মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফরের মুখে ‘হুমকি’ প্রাক্তন কেএলও জঙ্গির!

Ex KLO Leader: জলপাইগুড়ি বজরাপাড়া বিস্ফোরণ মামলা সহ মোট ২২ টি রাষ্ট্রদোহিতা মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বারোপেটিয়া গ্রামপঞ্চায়েতের বাসিন্দা নারায়ণ রায় ওরফে তরুণ থাপা। ২০০১ সালে কামতাপুরি আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ হয়ে ভূটানের পিপিংয়ে চলা চতুর্থ ব্যাচে ৬ মাসের ক্যাম্পে জীবন সিংয়ের উপস্থিতিতে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রীর উত্তরবঙ্গ সফরের মুখে 'হুমকি' প্রাক্তন কেএলও জঙ্গির!
নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 24, 2021 | 12:03 AM

জলপাইগুড়ি: অবৈধ বালি খাদানের বৈধ অনুমতি চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন প্রাক্তন কেএলও (KLO) জঙ্গি তরুণ থাপা। এমনকি দাবি পূরণ না হলে ফের জঙ্গি শিবিরে ফিরে যেতে পারেন তিনি। শনিবার বিকালে তাঁর বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করে এভাবেই হুঁশিয়ারি দিলেন প্রাক্তন কেএলও নেতা নারায়ণ রায় ওরফে তরুণ থাপা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (CM Mamata Banerjee) সফরের মুখে তাঁর এহেন দাবিকে ঘিরে জোর চাঞ্চল্য প্রশাসনিক মহলে।

কিন্তু কে এই তরুণ থাপা?

জলপাইগুড়ি বজরাপাড়া বিস্ফোরণ মামলা সহ মোট ২২ টি রাষ্ট্রদোহিতা মামলায় অন্যতম অভিযুক্ত ছিলেন জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বারোপেটিয়া গ্রামপঞ্চায়েতের বাসিন্দা নারায়ণ রায় ওরফে তরুণ থাপা। ২০০১ সালে কামতাপুরি আন্দোলনে উদ্বুদ্ধ হয়ে ভূটানের পিপিংয়ে চলা চতুর্থ ব্যাচে ৬ মাসের ক্যাম্পে জীবন সিংয়ের উপস্থিতিতে অস্ত্র প্রশিক্ষণ নিয়েছিলেন তিনি। এর পর বজরা পাড়া বিস্ফোরণ কাণ্ড সহ বিভিন্ন রাষ্ট্রদোহিতা মামলায় নাম জড়ায় তাঁর। তরুণের বিরুদ্ধে রাজ্যের বিভিন্ন থানা সহ ভিন রাজ্যে মোট ২২ টি মামলা রুজু হয়েছে।

পুলিশ তাঁকে ধরবার জন্য একসময় হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছিল উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্তে। অবশেষে ২০১৪ সালে সুদূর নেপালে অভিযান চালিয়ে তরুণকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার পর তাঁর ঠাঁই হয় জেলে। ২০১৫ সালের শেষ নাগাদ সমাজের মূলস্রোতে ফিরতে চেয়ে জেল থেকেই মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন করেন তরুণ থাপা সহ বেশ কয়েকজন কেএলও জঙ্গি। তার পর ২০১৬ সালে জেল থেকে ছাড়া পান। এখন তরুণ হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন পুরনো পথে ফিরে যাবার। কেন?

এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে তিনি দাবি করেন প্রশাসনের মৌখিক অনুমতিতে ২০১৭ সাল থেকে বাড়ি সংলগ্ন করলা নদীর চর এলাকা থেকে বালি তুলতেন। সেই বালি বিক্রি করেই তাঁর ২২ টি মামলা চালানোর খরচ যোগাড় থেকে ৯ সদস্যের বিরাট সংসারের দেখভাল করে এসেছেন। কিন্তু বর্তমানে সরকারি নিষেধাজ্ঞায় সেই উপার্জনের রাস্তা বন্ধ। এই পরিস্থিতিতে তাঁর বালি ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ার জন্য লাইসেন্স চাইছেন নারায়ণ রায়।

তিনি বলেন জেল থেকে ছাড়া পেয়ে আর অন্ধকার জগতে ফিরে যাননি। কথা মতো প্রশাসনের মৌখিক অনুমতিতে করলা নদী থেকে বালি তুলে বিক্রি করতেন। এই ব্যবসার জন্য তিনি ফিনান্স কোম্পানি থেকে লোন নিয়ে একটি ট্রাক্টরও কিনেছেন। কিন্তু বর্তমানে সরকারি নিষেধাজ্ঞায় সে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভীষণ কষ্টে সংসার চলছে। এছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে যে প্রায় ২২ টি মামলা রয়েছে, সেগুলিরও খরচ আছে।

রাজ্য সরকার প্রাক্তন কেএলও নেতা এবং লিঙ্কম্যানদের হোমগার্ডের চাকরি দিলেও সেই চাকরি করতে আবার রাজি নন নারায়ণ।তাই এখন তাঁর দাবি যদি সরকার গুরুত্ব সহকারে না দেখে তবে নিরুপায় হয়ে ফের কেএলও -তে ফিরে যাওয়ার কথা ভাবতে হবে।

এদিকে এ নিয়ে জলপাইগুড়ি জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসুর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে হোয়াটসঅ্যাপে সংক্ষেপে এক প্রতিক্রিয়ায় জানান, সরকারের আইন অনুযায়ী, ই-অকশন ছাড়া বালি খাদানের ব্যবসায়িক অনুমোদন পাওয়া যায় না।

আরও পড়ুন: Corona Update: থামবে কোথায়? একদিনে করোনা আক্রান্ত হাজার ছুঁইছুঁই, বলি আরও ১২