Mamata Banerjee: পাহাড় রক্ষায় বসানো হবে ম্যানগ্রোভ, পরামর্শ মমতার, কী বলছেন পরিবেশবিদরা?
Mamata Banerjee on Mangrove Afforestation: উত্তরবঙ্গের আধিকারিকদের উদ্দেশেই এই পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। আর গঙ্গাসাগরের প্রসঙ্গটি টেনেছেন উদাহরণ দেওয়ার জন্য। কারণ, এই গঙ্গাসাগরেই রাজ্য সরকার দিনের পর দিন ম্যানগ্রোভ বসিয়েছে। তাই, এই পদ্ধতিতে উত্তরবঙ্গের মাটিকেও শক্ত করতে চেয়েছেন মমতা। শুধু তাই নয়, বিপর্যয় মোকাবিলা করতে পাহাড়ি এলাকায় ম্যানগ্রোভ ও ভেটিভার বসানোয় জোর দিয়েছেন তিনি

দার্জিলিং: বিপর্যয় থেকে বাঁচতে প্রয়োজন ম্যানগ্রোভ। উত্তরবঙ্গের প্রশাসনিক বৈঠকে যোগ দিয়ে সেই বার্তাই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। অবশ্য, পাহাড়ি অঞ্চলে কীভাবে ম্য়ানগ্রোভের মতো নোনা জলের গাছ বসানো সম্ভব সেই নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন একাংশ।
বুধবার দার্জিলিঙে প্রশাসনিক কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। উত্তরবঙ্গের বন্যা বিপর্যয়ের ক্ষয়ক্ষতির খতিয়ান থেকে ভুটানের জল, নানা প্রসঙ্গই উঠে এসেছে সেই আলোচনায়। কখনও তিনি দিয়েছেন সমস্ত বাঁধ ‘ভেঙে দেওয়ার’ বার্তা। কখনও বা পরামর্শ দিয়েছেন ম্যানগ্রোভ বা ভেটিভার বসানোর।
মমতার পরামর্শ
বুধবার প্রশাসনিক বৈঠকের মাঝেই উত্তরবঙ্গে আধিকারিক ও বন দফতরকে বিশেষ পরামর্শ দেন মুখ্যমন্ত্রী। এদিন তিনি বলেন, ‘আপনারা ম্যানগ্রোভ লাগাতে শুরু করুন। শুধুই ম্যানগ্রোভ নয়, সঙ্গে ভেটিভারও লাগান। বন দফতরের তো একটা দায়িত্ব রয়েছে। আপনারা যদি ৫ কোটি গাছ গঙ্গাসাগরের ওই দিকটা রোপণ করতে পারেন, তা হলে উত্তরবঙ্গে এই ক্ষতিগ্রস্থ জায়গাগুলো কংক্রিটের থেকেও বেশি শক্ত হয়ে যাবে। আমি টাকা জলে ঢালতে রাজি নই। যেটা স্থায়ী সমাধান, সেটাই গ্রহণ করতে হবে।’
প্রশাসনিক সূত্র জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গের আধিকারিকদের উদ্দেশেই এই পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। আর গঙ্গাসাগরের প্রসঙ্গটি টেনেছেন উদাহরণ দেওয়ার জন্য। কারণ, এই গঙ্গাসাগরেই রাজ্য সরকার দিনের পর দিন ম্যানগ্রোভ বসিয়েছে। তাই, এই পদ্ধতিতে উত্তরবঙ্গের মাটিকেও শক্ত করতে চেয়েছেন মমতা। শুধু তাই নয়, বিপর্যয় মোকাবিলায় পাহাড়ি এলাকায় ম্যানগ্রোভ ও ভেটিভার বসানোয় জোর দিয়েছেন তিনি।
অবশ্য মমতার এই পরামর্শের সঙ্গে সম্পূর্ণ ভাবে এক মত নন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। বলে রাখা প্রয়োজন, উদ্ভিদবিদ্য়া নিয়ে দীর্ঘদিনের পড়াশোনা সুকান্তর। করেছেন গবেষণা ও সবশেষে অধ্যাপনাও। এদিন তিনি বলেন, ‘ডুর্য়াসে ম্যানগ্রোভ কীভাবে হবে আমরা তা জানা নেই। জমির প্রকৃতি অনুসারে গাছ হয়। ম্যানগ্রোভের জন্য যে ধরনের মাটি এবং পরিবেশ প্রয়োজন, তা উত্তরবঙ্গে নেই। উনি নতুন ভূগোল লিখবেন, নতুন রসায়ন লিখবেন, নতুন বোটানি লিখবেন।’
তাঁর সংযোজন, ‘ভেটিভার তো মালদহে পোঁতা হয়েছিল। ওখানে নদী ভাঙন রুখতে জেলা পরিষদ থেকে কেন্দ্রের পাঠানো টাকা দিয়ে ভেটিভার ঘাস বসানো হয়েছিল। কিন্তু ওই ঘাসগুলো কোথায় গেল? খোঁজ করে দেখুন, সাবিত্রী মিত্র (মানিকচকের বিধায়ক) ও কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরীর (প্রাক্তন মন্ত্রী) বাড়ির ক্যাশ বাক্সে রয়েছে। সেই জন্যই তো উনি এসব বলেছেন। কারণ তিনি জানেন, ১ কোটি ঘাস বসানোর দায়িত্ব দেওয়া হলে কয়েক হাজার বসানো হবে। বাকিগুলো তৃণমূলের ছাগলরা খেয়ে নেবে।’
পাহাড়ি অঞ্চলে ম্য়ানগ্রোভ বসানো কতটা সফল হবে সেই নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন পরিবেশবিদরাও। এদিন পরিবেশবিদ স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী বলেন, ‘ম্যানগ্রোভ ও ভেটিভার মাটিকে শক্ত করে ঠিকই। এগুলি পরিবেশের বাঁধ হিসাবে কাজ করে। বিপর্যয়ের সময় মাটিকে শক্ত হাতে ধরে রাখে। কিন্তু এটাও মাথায় রাখা প্রয়োজন এই ধরনের গাছ বসানো সত্যি দীর্ঘমেয়াদী একটা কাজ। পাশাপাশি, কেউ গাছ কেটে ফেলছে কিনা সেই দিকেও নজর রাখতে হবে। না হলে এই ধরনের প্রকল্পের বাস্তবায়ন ও সাফল্য অর্জন কঠিন হবে।’
