বাঁকুড়া: চলতি বছর লোকসভা নির্বাচনে বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূলের হারের পিছনে বিজেপি নয়, দায়ী তৃণমূলেরই জেলা ও ব্লক নেতৃত্বের একাংশ। তাঁদের গদ্দারির কারণেই এই ফল। বিজেপি প্রার্থীর কাছে টাকা খেয়ে তারা দলের প্রার্থীকে হারিয়েছেন। এমনই বিস্ফোরক দাবি, করে এবার প্রকাশ্য সভামঞ্চ থেকে ক্ষোভ উগরে দিলেন লোকসভা নির্বাচনে বিষ্ণুপুর কেন্দ্রের পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী সুজাতা মণ্ডল। তাঁর দাবি, সারা বছর দলকে বেচে খেলেও নির্বাচনের আগে দলের সাথে গদ্দারি করেছেন তাঁরা।
মাস কয়েক আগেই দেশজুড়ে লোকসভা নির্বাচন হয়ে গিয়েছে। সেই লোকসভা নির্বাচনে এ রাজ্যের যে আসনগুলিতে সবার নজর ছিল তার মধ্যে অন্যতম ছিল বিষ্ণুপুর লোকসভা কেন্দ্র। এই কেন্দ্রে বিজেপি প্রার্থী সৌমিত্র খাঁ-র বিরুদ্ধে তৃণমূল প্রার্থী করেছিল সৌমিত্র খাঁর প্রাক্তন স্ত্রী সুজাতা মণ্ডলকে। নির্বাচনে জোর টক্কর দেওয়ার পরও শেষ পর্যন্ত ৫ হাজারের কিছু বেশি ভোটে বিজেপি প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন সুজাতা। তারপর থেকেই ভোটে হার নিয়ে কাটাছেঁড়া চলথে ঘাসফুল শিবিরের অন্দরে। উঠে আসে অন্তর্ঘাতের তত্ত্ব। সেই তত্ত্বকে হাতিয়ার করে এবার দলের ব্লক ও জেলা নেতৃত্বের একাংশের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে শুরু করলেন সুজাতা।
সোমবার সন্ধ্যায় বাঁকুড়ার ইন্দাসে দলের বিজয়া সম্মেলনের মঞ্চে বক্তব্য রাখতে উঠে সুজাতা মণ্ডল বলেন, “দলের অন্দরে এমন অনেক পদাধিকারীরা আছেন যারা ২০১১ সাল থেকে পদ ভোগ করছেন, দলকে বেচে খাচ্ছেন। নির্বাচনের আগে তাঁরাই অন্য রূপ ধারণ করেন। নিজে বা নিজের পছন্দের প্রার্থী না হলে তখন বিজেপি প্রার্থীর সঙ্গে রাতের অন্ধকারে বসে সেটিংয়ের খেলা খেলে।” যদিও এ মন্তব্য করতে গিয়ে কারও নাম মুখে নেননি সুজাতা। কিন্তু খোঁচা দিতেও ছাড়েননি। বলেন, “তৃণমূলের বিষ্ণুপুর সাংগঠনিক জেলাস্তরের পদাধিকারীদের একটা বড় অংশ যে নির্বাচনের আগে বিজেপি প্রার্থীর কাছে লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে দলের সঙ্গে গদ্দারি করেছেন তা সবাই জেনে গিয়েছে। এখন তাঁরা ধরা পড়ে গিয়েছে। কিন্তু ওরা নির্লজ্জ।”
এদিকে প্রকাশ্যে দলের পরাজিত প্রার্থীর এমন বিস্ফোরক মন্তব্যে রীতিমত অস্বস্তিতে পড়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব। অন্যদিকে এই সুযোগে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। জেলার নেতারা বলছেন, গদ্দার, চোর, চিটিংবাজ, ধর্ষকদের দল তৃণমূল। যদিও তাঁদের দাবি, মানুষের ভোটেই এখানে বিজেপি জিতেছে। এর সঙ্গে তৃণমূল নেতাদের গদ্দারির সম্পর্ক নেই।