Rathayatra Of Bishnupur: রাজ্যপাট নেই, বিষ্ণুপুরে মল্লরাজাদের সেই রথের গরিমা আজও অমলিন

Rathayatra Of Bishnupur: সে সময় মল্ল রাজার নির্দেশে পার্শ্ববর্তী অহল্যাবাই রাস্তায় লুঠপাট চালাত একদল দস্যু। লুঠপাটের সামগ্রী জমা হত মল্ল রাজকোষে। শ্রীনিবাস আচার্যর সঙ্গে লাল শালুতে মোড়া বৈষ্ণব পুঁথিগুলিকে বিপুল ধনরত্ন মনে করে তা লুঠ করে এনে মল্ল রাজকোষে জমা করেন লুঠেরারা।

Rathayatra Of Bishnupur: রাজ্যপাট নেই, বিষ্ণুপুরে মল্লরাজাদের সেই রথের গরিমা আজও অমলিন
বিষ্ণুপুরে রথ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 01, 2022 | 3:13 PM

বাঁকুড়া:  শ্রীনিবাস আচার্যের ছোঁয়ায় মল্ল রাজাদের আমলে মল্ল রাজধানী বিষ্ণুপুরে চালু হওয়া রথযাত্রা আজও অমলিন। করোনার জেরে দুবছর শোভাযাত্রা বন্ধ থাকার এবার জোড়া শোভাযাত্রায় মাতবে বিষ্ণুপুর। চারশো বছর পেরিয়েও মল্ল রাজাদের রথ যাত্রা উৎসবের গরিমা ম্লান হয়নি এতটুকুও।

রাজ্যের অন্যতম প্রাচীন শহর বিষ্ণুপুর। ৯৯৭ খ্রীষ্টাব্দে মল্ল রাজ জগৎমল্ল নিজের রাজধানী প্রদ্যুম্নপুর থেকে সরিয়ে বন বিষ্ণুপুরে নিয়ে আসেন। নতুন রাজধানীতে শুরু হয় লোক বসবাস। প্রথম অবস্থায় মল্ল রাজারা ছিলেন শাক্ত ধর্মাবলম্বী। কথিত আছে আজ থেকে প্রায় চারশো বছর আগে পুরীর রথযাত্রায় অংশ নিতে বিস্তর বৈষ্ণব পুঁথিপত্র নিয়ে বৃন্দাবন থেকে হেঁটে পুরীর উদ্দেশে রওনা দেন শ্রীচৈতন্যর শিষ্য শ্রীনিবাস আচার্য।

সে সময় মল্ল রাজার নির্দেশে পার্শ্ববর্তী অহল্যাবাই রাস্তায় লুঠপাট চালাত একদল দস্যু। লুঠপাটের সামগ্রী জমা হত মল্ল রাজকোষে। শ্রীনিবাস আচার্যর সঙ্গে লাল শালুতে মোড়া বৈষ্ণব পুঁথিগুলিকে বিপুল ধনরত্ন মনে করে তা লুঠ করে এনে মল্ল রাজকোষে জমা করেন লুঠেরারা।

রাজ কোষের দায়িত্বে থাকা কর্মচারীরা লাল শালু খুলে দেখেন তাতে রয়েছে শুধুই পুঁথিপত্র। ততদিনে খোয়া যাওয়া পুঁথির সন্ধান করতে করতে শ্রীনিবাস আচার্য এসে হাজির হন মল্ল রাজদরবারে। তৎকালীন মল্ল রাজা বীর হাম্বির ওই পুঁথিগুলি শ্রীনিবাস আচার্যকে ফেরত দিয়ে যে কোনও একটি পুঁথির বিষয়বস্তু বুঝিয়ে বলার অনুরোধ জানান।

রাজার অনুরোধে শ্রীনিবাস আচার্য পুঁথি পাঠ করলে বীর হাম্বির বৈষ্ণব ধর্মে অনুরক্ত হয়ে বৈষ্ণব ধর্ম গ্রহণ করে ওই ধর্মকে রাজ ধর্ম হিসাবে প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর থেকেই বিষ্ণুপুরে গড়ে ওঠে একের পর সুদৃশ্য টেরাকোটার মন্দির। পুরীর জগন্নাথ দেবের রথ যাত্রার আদলে বিষ্ণুপুরে রাজ আনুকুল্যে চালু হয় রথযাত্রা উৎসব।

রাজ দরবারের অদূরে নির্মীত হয় পাথরের অসাধারণ সুন্দর রথ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিষ্ণুপুরে মিটেছে রাজপাট। কিন্তু বিষ্ণুপুরের রথযাত্রার গরিমা আজও অমলিন। বিষ্ণুপুরের রথ যাত্রাকে কেন্দ্র করে এলাকার মানুষের আবেগও ফিকে হয়নি এক ফোঁটাও। বর্তমানে বিষ্ণুপুরে আট পাড়া ও এগারো পাড়ার উদ্যোগে দুটি পৃথক রথযাত্রার আয়োজন করা হয়। গত দু বছর করোনা পরিস্থিতির কারণে ওই দুই রথের শোভাযাত্রা বন্ধ ছিল। তবে এবার করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতেই ফের রথযাত্রাকে কেন্দ্র করে মেতেছে এককালের মল্ল রাজধানী বিষ্ণুপুর।