালয়গুলির অবস্থাও তথৈবচ। রাস্তায় লাগানো সৌরবাতির বেশ কিছু বিকল হয়ে পড়েছে।

Bankura: পাঁচ মাসও গেল না, হঠাৎ কী হল? মুখ্যমন্ত্রীর মডেল গ্রামে আজ ভূতুড়ে পরিবেশ!
মডেল গ্রাম আজ ভূতুড়ে!Image Credit: TV9 Bangla
| Edited By: | Updated on: Jan 01, 2024 | 12:06 PM
Share

বাঁকুড়া: মাস পাঁচেক আগে ঘটা করে বাঁকুড়ার ভরতপুর মডেল গ্রামের উদ্বোধন করেছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। কোটি কোটি টাকা খরচ করে সুন্দর সুন্দর বাড়ি, পাকা কংক্রিটের রাস্তা, সৌরবাতি, সৌর চালিত সাবমার্সিবল পাম্প বসানো হয়েছিল। কিন্তু ৫ মাস যেতে না যেতেই সেই মডেল গ্রাম পরিণত হতে চলেছে প্রায় পরিত্যক্ত জনপদে। যেন ভূতুড়ে গ্রাম। কেন এমন দৃশ্য। উপভোক্তারা বলছেন, “আসলে এই গ্রাম তৈরির গোড়াতেই গলদ।”

বাঁকুড়ার শুশুনিয়া পাহাড়ের পাশেই ছোট্ট গ্রাম ভরতপুর। এই গ্রামের ১৮ টি পরিবার শত শত বছর ধরে টিকিয়ে রেখেছেন পটচিত্রের প্রাচীন এক ধারাকে। অত্যন্ত অভাবী ও অন্যের জমিতে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বসবাসকারী এই পরিবারগুলির কথা চিন্তা করে ২০২৩ সালের গোড়ার দিকে বাঁকুড়া জেলা প্রশাসন ভরতপুর গ্রামের অদূরে মডেল গ্রাম তৈরির উদ্যোগ নেয়।

গ্রামের অদূরে পাহাড়ের কোলে সরকারি একটি জায়গা চিহ্নিত করে সেখানে সার দিয়ে তৈরি করা হয় সুদৃশ্য ১৫ টি বাড়ি। গ্রামে যাওয়ার জন্য কংক্রিটের রাস্তা তৈরি করা হয়। রাস্তার ধারে বসানো হয় সৌরবাতি। পানীয় জলের জোগান দিতে নলবাহিত জলের পাশাপাশি বসানো হয় সৌর চালিত সাবমার্সিবল। গ্রামের পাশেই খোঁড়া হয় পুকুর। প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় দ্রুত গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগও দেওয়া হবে। তড়িঘড়ি পটচিত্রশিল্পীদের মধ্যে বাড়িগুলি বিতরণ করে গত ৯ অগষ্ট ঘটা করে মুখ্যমন্ত্রী উদ্বোধন করেন এই মডেল গ্রামের। কিন্তু ৫ মাস যেতে না যেতেই সুদৃশ্য এই গ্রামের হতশ্রী দশা।

পটচিত্রিদের যে বাড়ি করে দেওয়া হয়েছিল তার বিভিন্ন জায়গায় দেখা দিয়েছে ফাটল, টালির ছাদ বিভিন্ন জায়গায় ভেঙে পড়েছে। পচে গিয়েছে ছাদ তৈরিতে ব্যবহৃত কাঠ। কোনও বাড়ির দেওয়াল বসে গিয়ে কাত হয়ে পড়েছে। শৌচালয়গুলির অবস্থাও তথৈবচ। রাস্তায় লাগানো সৌরবাতির বেশ কিছু বিকল হয়ে পড়েছে। নলবাহিত পানীয় জল একদিন মিললে পরের দুদিন সেই নল দিয়ে আর জল আসে না। সৌরচালিত সাব মার্সিবলে যে জল মেলে তা দিয়ে চাহিদা পূরণ হয়না গ্রামের মানুষের। গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার প্রক্রিয়া এখনও দুরস্ত।

এই অবস্থায় একদিকে বেহাল বাড়ির দেওয়াল বা ছাদ চাপা পড়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কা অন্যদিকে দৈনন্দিন প্রয়োজনের পর্যাপ্ত জল ও বিদ্যুতের অভাবে কার্যত পরিত্যক্ত গ্রামে পরিণত হতে বসেছে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বোধন করা এই মডেল গ্রাম। উপভোক্তাদের বড় অংশ বাধ্য হয়ে ফিরে গিয়েছেন নিজেদের পুরনো ভাঙাচোরা বাড়িতেই। ফলে অধিকাংশ বাড়ি রয়েছে তালাবন্ধ। যে দু তিনটি পরিবার মডেল গ্রামের বাড়িতে বসবাস করছেন তাঁরাও বাড়ির দেওয়াল চাপা পড়ে দুর্ঘটনার আশঙ্কায় রাতের অন্ধকার নামলেই ফিরে যান নিজেদের পুরানো বাড়িতে।

উপভোক্তা চিত্রকরদের দাবি, বাড়িগুলি তৈরির সময় নির্মাণের সঠিক মান বজায় রাখেনি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। ফলে তৈরির পাঁচ মাসের মাথায় সেগুলির এমন দশা। তাছাড়া বাড়িগুলি তৈরির সময় উপভোক্তারা বারেবারে প্রশাসনের কাছে বাড়িগুলির পাকা ছাদ করার দাবি জানিয়েছিলেন। চিত্রকরদের সেই দাবিতেও কর্ণপাত করেনি জেলা প্রশাসন। এই ঘটনাকে ঘিরে রাজনৈতিক চাপানউতোর শুরু হয়েছে।

বিরোধী বিজেপির দাবি, আর পাঁচটা প্রকল্পের মতো এক্ষেত্রেও শাসক দলের নেতারা লক্ষ লক্ষ টাকা কাটমানি নেওয়ার ফলে গোটা প্রকল্পই মুখ থুবড়ে পড়েছে। কাটমানির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে এই পরিস্থিতির জন্য উপভোক্তা চিত্রকরদেরই দুষেছে ছাতনা পঞ্চায়েত সমিতি। ছাতনা পঞ্চায়েত সমিতির দাবি, উপভোক্তাদের বাড়ি দেওয়া হলেও তাঁরা কেউ সেখানে বসবাস করতে আগ্রহী না। উপভোক্তারা বসবাস করলেই ধীরে ধীরে সমস্যাগুলির সমাধান করা সম্ভব হত।