Bikaner-Guwahati Express Train Accident: হাসপাতালে হাহাকার! রেলদুর্ঘটনায় আপাতত স্থিতিশীল আহতরা, বলছেন চিকিৎসকরা

Maynaguri Rail Accident: রেল দুর্ঘটনায় উত্তরের হাসপাতালগুলিতে চাপ বাড়তে পারে এ কথা আগেই জানানো হয়েছিল। তৈরি থাকতে বলা হয়েছিল, সমস্ত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের। যত সময় এগিয়েছে, ভিড় বেড়েছে হাসপাতাল চত্বরে।

Bikaner-Guwahati Express Train Accident: হাসপাতালে হাহাকার! রেলদুর্ঘটনায় আপাতত স্থিতিশীল আহতরা, বলছেন চিকিৎসকরা
জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 14, 2022 | 12:41 PM

জলপাইগুড়ি:  চারিদিকে কেবল হাহাকার। কান্না। আর্তনাদ। জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের (Jalpaiguri Super Speciality Hospital) ছবিটা এখন এমনই। ময়নাগুড়ির ভয়াবহ রেল দুর্ঘটনায় কেবল স্বজন হারিয়েছেন অনেকে। কেউ কেউ জখম হয়েছেন মারাত্মক। এখন কেবল চোখের জলই ভরসা। হাসপাতাল সূত্রে খবর, মোট ৪২ জন আহতের মধ্যে ২৮ জন এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আহতরা আপাতত স্থিতিশীল। আপাতত কোনও বিপদের আশঙ্কা নেই বলেই জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।

এদিকে, হাসপাতালে ক্রমেই বাড়ছে ভিড়। নিজেদের হারানো জনকে খুঁজতে মর্গে, হাসপাতাল চত্বরেই ভিড় করছেন সকলে। দুর্ঘটনার পরেই যখন উদ্ধারকার্য শুরু হয় বৃহস্পতিবার রাতে, দেখা যায়, কোনও কামরা থেকে বেরিয়েছে ভাঙাচোরা টিফিন কৌটো, কোথাও থেকে বেরিয়েছে কেবল একটি হাত। কারোর হাতের বা রিস্টওয়াচ। চোখের সামনে এমন ভয়াবহ  মৃত্যু দেখে শিউরে উঠেছেন কেউ কেউ। কেউ বা ভাবতেই পারছেন না, এখনও বেঁচে ফিরেছেন।

রেল দুর্ঘটনায় উত্তরের হাসপাতালগুলিতে চাপ বাড়তে পারে এ কথা আগেই জানানো হয়েছিল। তৈরি থাকতে বলা হয়েছিল, সমস্ত চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের। যত সময় এগিয়েছে, ভিড় বেড়েছে হাসপাতাল চত্বরে। ইতিমধ্যেই, জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল ও শিলিগুড়ির একটি বেসরকারি হাসপাতালে একাধিক আক্রান্তরা ভর্তি হয়েছেন। রেলদফতর সূত্রে খবর ৩৬ জন এখনও পর্যন্ত জখম হয়েছেন। যদিও, স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, মোট মৃতের সংখ্যা এখনও পর্যন্ত ৯ জন ও গুরুতর জখম ৪২। আহতদের দেখতে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণ।

এদিকে, ভয়াবহ রেলদুর্ঘটনার জেরে রক্ত সংকট হতে পারে এই চিন্তা করে রক্তদান শিবিরের আয়োজনে এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। শুধুমাত্র ফেসবুকে পোস্ট করে মাত্র এক ঘণ্টায় ২৫০ ইউনিট রক্ত সংগ্রহ করল ওই সংস্থা। প্রায়  ২০০ মানুষ এদিন রক্ত দেন। জলপাইগুড়ির হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে সেই রক্ত তুলে দিল ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।

বৃহস্পতিবার। বিকেল ৪টে ৫৩। দোমহানি স্টেশন ছাড়ে আপ বিকানের এক্সপ্রেস। ৪টে ৫৮ দুর্ঘটনা। আচমকাই ব্রেক কষে থমকে যায় ট্রেন। সে সময় ট্রেনের গতি ছিল ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার। লাইনচ্যুত হয়ে ছিটকে যায় ট্রেনের বগিগুলি। স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রেলের কামরাগুলি একটি আরেকটির উপর উঠে পড়ে, যেন খেলনা গাড়ি! দুর্ঘটনায় বেঁকেচুরে যায় প্রায় ১২ টি কামরা।

ওই এক্সপ্রেসের সফরযাত্রী পূজা ভার্মা সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর মুখোমুখি হয়ে বলেন, “ট্রেন চলছিল। হঠাৎ ঝাঁকুনি দিয়ে ট্রেন ব্রেক কষে। তারপর সব জিনিসপত্র উল্টে পড়ে যায়। একটা বগি আর একটা বগির ওপর উঠে যায়। অনেকেই বগির নীচে আটকে পড়েছে। অনেকেই মারা গিয়েছে, অনেকের হাত-পা ভেঙে গিয়েছে।”

তবে ঠিক কত মানুষের মৃত্যু হয়েছে, তা বলতে পারেননি পূজা। তিনি জানিয়েছেন, ‘একেকটা বগিতে ২০-২৫ জন করে ছিল। অনেকেই আহত হয়েছে। কেউ কেউ বেরিয়ে এসেছে। বাকিদের কী অবস্থা জানি না।’

জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, উদ্ধারকার্যে নেমেছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। কোচবিহার থেকে ১৬ টি অ্যাম্বুলেন্স, ডাক্তার ও নার্সদের একটি দল ও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ঘটনাস্থলের যান। জেলা পুলিশ সুপার সুমিত কুমার জানিয়েছেন, কুড়ি জন পুলিশের একটি দল শুকনো খাবারের প্যাকেট সহ বেশ কিছু প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে ময়নাগুড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুন: Bikaner-Guwahati Express Train Accident: ‘যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই দুর্ঘটনা, কোচের কোনও সমস্যা নয়’