Santipur Kali Puja 2025: নিরঞ্জনের আগে পান্তা ভাত,খয়রা মাছ, মা মহিষাখাগী ইতিহাস জানেন?
মা নাকি একসময় বলেছিলেন, 'আমার কুঁড়ে ঘরে থাকতে আর ভাল লাগছে না, তাড়াতাড়ি মন্দির তৈরি করে দে...' আর সেই স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র। তারপর এক ফোঁটাও বিলম্ব করেননি তিনি। ততক্ষণাৎ তিনি মন্দির তৈরি করার কাজ শুরু করেন।

নদিয়া: প্রতিষ্ঠা করেছিলেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র। দেবীর কাছে বলি দেওয়া হয় ১০৮টি মহিষ। লক্ষ-লক্ষ ভক্তের কাঁধে চেপে মা যান নিরঞ্জনে। আজও সেই মহিষ খাগির পুজো হয় শান্তিপুরে ধুমধামের সঙ্গে।
মা নাকি একসময় বলেছিলেন, ‘আমার কুঁড়ে ঘরে থাকতে আর ভাল লাগছে না, তাড়াতাড়ি মন্দির তৈরি করে দে…’ আর সেই স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন রাজা কৃষ্ণচন্দ্র। তারপর এক ফোঁটাও বিলম্ব করেননি তিনি। ততক্ষণাৎ তিনি মন্দির তৈরি করার কাজ শুরু করেন।
এরপর থেকেই ১৫ ফুট উচ্চতার হাড়িকাটে ১০৮ টি মহিষ বলি দিয়ে শুরু হয় জাগ্রত দেবী মহিষখাগীর বিশেষ পুজো অর্চনা। উদ্যোক্তাদের দাবি, শান্তিপুর শহরের প্রায় ৪৫০ বছরের পুরনো এই মহিষখাগীর পুজো। শোনা যায়, এক তান্ত্রিকের হাতে পুজোর সূচনা হয় ৷ পরবর্তীতে চট্টোপাধ্যায়ের বংশের কাঁধে পুজোর দায়িত্বভার পড়ে ৷ কিন্তু দেবীর মন্দির না-থাকায় স্বপ্নাদেশে মন্দির নির্মাণ করেন স্বয়ং নদিয়ার মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র। বর্তমানে স্থানীয় বারোয়ারির তত্ত্বাবধানেই হয়ে আসছে এই জাগ্রত কালী মায়ের পুজো।প্রথমদিকে,মন্দিরটি ছিল একটি কুঁড়েঘরের আদলে। আগের মন্দিরটি বহু পুরনো হয়ে যাওয়ায় এখন মন্দিরটি নতুন করে নির্মাণ হয় এলাকাবাসীর সহযোগিতায়।
বাঙালি বিয়ের রীতি অনুযায়ী পুজো করা হয় মহিষখাগী কালীকে। মাকে প্রথমে পাটে তোলার সময় থাকে একাধিক নিয়মরীতি। পাটে তোলার পরে মন্দির প্রাঙ্গন পরিষ্কার করে সেদিন ভোররাতে হয় দধিমঙ্গল। তারপরে অমাবস্যা শুরু হলে বিয়ের রীতি মেনেই পুজো করা হয় দেবীকে। পরের দিন পালন করা হয় বাসি বিয়ের রীতি। বাসি বিয়ের রীতি অনুযায়ী পূজিতা হন মা। পুজো সম্পন্ন হওয়ার পর কাঁধে করে মা’কে নিয়ে যাওয়া হয় নিরঞ্জনের জন্যে।
পুজো উদ্যোক্তাদের কাছে জানা যায়,বহু বছর আগে এই পুজোয় উৎসর্গ করা হত মহিষকে। পরবর্তীতে পাঁঠাবলি। তবে বর্তমানে মহিষখাগী কালী মায়ের পুজোতে কোনওরকম বলি উৎসর্গ করা হয় না। তবে নিরঞ্জনের আগে মাতা মহিষখাগীকে দেওয়া হয় পান্তা ভাত,খয়রা মাছ।
শান্তিপুরবাসীর কাছে দূর-দূরান্তের মানুষ মেতে ওঠেন এই পুজোকে ঘিরে। দেবীর নিরঞ্জনের ক্ষেত্রে রয়েছে দেবী ও ভক্তদের মেলবন্ধন ৷ ভক্তদের কাঁধে করেই নিরঞ্জন যাত্রায় নিয়ে যাওয়া হয় দেবীকে।
