Hooghly: ‘এটাই ট্র্যাডিশন’, প্যারীমোহন কলেজে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন উঠতেই জবাব তৃণমূলের
Hooghly: উত্তরপাড়া রাজা প্যারীমোহন কলেজে ২০১১ সালের পর থেকে এখনও পর্যন্ত মোট ২৭ জনকে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ করা হয়েছে। তার মধ্যে ১০ জন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্য ছিল বলে জানা গিয়েছে। বাকিরাও তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত বলে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন।

উত্তরপাড়া: কসবাকাণ্ডে রাজ্যজুড়ে শোরগোল। নাম জড়িয়েছে কলেজেরই অস্থায়ী কর্মীর। এই আবহে উত্তরপাড়া রাজা প্যারীমোহন কলেজে অস্থায়ী কর্মি নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিরোধীদের অভিযোগ, শাসকদলের লোক হলেই এভাবে চাকরি পাওয়া যায়। তৃণমূলের যুক্তি, এটাই ট্র্যাডিশন। বাম আমলে এভাবেই অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ হয়েছে।
সাউথ ক্যালকাটা ল’ কলেজে ধর্ষণকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত ওই কলেজেরই অস্থায়ী কর্মী। তিনি তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ। ঘটনার পর যা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়। একজন কলেজের প্রাক্তনী শুধু শাসকদল করেন বলেই তাঁকে চাকরি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।
এই আবহে উত্তরপাড়া রাজা প্যারীমোহন কলেজে অস্থায়ী কর্মী নিয়োগ ঘিরে প্রশ্ন উঠছে। ২০১১ সালের পর থেকে এখনও পর্যন্ত মোট ২৭ জনকে অস্থায়ীভাবে নিয়োগ করা হয়েছে। তার মধ্যে ১০ জন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সদস্য ছিল বলে জানা গিয়েছে। বাকিরাও তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত বলে স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন।
কসবার আবহে প্রশ্ন উঠছে, তৃণমূল ছাত্র পরিষদ করলেই কি কলেজে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে চাকরি পাওয়া যায়? হুগলি জেলা এসএফআই-এর সম্পাদক অর্ণব দাসের অভিযোগ, “তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতা হলেই প্যারীমোহন কলেজে অস্থায়ী চাকরি পাওয়া যায়। দুর্নীতিবাজদের আঁতুড়ঘরে পরিণত হয়েছে এই কলেজ।” বিজেপির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলার নেতা ইন্দ্রনীল দত্তর অভিযোগ, “যারা তৃণমূলের ঝান্ডা ধরছে, তাদেরই এইভাবে কোনও বিজ্ঞপ্তি ছাড়া পরীক্ষা না নিয়ে কলেজে চাকরি দেওয়া হচ্ছে। শুধু উত্তরপাড়া কলেজে নয়, বিভিন্ন জায়গায় হচ্ছে।”
২০১৬ সাল থেকে একুশ সাল পর্যন্ত উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক ছিলেন প্রবীর ঘোষাল। রাজা প্যারীমোহন কলেজের গভর্নিং বডির সদস্য ছিলেন। তিনি বলেন, “সিপিএমের আমলে পার্টির মেম্বার ছাড়া কেউ চাকরি পায়নি বলে আমরা দেখেছি। সেখানে ইন্টারভিউ হত কি না সেটা জানি না। তবে এতে আমি কোনও অন্যায় দেখি না। নিয়োগের পদ্ধতিতে কোনও গোলমাল থাকলে সেটা নিশ্চয়ই মান্যতা দেওয়া উচিত নয়। কসবাকাণ্ডে মূল অভিযুক্তর ফাঁসি হওয়া উচিত। তবে তার মানেই সব কলেজে কে কাকে চাকরি দিয়েছে, সেটা নিয়ে বলা ঠিক নয়। বেকাররা চাকরি পাবে, সে দল করুক না করুক। সিপিএমের এ ব্যাপারে বলা সাজে না। এটা নিয়ে রাজনীতি করারও কিছু নেই। উত্তরপাড়া কলেজ নিয়ে যেহেতু কথা উঠেছে তাই বলছি, এখানে যা নিয়োগ হয়েছে সমস্ত ইন্টারভিউ নিয়ে হয়েছে। কোনও বেআইনি নিয়োগ হয়েছে বলে আমার কাছে কেউ নালিশ করেনি কোনওদিন। আজকে যাঁরা বলছেন তখন কি তাঁরা ঘুমোচ্ছিলেন?”
উত্তরপাড়া পৌরসভার আট নম্বর ওয়ার্ড তৃণমূল কাউন্সিলর তাপস মুখোপাধ্যায় বলেন, “সিপিএমের আমলেও এরকম অনেক চাকরি হয়েছে, যারা ইন্টারভিউ না দিয়ে চাকরি করেছে। এটা একটা ট্র্যাডিশন। যে যখন কলেজে ক্ষমতায় থাকে, সুযোগ থাকলে ছেলেদের ঢুকিয়ে দেয়। সেটা কলেজের ছেলে হতে পারে, বাইরের ছেলেও হতে পারে। এসবই অস্থায়ী চাকরি।”

