MLA Sabitri Mitra: ‘পঞ্চায়েতে অগাধ টাকা, ঢালাও চুরিও হয়’, বিস্ফোরক দাবি তৃণমূল বিধায়ক সাবিত্রী মিত্রের
Maldah: সাবিত্রী মিত্রের দাবি, ৮০ শতাংশ টাকাই চুরি হচ্ছে। বাকি ২০ শতাংশ টাকা হয়তো কাজে লাগছে বা তাও লাগছে না।
মালদহ: পঞ্চায়েতে অগাধ টাকা আসে। ঢালাও চুরিও হয়। দলীয় এক সভায় বিস্ফোরক দাবি করলেন মানিকচকের তৃণমূল (TMC) বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র (Sabitri Mitra)। শনিবার মালদহে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মচারি ফেডারেশনের পঞ্চায়েত নির্মাণ সহায়ক মালদহ জেলা ইউনিটের সাধারণ সভা ছিল। মালদহ শহরের জিএমসি ক্লাবঘরে এই অনুষ্ঠান হয়। সেখানেই তৃণমূল বিধায়ক পঞ্চায়েত প্রধানদের গাড়ি, বাড়ি-সহ সম্পত্তির বাড়বাড়ন্ত নিয়ে সরব হন। সাবিত্রী মিত্রের কথায়, রাজ্যে পঞ্চায়েতেগুলিতে (Gram Panchayet) দেদার চুরি হচ্ছে। প্রধানরা দু’ তিন বছরের মধ্যেই তিনতলা বাড়ি, দামি গাড়ি কিনে নিচ্ছেন। এমনকী সাবিত্রীর দাবি, কোথাও তদন্ত শুরু হলেই টাকা দিয়ে বা পঞ্চায়েত কর্মীকে সরিয়ে দিয়ে সমস্ত কিছু ধামাচাপা দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আগামী বছর রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট। প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে দলগুলি। এই অবস্থায় সাবিত্রী মিত্রের মতো বর্ষীয়ান নেত্রীর এমন তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য ঘিরে শোরগোল মালদহ জেলায়।
এদিন সাবিত্রী মিত্র বলেন, “৮০ শতাংশ গ্রাম পঞ্চায়েতই অধিক ক্ষমতা পায়। পঞ্চায়েত দফতরের ১০০ শতাংশ টাকার মধ্যে ৫০ শতাংশ টাকা গ্রামপঞ্চায়েত পায়। ৩০ শতাংশ টাকা পায় পঞ্চায়েত সমিতি, ২০ শতাংশ টাকা পায় জেলা পরিষদ। পঞ্চায়েতে অগাধ টাকা আসে, ঢালাও চুরিও হয়। আমরা ‘৯১ সাল থেকে বিধায়ক রয়েছি। অথচ যাঁরা এখন একটা পঞ্চায়েতের প্রধান হয়েছেন তাঁর বাড়ি পর্যন্ত ছিল না। এখন তিনতলা বাড়ি। আরও একটা বাড়ি বানালেন। কোথা থেকে বানায় আমি কিন্তু বুঝি। এই জায়গাগুলোয় রাশ ধরা দরকার।”
সাবিত্রী মিত্রের দাবি, ৮০ শতাংশ টাকাই চুরি হচ্ছে। বাকি ২০ শতাংশ টাকা হয়তো কাজে লাগছে বা তাও লাগছে না। বিধায়কের কথায়, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে কোনও কাজ না করেই বিল করে টাকা তোলা হচ্ছে। সাবিত্রী মিত্র পঞ্চায়েত নির্মাণ সহায়কদের বার্তা দেন, “ষোলো আনাই খাব। এক আনাও ছাড়ব না যারা মনে করে, এই ধরনের প্রধানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন আমরা সমর্থন করব। এতে দল এগোবে। মানিকচকেই দেখেছি কাজ হয়নি, বিল এসে গিয়েছে। আমি বলেছি, একটা বিলও ছাড়া হবে না। আগে কাজ হবে, তারপর। এতে সরকারের নাম বদনাম হয়। সরকারের টাকা তছরূপ হয়।” বিস্ফোরক সাবিত্রী বলেন, “মাঝেমধ্যে আমার মনে হয় পঞ্চায়েতিরাজটাই উঠে যাওয়া উচিৎ। রাজীব গান্ধি এনেছিলেন গরীব মানুষদের কাজের জন্য। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে না এইভাবে কাজগুলো করা যায়।”
এ প্রসঙ্গে মালদহ জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র শুভময় বসু বলেন, “এটা দলীয় অভ্যন্তরীণ বৈঠকে তিনি বলেছেন। তবে সাবিত্রী মিত্র নিজে প্রশাসনে ছিলেন, মন্ত্রী ছিলেন। দীর্ঘদিনের বিধায়ক তিনি। ফলে প্রশাসন চালানোর অভিজ্ঞতা তাঁর রয়েছে। এ বিষয়ে তিনি যথেষ্ট ওয়াকিবহাল। তাই উনি যখন এ ধরনের অভিযোগ করছেন তার নিশ্চয়ই কোনও সারবত্তা আছে। তবে যেহেতু দলীয় অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে এ কথা বলেছেন। তাঁর বক্তব্য দলগতভাবে খতিয়ে দেখা হবে।”