বাঁকুড়া: ‘হিন্দু-হিন্দু ভাই ভাই, ছাব্বিশে বিজেপি সরকার চাই।’ বিজেপির এমনই দেওয়াল লিখনকে কেন্দ্র করে চাপানউতোর বাঁকুড়ার রাজনৈতিক মহলে। বছর ঘুরলেই ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচন। সেই নির্বাচনে নিজের নিজের পালে হাওয়া টানতে এখন থেকেই উঠেপড়ে লেগেছে সব রাজনৈতিক দলই। ঘুঁটি সাজাতে শুরু করেছে বিজেপিও। একের পর এক রাজনৈতিক কর্মসূচি দেখে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের বড় অংশের মত, এবারের ভোটে হিন্দু ভোট এককাট্টা করতে কোনও কসরতই বাকি রাখছে না পদ্ম শিবির। ইতিমধ্যেই রাম নবমীতে ১ কোটি হিন্দুকে পথে নামার ডাকও দিয়ে ফেলেছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। অন্যদিকে ভোটের সলতে পাকানো শুরু হতে না হতেই বাঁকুড়া এক নম্বর ব্লকে শুরু হয়ে গেছে দেওয়াল লিখন। সমানতালে শুরু হয়েছে প্রচারও।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচন হোক বা তার ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন পরপর দুটি নির্বাচনেই গেরুয়া ঝড়ে বাঁকুড়া জেলায় রীতিমতো চাপে পড়েছিল ঘাসফুল শিবির। উনিশের লোকসভা নির্বাচনে বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর দু’টি আসনেই জয়লাভের পাশাপাশি ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে জেলার ১২টি আসনের মধ্যে ৮ টিতে জয় ছিনিয়ে নেন পদ্ম প্রার্থীরা। কিন্তু, পরবর্তীতে নিজেদের সেই জয়ের ধারা ধরে রাখতে পারেনি বিজেপি। দুই বিধায়ক তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পাশাপাশি পঞ্চায়েত, পুরসভা নির্বাচন এবং ২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে অনেকাংশেই নিজেদের জমি হারাতে হয় বিজেপিকে। এই পরিস্থিতিতে আগামী ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে নিজেদের হারানো জমি ফিরে পেতে মরিয়া গেরুয়া শিবির। সেই লক্ষ্যে বহু আগে থেকেই প্রচারে নেমে পড়ল বিজেপি।
বাঁকুড়া এক নম্বর ব্লকের বিভিন্ন জায়গায় দেওয়াল লিখনে হিন্দুদের এককাট্টা হওয়ার ডাক দেওয়া হয়েছে। হিন্দু ইস্যুকে সামনে রেখে গ্রামে গ্রামে চলছে প্রচারও। এলাকার বিজেপির দাবি, রাজ্যের শাসকদল যেভাবে বিশেষ একটি সম্প্রদায়কে তোষণ করে চলেছে ক্ষোভ বাড়ছে হিন্দুদের মধ্যে। আর সেই ক্ষোভেরই বহিঃপ্রকাশ দেখা যাবে ছাব্বিশের বিধানসভা নির্বাচনে। তবে বিজেপির এই কর্মকাণ্ডকে বিশেষ পাত্তা দিতে নারাজ তৃণমূল-বামেরা। তৃনমূলের দাবি, মিডিয়ার প্রচারে আসার জন্যেই এসব করা হচ্ছে। এলাকার নেতাদের স্পষ্ট কথা, বিজেপি যাই করুক ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনে শেষ হাসি হাসবে তৃণমূলই। অন্যদিকে বিতর্কের আবহে আবার একযোগে তৃণমূল-বিজেপিকে কটাক্ষ করছে বামেরা। কটাক্ষের সুরেই বাম নেতাদের দাবি, ধর্ম নিয়ে এ রাজ্যের রাজনীতিতে তৃণমূল ও বিজেপি একে অপরকে দোষারোপ পাল্টা দোষারোপ করছে। আসলে ওই দু’টি দল একই গোডাউনের দু’টি পৃথক শোরুম।