Bikaner-Guwahati Express Train Accident: ‘যান্ত্রিক ত্রুটির কারণেই দুর্ঘটনা, কোচের কোনও সমস্যা নয়’
Maynaguri Train Accident: লাইনে কোনও গোলমাল ছিল কি না তা জানতে শুক্রবার সকালেই ট্রলি চালিয়ে পরিদর্শন শুরু করেন রেলকর্তারা। উপস্থিত ছিলেন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর অধিকর্তারাও।
জলপাইগুড়ি: কোচের কোনও সমস্যা নয়। যান্ত্রিক ত্রুটির জন্যই বড় দুর্ঘটনা। দোমহনি-রেল দুর্ঘটনাকাণ্ডে স্পষ্ট জানালেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণ। শুক্রবার সকালেই ময়নাগুড়ির দোমহনিতে ঘটনাস্থলে এসে পৌঁছন মন্ত্রী। গোটা ঘটনাস্থল ঘুরেও দেখেন তিনি। তারপরেই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে ফের একবার উল্লেখ করেন, কেন দুর্ঘটনা তা তদন্ত করে দেখা হবে।
রেলমন্ত্রীর পর্যবেক্ষণ
শুক্রবার সকালে রেলমন্ত্রী বলেন, “আমি নিজে সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখেছি। আচমকা যান্ত্রিক ত্রুটির জন্যই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। সেক্ষেত্রে যে ইক্যুইপমেন্টগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলি সংগ্রহ করে ভাল করে খতিয়ে দেখা হবে। সেখানে কোনও সমস্যা রয়েছে কি না। সেক্ষেত্রে বেশ কিছু চিহ্নও পাওয়া যেতে পারে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হবে। ঘটনার শিকড়ে গিয়ে তদন্ত করা হবে।”
পাশাপাশি, রেলমন্ত্রীর আরও সংযোজন, “কোচের জন্য কোনও সমস্যা হয়নি। নতুন অত্যাধুনিক LHB কোচ অধিকাংশ ট্রেনেই চালু করা সম্ভব হয়নি। তবে কোচের জন্য কোনও সমস্যা হয়নি। গোটা ঘটনাই তদন্ত করে দেখা হবে। আজই কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি তদন্ত করে দেখবে। কিছু সময়ের মধ্যেই আধিকারিকরা পৌঁছে যাবেন।”
প্রশ্ন কোথায়?
প্রসঙ্গত, দোমহনির রেল দুর্ঘটনায় একাধিক প্রশ্ন সামনে এসেছে। প্রথমত, শীত ও গ্রীষ্মে রেললাইনের দৈর্ঘ্য় বেড়ে যাওয়ায় ট্র্যাকে ফাটল বেড়ে যেতে পারে। সেক্ষেত্রে কি ঠিকভাবে লাইনে নজরদারি চালানো হয়নি? দ্বিতীয়ত, কেন অত্যাধুনিক কোচ ব্যবহার করা হয়নি? প্রশ্ন রয়েছে আরও। কেনই বা উদ্ধারকাজে ব্যবহার করা হল গ্যাস কাটার? কেন ঘটনাস্থলে আগে এল না ১৪০ টনের মেগা ক্রেন? চালক কি আন্দাজ করতে পেরেছিলেন বিপদ আসছে? ২৩১৪ কিলোমিটারের দীর্ঘ পথে কি গতিবেগ বেশি ছিল? কোনও তথ্য গোপন করা হচ্ছে? প্রশ্ন একাধিক। উত্তর এখনও স্পষ্ট নয়।
এদিকে, লাইনে কোনও গোলমাল ছিল কি না তা জানতে শুক্রবার সকালেই ট্রলি চালিয়ে পরিদর্শন শুরু করেন রেলকর্তারা। উপস্থিত ছিলেন বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর অধিকর্তারাও।
বিভীষিকার বেলাইন
বৃহস্পতিবার বিকেলে, আচমকাই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে উত্তরবঙ্গে। দুর্ঘটনার সময় ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে চলছিল এক্সপ্রেস ট্রেনটি। দুর্ঘটনায় দেখা যায়, ট্রেনের বগিগুলো খেলনা গাড়ির মতো একে অপরের ওপর উঠে পড়েছে। এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট ৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আহত বহু। দুর্ঘটনায় জখমদের জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রেল দুর্ঘটনার খবর পেয়েই উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণ। টুইট করে সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পাশাপাশি আর্থিক ক্ষতিপূরণের কথাও ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। কোভিড বৈঠকের মাঝেই রেল দুর্ঘটনার খবর পান মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। টুইটে নিজের উদ্বেগের কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। টুইটে তিনি উল্লেখ করেন, রাজ্য সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, ডিএম/এসপি/আইজি উত্তরবঙ্গ উদ্ধার ও ত্রাণ তদারকি করছেন। আহতদের যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিৎসা সেবা দেওয়া হবে। ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছয় জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। পাঠানো হয় একাধিক অ্যাম্বুলেন্স। প্রায় রাতভর চলে উদ্ধারকার্য।
আরও পড়ুন: Bikaner-Guwahati Express Train Accident: ‘মানুষের প্রাণ নিয়ে ছেলেখেলা…সিবিআই তদন্ত হোক’