Bengali Subject in Malda College: বাংলা পড়ার আগ্রহ কি ক্রমেই কমছে? খোলাখুলি আলোচনায় অধ্যাপকরা
Malda: বাংলা বিভাগের অধ্যাপকের বিস্ফোরক দাবি, বিভিন্ন কলেজে বাংলা নিয়ে পড়ুয়ার সংখ্যা ক্রমশ তলানিতে নেমেছে। এমনিতেই গোটা রাজ্য জুড়েই ড্রপ আউটের পরিসংখ্যান উদ্বেগজনক।

মালদা: বাংলা পড়া ছেড়ে পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে যাচ্ছে বাংলার পড়ুয়ারা? বাংলা ও বাঙালি অস্মিতা নিয়ে যেখানে প্রচার তুঙ্গে, সেখানে এই বাংলাতেই বাংলা নিয়ে পড়ার ক্ষেত্রে ড্রপ আউটের সংখ্যা চমকে দেওয়ার মতো। বাংলা বিভাগে ভর্তি হয়েও মাঝপথে পড়া ছেড়ে পরিযায়ী শ্রমিক হয়ে অন্য রাজ্যে চলে যাচ্ছে ছাত্ররা। শুধু মাত্র রোজগারের তাগিদে।
বাংলা বিভাগের অধ্যাপকের বিস্ফোরক দাবি, বিভিন্ন কলেজে বাংলা নিয়ে পড়ুয়ার সংখ্যা ক্রমশ তলানিতে নেমেছে। এমনিতেই গোটা রাজ্য জুড়েই ড্রপ আউটের পরিসংখ্যান উদ্বেগজনক। তার মধ্যে বাংলা বিভাগের অবস্থা খুবই খারাপ। মালদা জেলার ক্ষেত্রে বিশেষ করে যেখানে এমন কেউ কেউ প্রথিতযশা ছিলেন যাঁদের বাংলা ও বাঙালি অস্মিতা নিয়ে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে। অথচ সেই মালদহ, মানিকচক, রতুয়া সহ বিভিন্ন ব্লকের প্রায় সব কলেজেই বাংলা বিভাগের ছাত্র ছাত্রী জুটছেই না। যাও বা জুটছে, প্রতি সেমিস্টারে তা কমতে কমতে তলানিতে এসে ঠেকছে।
সংশ্লিষ্ট অধ্যাপকের দাবি, ২০২১ সালে সাড়ে তিনশো পড়ুয়া ভর্তি হয় গৌড় কলেজের বাংলা বিভাগে। ২০২৪-২০২৫ এসে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মাত্র ৩২। ২০২৪ সালে ভর্তি হওয়া বাংলা বিভাগের পড়ুয়া প্রায় চারশো। যেখান মোট আসন ছিল ৪৫৬। ফাঁকা পড়ে থাকে বহু আসন। মাত্র ৬ মাস পরে প্রথম সেমিস্টারের পরেই ৫০ শতাংশ ছাত্র ছাত্রী ছেড়ে চলে যায়। এই চিত্র কাছাকাছি সব কলেজেই। গৌড় কলেজের বাংলা বিভাগের অধ্যাপকরা বলেন, “দেখা যাচ্ছে পড়ুয়ারা পাশ করছেন হয়ত, কিন্তু তারপর আর ভর্তি হচ্ছে না। কেউ প্রথম সেমিস্টারে ভর্তি হচ্ছেন ঠিকই কিন্তু এরপর দ্বিতীয় সেমে পঞ্চাশ শতাংশের কম পড়ুয়া পড়তে আসছেন।” তিনি আরও বলেন, “১৯১৯ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগ ছাড়াও আর বৃহৎ ভাবে বাংলা পড়ানোর জন্য একটি বিভাগ চালু হয়েছিল। নাম ‘মর্ডান ইন্ডিয়ান ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড লিটারেচার’। আজকে ২০২৫ সালে যখন বাঙালি অস্মিতা নিয়ে কথা হচ্ছে সেই সময় এই বাংলা নিয়ে পড়ার আগ্রহ আশাব্যঞ্জক নয়।”
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মালদা কলেজে ২০২১ সব বিষয় মিলিয়ে ভর্তি হয় ২,৫৭৮ জন। পরে ২০২৫-এর অন্তিম বর্ষে সেই সংখ্যা ১,৫১৩ জন। ড্রপ আউটের সংখ্যা ১০৬৫ জন। এই ছবি সব কলেজেই। গৌড় কলেজে সেই সংখ্যা এগারোশোর বেশি। অন্যান্য কলেজে ড্রপ আউট হাজার থেকে পনেরোশো। যার মধ্যে বাংলা বিভাগের দশা সব থেকে বেশি লজ্জাজনক। যা বাড়াচ্ছে উদ্বেগের।

