JibanKrishna Saha: ৮০০ টাকা খরচ করে জেসিবি, ট্রাক্টর-শ্রমিকের জন্যও খরচা, জীবনকৃষ্ণের মোবাইল খুঁজতে হন্যে সিবিআই
Murshidabad: জীবনকৃষ্ণ শনিবার আচমকাই সিবিআই আধিকারিকদের কাছ থেকে তাঁর দু'টি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে পাশের পুকুরে ফেলে দেন
মুর্শিদাবাদ: পাকচক্রে এখন পাঁক ঘাটতে হচ্ছে সিবিআইকেও (CBI)। বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার (Jibankrishna Saha) বাড়িতে তিন রাত হতে চলেছে সিবিআইয়ের। শুক্রবার অর্থাৎ ১৪ এপ্রিল বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ তাঁর আন্দির বাড়িতে ঢুকেছিল সিবিআইয়ের একটি দল। রবিবার রাতেও সেই দল বিধায়কের বাড়িতে। দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ তো চলছেই। তবে এরই ফাঁকে চলছে পাঁক ঘাটাও। কারণ, জীবনকৃষ্ণ শনিবার আচমকাই সিবিআই আধিকারিকদের কাছ থেকে তাঁর দু’টি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে পাশের পুকুরে ফেলে দেন। পাঁকে ভরা সেই পুকুর থেকে মোবাইল তুলতে গিয়ে ৪০ ডিগ্রির গরমে নাজেহাল সিবিআই। পাঁকে লোক নামিয়ে, শ্রমিক এনে, মাটি কাটার মেশিন আনিয়ে, ট্রলির ব্যবস্থা করে এখনও অবধি একটি মোবাইল পেয়েছেন। তবে আরেকখানা ‘চাবিকাঠি’ এখনও বেপাত্তা।
রবিবার সন্ধ্যা অবধি কাজ করেছেন শ্রমিকরা। পুকুর ছেঁচে, জল তুলে, পাঁক ঘেটে, শ্রমিক এনে অনেক কিছুই করেছে। কারণ, সে মোবাইল না পেলে জটিলতা বাড়বে। সিবিআইয়ের হেফাজতে থাকা মোবাইল কী করে উধাও হয়ে গেল, তা নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠবে, তেমনই প্রমাণ লোপাটের চেষ্টার অভিযোগ উঠবে বিধায়কের নামেও। রাতের অন্ধকারে পুকুরপানায় নেমে কাজ করা ঝুঁকির। সোমবার ভোরের আলো ফুটলে আবার শুরু হবে কাজ।
মোবাইল ছুঁড়ে ফেলে প্রমাণ লোপাটের অভিযোগে যতটা বিপাকে জীবনকৃষ্ণ, তার থেকেও বিপাকে তল্লাশিতে যাওয়া সিবিআই আধিকারিকরা। শুক্রবার দুপুর থেকে যে তল্লাশি শুরু হয়েছে, রবিবার সন্ধ্যা গড়ালেও সেই তল্লাশি শেষ হল না। সিবিআই আধিকারিকরা বিপাকে কারণ, তাদের বাজেয়াপ্ত করা দু’টি মোবাইল হঠাৎই বিধায়ক পাঁচিল টপকে পাশের পানাপুকুরে ফেলে দেন।
সূত্রের খবর, এদিকে সেই মোবাইল দু’টি আবার বাজেয়াপ্ত বলে সিজার লিস্টে উল্লেখও করে দিয়েছেন গোয়েন্দারা। নিয়ম অনুযায়ী সিল করে দেওয়া হয়েছে মোবাইল দু’টো। সেই অবস্থায় সিবিআই হেফাজত থেকে মোবাইল খোয়া যাওয়ায় বিপাকে তদন্তকারীরা।
রবিবার সকালে স্থানীয় শ্রমিকদের দিয়ে পুকুরে মোবাইলের খোঁজ শুরু হয়। সাড়ে সাতটার মধ্যে হদিশ মেলে একটি মোবাইলের। একদম সিল করা অবস্থায়। কিন্তু তারপর দিনভর তল্লাশি চালিয়েও হদিশ মেলেনি দ্বিতীয় মোবাইলের। সূত্রের খবর জিজ্ঞাসাবাদে বিধায়ক স্বীকার করেছেন, একটি মোবাইলের সিল খুলে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছিলেন।
ঘণ্টা প্রতি ৮০০ টাকা খরচ করে এদিন জেসিবি মেশিন আনা হয়। সঙ্গে ২টি ট্রাক্টর ভাড়া করে সিবিআই। সাড়ে ৩টে থেকে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত পাক তুলে ফেলা হয় পাশের মাঠে। সেখানে ৭ জন শ্রমিক দিয়ে পাক থেকে মোবাইলের খোঁজ চলে। কিন্তু দিনের আলো ফুরোতেই তল্লাশিতে ইতি টানতে হয়। বিধায়কের বাড়িতেই রাতে থাকবে ৯-১০ জন সিবিআই আধিকারিকের দল।