Jutemill Closed: বছরের প্রথমদিন কারখানায় গিয়ে মাথায় বাজ! ঝুলল তালা, কাজ হারালেন প্রায় ৫ হাজার শ্রমিক
Hoogly: রোজকার মতো শনিবার সকালেও গোন্দলপাড়া জুটমিলে কাজে যান শ্রমিকরা। গিয়ে দেখেন গেটে ঝুলছে নোটিস।
হুগলি: বছরের প্রথম দিনই বন্ধ হয়ে গেল চন্দননগর গোন্দলপাড়া জুটমিল। কর্মহীন হয়ে পড়লেন ৫ হাজার শ্রমিক। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত ১১ জুলাই খুলেছিল কারখানার গেট। শনিবার ফের অস্থায়ী সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিস ঝোলানো হয় কারখানার গেটে। নোটিস দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন শ্রমিকরা। একেই করোনা পরিস্থিতিতে আর্থিক নিশ্চয়তা আবারও টালমাটাল। এর মধ্যে এভাবে কারখানার দরজা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কালো মেঘ শ্রমিক পরিবারগুলির মনে।
পুরভোটের মুখে এইভাবে জুটমিল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই কারখানা বন্ধকে ঘিরে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক তরজা শুরু হয়ে গিয়েছে। কারখানা খোলার কী পথ তা নিয়ে আলোচনার থেকে তৃণমূল, বিজেপি সবপক্ষই ব্যস্ত কার ঘাড়ে কতটা দোষ ঠেলা যায় তা নিয়ে। বিজেপির দাবি, ‘তৃণমূলের অপদার্থতা’র কারণে বছরের প্রথম দিন কর্মহারা হলেন এতগুলো মানুষ। পাল্টা তৃণমূলের বক্তব্য, কেন্দ্রের উদাসীনতার কারণে পাটের দাম নিয়ে একটা সমস্যা চলছে। তার প্রভাবই পড়ছে জুটমিলগুলিতে।
রোজকার মতো শনিবার সকালেও গোন্দলপাড়া জুটমিলে কাজে যান শ্রমিকরা। গিয়ে দেখেন গেটে ঝুলছে নোটিস। পুরনো অভিজ্ঞতা থেকেই বুকটা ছ্যাঁৎ করে ওঠে তাঁদের। পর মুহূর্তেই নিজেদের সামলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন শ্রমিকরা। এভাবে কথায় কথায় কারখানায় সাসপেনশন অব ওয়ার্কের নোটিস ঝোলালে কী ভাবে শ্রমিকদের চলবে প্রশ্ন তুলে সরব হন তাঁরা। কারখানার তরফে দাবি, সরকার কাঁচা পাটের জন্য যে দাম নির্ধারিত করেছে, তার থেকে বেশি দামে পাট কিনতে হচ্ছে তাদের। ফলে আর্থিক সঙ্কটের মুখে পড়তে হচ্ছে কারখানা কর্তৃপক্ষকে। তাই কাজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শ্রমমন্ত্রী বেচারাম মান্না বলেন, “আমরা বরাবরই বলছি পাটের দাম নিয়ে একটা সমস্যা চলছে। কারণ, আমাদের কেন্দ্রীয় সরকার পাটের দামের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দিয়েছে। আমরা এই ঊর্ধ্বসীমা তুলে দিতে বলেছিলাম রাজ্য সরকারের তরফ থেকে। এটা না তোলার জন্য সমস্যা হচ্ছে। অনেক জুটমিলে কাঁচা পাটের অভাব দেখা দিচ্ছে। সে কারণে এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। আমরা অনেক মিটিং করেছি। কেন্দ্রকে বলেছি বিষয়টা। কিন্তু ওরা কর্ণপাত করছে না। বিজেপি অনেক কথাই বলে ভোট এলে। বিজেপির দু’জন সাংসদ পুরভোটের আগে রাজনীতি করার জন্য কেন্দ্রকে ঢাল করে এই পরিস্থিতি তৈরি করছে।”
এ প্রসঙ্গে হুগলি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতি সুরেশ সাউ বলেন, “অপদার্থতার কারণে যখন সরকারের ব্যর্থতা প্রকট হয়, তখন এই মন্ত্রিমশাইয়ের মুখ থেকে এ ধরনের কথাবার্তা চলে আসে। আসলে আমাদের গোন্দলপাড়া জুটমিল সংলগ্ন যে এলাকা সেটা সম্পূর্ণ অবাঙালি এলাকা। সে কারণেই এই নোংরা রাজনীতিটা এখন তৃণমূল করছে। মালিকপক্ষকে দিয়ে এখন এই গোন্দলপাড়া জুটমিল বন্ধ করেছে। তবে আমরা এই চক্রান্তকে ভেঙে চুরমার করে দেব। মানুষ জানেন, এই জুটমিল যে বন্ধ হতে চলেছিল। এর জন্য তৃণমূল তলে তলে চক্রান্ত চালাচ্ছিল। কিন্তু আমরা এই জুটমিল খোলার দাবি নিয়ে প্রতিটা মানুষের কাছে যাব এবং যোগ্য জবাব দেব।”
আরও পড়ুন: স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে বাড়ছে সংক্রমণ! এবার করোনা আক্রান্ত চিত্তরঞ্জন ন্যাশনালের অধ্যক্ষ