Dhupguri: হাসপাতাল না পাতালঘর! মোবাইলের আলোয় রুদ্ধশ্বাস অপারেশন ডাক্তারের

Hospital: আধো আলোছায়ায় তখন মোবাইল ফোনের ফ্ল্যাশ দিয়ে রোগীকে দেখেন চিকিৎসকেরা। সেবা করেন নার্সরা। জরুরি বিভাগে ভর্তি এক দুর্ঘটনায় আহত রোগীর মাধ্যমে চাঞ্চল্যকর এই ছবি প্রকাশ্যে এলো সোমবার।

Dhupguri: হাসপাতাল না পাতালঘর! মোবাইলের আলোয় রুদ্ধশ্বাস অপারেশন ডাক্তারের
এভাবেই চলে চিকিৎসা! নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 18, 2021 | 6:11 PM

ধূপগুড়ি: মোবাইলের ফ্লাশ লাইট জ্বেলে চলছে আহত রোগীর সেলাইয়ের কাজ থেকে ইনজেকশন দেওয়া। এমনই ভয়ঙ্কর ছবি ধরা পড়ল ধূপগুড়ি হাসপাতালে (Dhupguri Hospital)। আচমকা লোডশেডিং হলে নেই এমারজেন্সি পরিষেবার ব্যবস্থা। আধো আলোছায়ায় তখন মোবাইল ফোনের ফ্ল্যাশ দিয়ে রোগীকে দেখেন চিকিৎসকেরা। সেবা করেন নার্সরা। জরুরি বিভাগে ভর্তি এক দুর্ঘটনায় আহত রোগীর মাধ্যমে চাঞ্চল্যকর এই ছবি প্রকাশ্যে এলো সোমবার।

সোমবার। ধূপগুড়ি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে এক রোগীর শরীরের কাটাছেঁড়া অংশ সেলাইয়ের কাজ চালাচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা। আচমকাই অন্ধকার ছেয়ে গেল হাসপাতাল। অগত্যা রোগীর সঙ্গে থাকা তাঁর বন্ধুকে ইশারা করা হয় তাঁর মোবাইল ফোন বের করতে। তিনি মোবাইল বের করতে তাঁকে ইঙ্গিত করা হল মোবাইলের ফ্ল্যাশ জ্বালানোর জন্য। সেই আলোতেই রোগীর স্টিচ করলেন ডাক্তার। যা নিয়ে তৈরি হয়েছে বড় বিতর্ক। শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। বিরোধীদের কটাক্ষ, এমন ‘বিশাল’ স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্য দায়ী রাজ্য সরকার। সরকার বদল হলে স্বাস্থ্যব্যবস্থার বদল ঘটতো।

লোডশেডিং হলে হাসপাতালে নাকি এমারজেন্সি আলো জ্বালানোর ব্যবস্থা নেই। তাই মোবাইলে ফ্ল্যাশ জ্বালিয়েই এভাবে চলে দুর্ঘটনায় আহতদের সেলাই থেকে রোগীদের দেখভাল। এদিন যেমন এক আহত যুবকের ক্ষতস্থান সেলাই করার কাজ থেকে তাঁকে ইনজেকশন দেওয়া, এমন গুরুতর কাজ হল মোবাইলের আলো দিয়ে। অন্যান্য সময়ে লোডশেডিং হলে কখনও মোমের আলোয় কখনও বা মোবাইলে ফ্ল্যাশ লাইট জ্বালিয়ে ধূপগুড়ি হাসপাতালে এভাবেই চলে রোগীদের সেবার কাজ। অভিযোগ, রোগীর আত্মীয়দের।

সোমবার ধূপগুড়ির লালস্কুল এলাকায় পথ দুর্ঘটনায় আহত হন দুই যুবক। তাঁদের উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয় ধূপগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য। তবে চিকিৎসা করাতে আরও এক বিপদের সম্মুখীন হন আহতরা। আহত দু’জনের মধ্যে একজনের থুতনি ফেটে গিয়েছিল। তাঁর থুতনিতে চলছে সেলাই, তাও আবার মোবাইলের ফ্ল্যাশের আলো জ্বালিয়ে। কম আলোতে সেলাইয়ের মত কাজ করায় বিপদ বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে, দাবি আহত যুবকের পরিজনদের। তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্বাস্থ্য দফতরের বিরুদ্ধে।

এদিকে মোবাইলের ফ্লাশ লাইট জ্বালিয়ে চিকিৎসার ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল। হাসপাতালের বেহাল অবস্থার কথা সোশ্যাল মিডিয়া মারফত জানতে পেরে রাজ্য সরকারকেই এই দশার জন্য দুষলেন এলাকার কাউন্সিলর তথা ধূপগুড়ি পৌরসভা ভাইস চেয়ারম্যান কৃষ্ণদেব রায়। বলেন, “যেভাবে মোবাইলের ফ্লাশ লাইট জ্বালিয়ে সেলাইয়ের কাজ করা হচ্ছে, তাতে যে কোনও সময় বিপদ ঘটতে পারে।” তিনি অভিযোগ করেন, রোগী কল্যাণ সমিতির মিটিংয়ে সঠিকভাবে করা হয় না। অন্যথায় হাসপাতালে আলো সংক্রান্ত কোনও সমস্যা থাকলে সেটা স্বাস্থ্য আধিকারিকরা জানাতে পারতেন।

এই বিষয়ে ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক সুরজিৎ ঘোষের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাঁর ব্যাখ্যা, “হাসপাতালে লোডশেডিং হলে জেনারেটরের ব্যবস্থা রয়েছে। মাঝেমধ্যে লোডশেডিং হয়। তবে জেনারেটর আলোয় সব কাজ সম্পন্ন করা হয়। লোডশেডিং ও জেনারেটর চালু করার মাঝে সময়টুকুতে হয়তো মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে কাজ করা হয়েছে। হাসপাতালে পরিকাঠামোগত কোনও সমস্যা নেই।”

আরও পড়ুন: Khardah: ৪৪ বছর ধরে শাসক দলের প্রার্থী ‘বহিরাগত’! সাংগঠনিক দুর্বলতা, নাকি অন্য কিছু?