Local Train: সপ্তাহের শুরুতেও আসেনি নির্দেশিকা, আদ্রায় দিনভর গড়াল না রেলের চাকা!
Railway: সপ্তাহের শুরুতেও আদ্রায় বন্ধ থাকল রেল পরিষেবা। ভোগান্তির শিকার যাত্রীরা।
বাঁকুড়া: সপ্তাহের শুরুতেও জারি অচলাবস্থা। গোটা রাজ্যে লোকাল ট্রেন চালুর অনুমতি মিললেও আদ্রায় (Adra) এসে পৌঁছল না নির্দেশিকা। ফলে, দিনভর বন্ধ থাকল লোকাল ট্রেন (Local Train)। সমস্যায় পড়লেন নিত্য যাত্রীরা।
রেল দফতর সূত্রে খবর, শনিবার সন্ধে পর্যন্ত কোনও নির্দেশিকা না আসায় রেল চালানো যায়নি রবিবার রেল চালানো যায়নি। কিন্তু সেই নির্দেশিকা এসে পৌঁছল না রবিবারও। ফলে সপ্তাহের শুরুতে রীতিমতো ভোগান্তি নিত্যযাত্রীদের। বাঁকুড়া থেকে কলকাতায় যাওয়ার কথা অভিরাম মাহাতর। কিন্তু, ট্রেন না আসায় সে গুড়ে বালি! এদিকে কলকাতায় না পৌঁছলে দোকানের জিনিস আসবে না। ফলে মাসের শুরুতেই ব্যবসায় ধাক্কা তাঁর।
অন্যদিকে আরও এক যাত্রীর কথায়, “গতকাল থেকে ট্রেন চলার কথা। কিন্তু গাড়ি আসেনি। বুঝতে পারছি না যে আদৌ গাড়ি চলবে কি না। এদিকে ট্রেন না চললে কাজে যাওয়া মাথায় উঠবে। মাসের শুরুতে এভাবে যদি আটকে যেতে হয় বা ঘুরপথে কাজে যেতে হয় তাহলে খুবই সমস্যা। সাধারণ মানুষের এই ভোগান্তির দায় তো কেউ নেবে না!”
রেলের আদ্রা বিভাগের বিভাগীয় ম্যানেজার মণীশ কুমার বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত আমাদের কাছে লোকাল ট্রেন চালানোর ব্যাপারে রেলের তরফে কোনও নির্দেশিকা এসে পৌঁছয়নি।’’ বাঁকুড়া এবং পুরুলিয়া জেলার বেশির ভাগ ট্রেন পথই আদ্রা বিভাগের আয়ত্ত্বাধীন। রেল যাত্রীদের দাবি, এই রুটগুলিতে করোনার আগে প্রায় ৫০ জোড়া লোকাল ট্রেন চলাচল করত। এত দিন পর্যন্ত অধিকাংশ লোকাল ট্রেন বন্ধ থাকায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন ওই দুই জেলার যাত্রীরা। কিন্তু, এখনের পরিস্থিতি যা দাঁড়াল তাতে অনিশ্চয়তা কাটছে না।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণায় ফের ওই রুটে ট্রেন চালানো নিয়ে আশায় বুক বেঁধেছিলেন বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ। আপাতত নতুন করে আদ্রা ডিভিশনে লোকাল ট্রেন চালু না হওয়ায় হতাশ সাধারণ যাত্রী থেকে শুরু করে নিত্যযাত্রী সকলেই। বিডিআর রেলওয়ে পরিবহণ ওয়েলফেয়ার কমিটির উপদেষ্টা চণ্ডীদাস মুখোপাধ্যায় বলেন, “বাঁকুড়ার বিস্তীর্ণ এলাকার লাইফলাইন বিডিআর রেলপথ। গত বছর থেকে এই রেলপথে যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় আমরা আশার আলো দেখতে পেয়েছিলাম। রবিবার এই পথে ট্রেন চলাচল হবে না শুনে আমরা হতাশ।’’
রেলের এক আধিকারিকের কথায়, “আমরা দাবি করেছি করোনার আগে যে লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু ছিল তা অবিলম্বে চালু করতে হবে। একটি ট্রেনও বন্ধ রাখা চলবে না। যত কম সংখ্যায় ট্রেন চলবে ততই ট্রেনে ভিড় বাড়বে। কোভিড প্রোটোকল বলে কিছু থাকবে না।”
এদিকে, করোনা আবহে বিধিনিষেধের ফাঁসে দীর্ঘদিন আটকে ছিল লোকাল ট্রেনের চাকা। শুক্রবার নতুন নির্দেশিকায় ছাড়পত্র মেলে। আপাতত ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে ট্রেন চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। রেলের টাইম টেবিল মেনেই চালু হয়েছে লোকাল ট্রেন পরিষেবা। স্টেশনে স্টেশনে রয়েছে কোভিড বিধি নিয়ে সতর্কতামূলক মাইকিং-এর ব্যবস্থা।
যাত্রীরা বিধিনিষেধ মানছেন কিনা তা দেখার দায়িত্ব রয়েছে আরপিএফ ও জিআরপি-র ওপর। যদিও রেলের আধিকারিকদের বক্তব্য, কোভিড সুরক্ষা বিধি মানার দায়িত্ব নিতে হবে যাত্রীদেরই। ট্রেনের কামরায় দূরত্ব বিধি মানার দায়িত্বও যাত্রীদের। তবে সেই দায়িত্ব কি আদৌ পালন করবে যাত্রীরা? লোকালে মানা যাবে কোভিড বিধি? প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
আপাতত ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে লোকাল ট্রেন চালু করেছে সরকার। যাত্রী সংখ্যা নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে আরপিএফ, জিআরপি-কে। কিন্তু সোমবারের চিত্রটাই বলল অন্য কথা। হাওড়া হোক কিংবা শিয়ালদা- ট্রেন প্ল্যাটফর্মে ঢুকতেই চেনা ছন্দে গা ভাসিয়েছেন যাত্রীরা।
তবে লোকাল ট্রেন চালু হওয়ায় খুশি নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত যাত্রীরা। এতদিন কর্মস্থলে যেতে দিনের রোজগারের প্রায় অর্ধেকটাই বেরিয়ে যেত অনেকের। তাঁরা এবার খুশি। এক জনের কথায়, “লকডাউনের বাজার। যা আয় হচ্ছিল, তার হাফ বেরতো যাতায়াতেই। কিন্তু কীই বার করা যাবে। ট্রেনই আমাদের একমাত্র ভরসা।” খুশি হকাররাও। এতদিনে আবার দুটো রোজগার করে ঘরে নিয়ে যেতে পারবেন তাঁরা।
আরও পড়ুন: Landslide: রূপনারায়ণে বালি মাফিয়াদের দাপাদাপি, নদী গিলে খাচ্ছে আস্ত বাড়ি-জমি!