বিষ্ণুপুর: বিষ্ণুপুরের লোকসভা ভোটে এবার কাঁটায় কাঁটায় টক্কর। মুখোমুখি লড়াই সৌমিত্র খাঁ ও সুজাতা মণ্ডলের। বিজেপির থেকে আগেই বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রের জন্য প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছিল সৌমিত্রর নাম। আর এবার তৃণমূলের ব্রিগেডের মঞ্চ থেকেও জানিয়ে দেওয়া হল, বিষ্ণুপুরের মাটিতে ঘাসফুল ফোটাতে তাদের বাজি সুজাতাই। এই তো বছর পাঁচেক আগের কথা। উনিশের লোকসভা ভোট সৌমিত্রর হয়েই প্রচার করেছিলেন সুজাতা। তাঁর হয়ে ভোট চেয়েছিলেন। কিন্তু রাজনীতির চোরাস্রোতে পরে, দাম্পত্যের ধারা অন্য দিকে বয়ে গিয়েছে। এখন সৌমিত্র ও সুজাতা দুই ভিন্ন রাজনৈতিক দলের দুই ভিন্ন মেরুতে অবস্থান করছেন।
সম্পর্কের যে আর বিশেষ কিছুই অবশিষ্ট নেই, সে কথা আজ সুজাতার কথাতেই স্পষ্ট। খাঁ পদবি থেকে নিজের দূরত্ব তৈরি করে নেওয়া সুজাতা মণ্ডল আজ সৌমিত্রর নাম পর্যন্ত মুখে উচ্চারণ করতে চাইলেন না। সেটা নাকি সুজাতার রুচিতে বাধে। এর আগে একুশের বিধানসভা ভোটে তৃণমূল ভরসা রেখেছিল সুজাতার উপর। কিন্তু তিনি ব্যর্থ হয়েছিলেন। এরপর মাটি কামড়ে পড়ে থেকে পঞ্চায়েত ভোটে নিজের জাত চিনিয়েছেন সুজাতা। আর তারপরই এবার সরাসরি লোকসভা ভোটের টিকিট। এই প্রাপ্তির পর নিজের অনুভূতি গোপন রাখলেন না সুজাতা। বললেন, ‘নিজেকে ধন্য মনে করছি’।
কিন্তু এরপর সৌমিত্র খাঁ প্রসঙ্গ উঠতেই সোজাসাপ্টা জবাব, ‘আমি তাঁর নাম উচ্চারণ করব না। কারণ, আমার তাতে রুচিতে বাধে। আমি শুধু একটাই কথা বলব, বিষ্ণুপুরের মানুষকে উনি যেভাবে ঠকিয়েছেন, দলের মানুষের পর্যন্ত পাশে থাকেননি… আজ আমি নিশ্চিত সেই মানুষটাকে বিষ্ণুপুরের আমজনতা ছুড়ে ফেলে দেবে।’
যেদিন সুজাতা তৃণমূলে যোগদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, সেদিন সংবাদমাধ্যমে প্রতিক্রিয়া দিতে দিতে কেঁদে ফেলেছিলেন বিজেপি নেতা সৌমিত্র খাঁ। আক্ষেপ মিশ্রিত গলায় সৌমিত্র বলেছিলেন, ‘তৃণমূল এত বড় চোর, শেষে আমার বউটাকেও চুরি করল।’ সেই সৌমিত্র খাঁ আজ অবশ্য বিপরীতে সুজাতা মণ্ডলের থাকা নিয়ে এতটুকুও ভাবিত নন। বরং, রেকর্ড ব্যবধানে জয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী সৌমিত্র। বিজেপি নেতা বলেন, ‘বিষ্ণুপুর লোকসভায় যদি কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব দাঁড়াতেন, তাহলে রাজনৈতিকভাবে ভোট হত। একটা প্রতিযোগিতা হত। এলাকার উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হত। অতীতে অনেক রেকর্ডই তো ভেঙেছি… কিন্তু এবার আমার মনে হচ্ছে বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রে পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে সর্বোচ্চ ব্যবধানে বিজেপি জিতবে।’