AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Dankuni: অ্যাম্বুল্যান্স-সে তো বিলাসিতা! অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে ১৬ ঘণ্টা টোটো চালিয়ে মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতার পথে বৃদ্ধ

Ambulence: ওপেন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আগে তিনি কলকাতার সাউথ গড়িয়ার চম্পাহাটি এলাকায় থাকতেন। সাংসারিক অশান্তির কারণে গত এক বছর ধরে মুর্শিদাবাদের সালার থানার সোনারুললি গ্রামে বসবাস করছিলেন। টোটো চালিয়ে সংসার চালান। অভাবের সংসারে কোনও রকমে দু বেলা দু মুঠো খাবার জোগাড় করতে পারলেও স্ত্রীর চিকিৎসার খরচ জোগাতে অপারক।

Dankuni: অ্যাম্বুল্যান্স-সে তো বিলাসিতা! অসুস্থ স্ত্রীকে নিয়ে ১৬ ঘণ্টা টোটো চালিয়ে মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতার পথে বৃদ্ধ
ওপেন বন্দ্যোপাধ্য়ায় ও তাঁর স্ত্রীImage Credit: Tv9 Bangla
| Edited By: | Updated on: Nov 14, 2024 | 4:38 PM
Share

ডানকুনি: দশদফা দাবি নিয়ে সম্প্রতি পথে নেমেছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। এই দাবিগুলির মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি দাবি ছিল, রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নতি করতে হবে। তবে বুধবার যা ঘটে গেল তা আবারও যেন বেআব্রু করে দিল রাজ্যের চিকিৎসা ব্যবস্থার হাল! অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া না থাকায় নিজের টোটোতেই অসুস্থ স্ত্রীকে বসিয়ে মুর্শিদাবাদ থেকে চিকিৎসা করাতে কলকাতার পথে বৃদ্ধ। মাঝপথে ডানকুনিতে টোটোয় চার্জ দেওয়ার জন্য দাঁড়ান। তখনই শিকে ছেড়ে বৃদ্ধর। মধ্যরাতে খবর যায় ডানকুনি পৌরসভায়। কিন্তু মুর্শিদাবাদ থেকে কেন কলকাতা? জানা গিয়েছে, বৃদ্ধের স্ত্রীকে প্রথমে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে স্থানান্তরিত করা হয়। তারপর সেখান থেকে কলকাতা মেডিক্যালে। যদিও, সেখানেও ঠাই হয়নি তাঁর। কলকাতা থেকে এসএসকেএম, তারপর শম্ভুনাথ চ্যাটার্জীতে ভর্তি হলেন তিনি। অর্থাৎ ৪টি হাসপাতাল ঘুরে ভর্তি হলেন তিনি। কেন? প্রথমেই মুর্শিদাবাদ মেডিক্যালে কেন স্থানান্তরিত করা হল না? সেখান থেকে কেন কলকাতায় পাঠানো হল তাঁকে? উঠছে প্রশ্ন। যেখানে রেফারেল সিস্টেমের দাবি জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। সেখানে স্বাভাবিকভাবেই রোগীর হেনস্থা আরও একবার প্রশ্ন তুলে দিল চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে।

মুর্শিদাবাদের সালার থানার সোনারুললি গ্রামের বাসিন্দা ওপেন বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর স্ত্রী দীর্ঘদিন কিডনির সমস্যায় ভুগছেন। মুর্শিদাবাদের কেতুগ্রাম গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসা চলছিল বৃদ্ধার। সেখান থেকে বর্ধমান মেডিকেলে কলেজে রেফার করা হয় বৃদ্ধাকে। বর্ধমান মেডিকেল কলেজে চিকিৎসা পরিষেবা সহজে মিলবে না এই আশঙ্কায় কলকাতা মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন ওপেন বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু কলকাতা আসতে গেলে অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া লাগবে। তার তো অনেক খরচা। পাবেন কোথায়? কে সাহায্য করবে? তাই আর উপায় না পেয়ে নিজের টোটো নিয়েই কলকাতার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েন বৃদ্ধ। দীর্ঘ ১৬ ঘণ্টা টোটো চালিয়ে ডানকুনি এসে পৌঁছন রাত দশটা নাগাদ। সেখান থেকে আরও সাত-আটঘণ্টা লাগবে কলকাতা। ডানকুনিতে যখন টোটোর ব্যাটারিতে চার্জ দিচ্ছেন, সেই সময় বাকি টোটো চালকদের নিজের সমস্যার কথা জানান। তাঁদের মধ্যেই একজন সহৃদয় ব্যক্তি খবর দেয় ডানকুনি পুরসভার পুর প্রধান হাসিনা শবনমকে। পুর প্রধানের নির্দেশে ওই রোগীকে অ্যাম্বুলেন্সে করে কলকাতা মেডিকেলে পাঠানো হয় মধ্যরাতে।

ওপেন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, আগে তিনি কলকাতার সাউথ গড়িয়ার চম্পাহাটি এলাকায় থাকতেন। সাংসারিক অশান্তির কারণে গত এক বছর ধরে মুর্শিদাবাদের সালার থানার সোনারুললি গ্রামে বসবাস করছিলেন। টোটো চালিয়ে সংসার চালান। অভাবের সংসারে কোনও রকমে দু বেলা দু মুঠো খাবার জোগাড় করতে পারলেও স্ত্রীর চিকিৎসার খরচ জোগাতে অপারক। বৃদ্ধর মেয়ের বাড়ি নিউটাউনে। মেয়ের কাছে থেকে স্ত্রীর চিকিৎসা করবেন বলে কলকাতা মেডিকেল কলেজে যাচ্ছেন তিনি। পরে ডানকুনিতে গোটা বিষয়টি জেনে তাঁকে আর্থিক সহায্য করেন সেখানকার টোটো চালকরা।

ওপেন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওঁর প্রথম নার্ভ ফেল করে। যন্ত্রণার পর নার্ভ ফেল করে। আমি যেখানে যাচ্ছি বলছে এই চিকিৎসা করাও, ওই চিকিৎসা করাও। ছেলেটা উচ্চ-মাধ্যমিক পড়ে। মায়ের চিকিৎসার জন্য পড়াশোনাও করাতে পারলাম না। ছেলেটা না পরীক্ষা দিতে পারল, না বৌকে চিকিৎসা করাতে পারলাম। নিজে রান্না করে ওই ছেলেকে খাওয়াই। আমি আর পেরে উঠছি না। মুর্শিদাবাদ থেকে কলকাতায় নিয়ে এসেছি টোটোতে। অ্যাম্বুলেন্সের খরচ জোগাতে পারছি না। আমার পয়সা নেই।”