BSF in Border: গায়ের জোরে ৯ বছর ধরে দখল! শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশিদের হাত থেকে এপারের কৃষকের জমি উদ্ধার করল BSF
BSF in Border: চলতি বছরে ফের বিষয়টি তারা BSF এর ৯৩ নং ব্যাটেলিয়নের কমান্ডারের কাছে অভিযোগ আকারে জানান। অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেন কমান্ডার। উপর থেকে গ্রাউন্ড রিপোর্ট তৈরির নির্দেশ আসে।
জলপাইগুড়ি: বিএসএফের তৎপরতায় বাংলাদেশে দখল হয়ে যাওয়া জমি উদ্ধার করল বিএসএফ। অভিযোগ, বাংলাদেশি দুষ্কৃতিরা ৯ বছর ধরে দখল করে রেখেছিল চাষের জমি। শেষ পর্যন্ত উদ্ধার করল BSF। এবার হারানো জমিতে চাষ করতে পারবেন, আশায় বুক বাঁধছেন ভারতীয় কৃষক আনন্দ সরকার। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের ভারত বাংলাদেশ সীমান্ত এলাকায় থাকা নগর বেরুবারি গ্রামে থাকেন তিনি। BSF এর ভরত BOP অধীনে থাকা সাকাতি ঝাকুয়া পাড়ায় থাকা সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে চাষবাস করে সংসার চলতো তাঁর।
২০১৫ সালে সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া শুরু হয়। তাঁদের বসত ভিটা ও চাষের জমি চলে যায় কাঁটাতারের ওপারে। বাধ্য হয়ে পরিবার নিয়ে এলাকা ছেড়ে নগর বেরুবারি গ্রাম পঞ্চায়েতের নতুন বন্দর এলাকায় এসে বসবাস শুরু করেন। আচমকাই একদিন দেখেন, তাঁদের জমিতে অন্য লোক চাষ করছে। খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন এরা বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলার প্রধান পাড়া এলাকার বাসিন্দা। বিষয়টি তারা সেই সময়ে দায়িত্বে থাকা BSF কর্তাদের জানান। কিন্তু, তখন কোনও লাভ হয়নি বলে জানাচ্ছেন।
চলতি বছরে ফের বিষয়টি তারা BSF এর ৯৩ নং ব্যাটেলিয়নের কমান্ডারের কাছে অভিযোগ আকারে জানান। অভিযোগ পেয়ে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেন কমান্ডার। উপর থেকে গ্রাউন্ড রিপোর্ট তৈরির নির্দেশ আসে। নির্দেশ পেয়ে বাংলাদেশের উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যেই ওই এলাকা পরিদর্শন করেন আধিকারিকেরা। এরপর রিপোর্ট পাঠিয়ে দেন। এরপরেই বিএসএফের তরফে বাংলাদেশ সরকারকে প্রোটেস্ট নোট দেওয়া হয়। সম্প্রতি ওই জমিটিতে ভারত – বাংলাদেশের আধিকারিকেরা যৌথ সমীক্ষা করে। গায়ের জোরে দখল রাখা সাড়ে তিন বিঘা জমি উদ্ধার করা হয়।
এই খবরটিও পড়ুন
আনন্দবাবুর স্ত্রী আনুমালা সরকার বলেন, “কাঁটাতারের বেড়া হওয়ার পর আমরা অন্যত্র চলে আসি। কাজকর্ম করে কোনরকম ভাবে সংসার চালাচ্ছিলাম। সংসারের হাল ফেরাতে স্বামী ভিন রাজ্যে চলে যায় কাজ করতে। এরপর ২০১৯ সালে স্বামীর দুটো কিডনি বিকল হয়ে যায়। চিকিৎসার জন্য টাকা দরকার। জমি বিক্রি করে টাকার জোগাড় করব ভেবেছিলাম। কিন্তু, গিয়ে দেখতে পাই আমাদের জমি দখল করে নিয়েছে বাংলাদেশিরা।” একই সুর আনন্দবাবুর গলাতেও। বলেন, “জমি দখল হয়ে গিয়েছে জানবার পর আমার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। আমি বিভিন্ন জায়গায় দৌড়াদৌড়ি করি। অভিযোগ জানাই। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। চোখের সামনে গত ৯ বছর ধরে দেখে যাচ্ছিলাম আমার জমি বাংলাদেশিদের হাতে দখল হয়ে আছে। এরপর আমি চলতি বছর BSF আধিকারিকের নজরে আনি। তাঁরা উদ্যোগ নিলে জমি জরিপ হয়। জানতে পারি আমার জমি উদ্ধার হয়েছে।” খুশি বিএসএফ-ও। বিএসএফের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ডেন্ট মনোজ কুমার বলেন, “সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের সম্পত্তি রক্ষা করা বিএসএফের কর্তব্য। আমরা সেই কাজ করেছি।”