শিলিগুড়ি: মালদায় ফের শিশুমৃত্যু। মানিকচকে জ্বরে (Unknown Fever) আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু ৬ মাসের শিশুর। এই নিয়ে মালদায় জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল মোট ৭ শিশুর। মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বেডের অভাব। এক-একটি বেডে তিন জন করে শিশুর চিকিত্সা চলছে। এই নিয়ে চার জেলায় মোট ১৩ শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
তবে সূত্র মারফত জানা যায়, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই আরও এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। তবে হাসপাতালের তরফে তা এখনও স্বীকার করা হয়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আরও ৮টি শিশুর অবস্থা আশঙ্কাজনক। জানা যাচ্ছে, জ্বরের পাশাপাশি তীব্র শ্বাসকষ্ট দেখা দিচ্ছে শিশুদের মধ্যে।
মালদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে শিশুদের জন্য বেড রয়েছে ১২০টি। অথচ গড়ে দৈনিক ৫০-৬০টি শিশু ভর্তি হচ্ছে। ফলে একই বেডে একাধিক শিশুর চিকিত্সা চলছে। বেশিরভাগ শিশুই নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত বলে চিকিত্সকরা বলছেন। আর কিছুক্ষেত্রে দেখা দিচ্ছে এমআইএস-এর লক্ষ্মণ। এক্ষেত্রে যেটা সবচেয়ে বেশি জরুরি, সেটা হল তাদেরকে নতুন করে করোনা টেস্ট করা হচ্ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পাঁচ বছরের বয়সের কম শিশুদের মধ্যে এই লক্ষ্মণ দেখা যাচ্ছে। নমুনা পরীক্ষার মাধ্যমে স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য, এটা আরএস ভাইরাসের সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ হয়েছে। আরএস ভাইরাসের দাপট সারা বিশ্বে জুলাইয়ে দেখা গিয়েছিল। সময়ের অনেক আগেই এই ভাইরাস থাবা বসিয়েছে। শীতকালে যে ভাইরাস হানার কথা, তা দুমাস আগেই অগাস্ট-সেপ্টেম্বরেই দেখা গিয়েছে।
আরএস ভাইরাস কী?
শ্বাসযন্ত্রের সিনসাইটাল ভাইরাস। কাশি বা হাঁচির পরে ড্রপলেটের মাধ্যমে ছড়ায়। সাধারণত শীতকালে এই ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়ে। অত্যন্ত ছোঁয়াচে এই আরএস ভাইরাস। শিশুরাই সংক্রমিত হয় বেশি।
এদিকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে শিশুমৃত্যুর ঘটনায় মুখে কুলুপ এঁটেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আরব মুণ্ডা নামে দুই মাসের ওই শিশুর বাড়ি বানারহাটে। জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন ছিল সে। মেডিক্যাল কর্তাদের দাবি, সেপসিসের জেরেই জ্বর এসেছিল শিশুটির। আর তার জেরেই মৃত্যু।
উত্তরবঙ্গ জুড়ে জ্বর বাড়তেই বিভিন্ন জেলা থেকে নমুনা আসছে শিলিগুড়িতে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের ভিআরডিএল এ। কিন্তু সেখানে আরএস ভাইরাস পরীক্ষা করার ব্যবস্থা নেই। ফলে পরিস্থিতি সামলাতে বাকি পরীক্ষার পাশাপাশি এই ভাইরাস চিহ্নিতকরণ পরীক্ষা শুরু কররে রাজ্যের অনুমোদন চেয়েছে ভিআরডিএল।
এদিকে, বৃহস্পতিবারই শিলিগুড়িতে জেলা হাসপাতালে ডেঙ্গুর সংক্রমণ নিয়ে ভর্তি হল বেশ কয়েকটি শিশু। এই মুহুর্তে জেলা হাসপাতালে ৮৪ জন শিশুর চিকিৎসা চলছে। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে ৫ শিশু।
শিলিগুড়ি-সহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বাচ্চাদের ভিড় বাড়ছে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। গুরুতর অসুস্থ না হলে কাউকেই ভর্তি নেওয়া হবে না বলে মৌখিক ভাবে জানিয়ে দিয়েছে মেডিক্যাল কলেজ কর্তৃপক্ষ। শিশুদের প্রত্যেকটি উপসর্গ নিয়ে চিকিত্সকরা সচেতন রয়েছেন বলে জানিয়েছেন। সরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি নার্সিংহোম গুলিতেও ভিড় উপচে পড়ছে।
আরও পড়ুন: RS Virus: কোভিডের মতোই নতুন ভাইরাস বাংলায়, শিশুমৃত্যু নিয়ে কী বলছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা