১০ ঘণ্টা অগ্নিকুণ্ডের ভিতর, ক্ষীণ বেঁচে থাকার আশা! গেঞ্জি কারখানার বাইরে এখন স্বজনহারাদের হাহাকার
প্রায় দশ ঘণ্টা হতে চলল, এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি নিউ বারাকপুরের গেঞ্জি কারখানার আগুনে (New Barrackpur Fire Case)। ভিতরে আটকে পড়া তিন কর্মীকে এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
উত্তর ২৪ পরগনা: দু’জন কর্মী, এক জন অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার। বুধবার রাতে তাঁরাই কাজ করছিলেন ‘অভিশপ্ত’ সেই গেঞ্জি কারখানায়। আর তাঁদের নামই এখন পুলিশ-দমকলকর্মীদের নিখোঁজের তালিকায়! প্রায় দশ ঘণ্টা হতে চলল, এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি নিউ বারাকপুরের গেঞ্জি কারখানার আগুনে (New Barrackpur Fire Case)। ভিতরে আটকে পড়া তিন কর্মীকে এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। ওই কর্মীরা যদি ভিতরেই আটকে থাকেন, তাহলে তাঁদের বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই বলে জানাচ্ছেন দমকলকর্মীরা। এখনও ওই কারখানার ভিতরে ঢুকতে পারেননি তাঁরা। তবে সময় যত এগোচ্ছে, আশা ক্ষীণ হচ্ছে নিখোঁজ কর্মীদের পরিবারের সদস্যদের।
খোঁজ নেই হরিণঘাটার বাসিন্দা অমিত সেনের। দীর্ঘদিন ধরেই ওই কারখানাতে কাজ করেন তিনি। তাঁর সঙ্গেই কাজ করতেন এলাকারই বাসিন্দা তন্ময় ঘোষ, তাঁর খোঁজ নেই। এদিকে, চাকদার বাসিন্দা সুব্রত ঘোষ হলেন এই কারখানার অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার। তিনিও বুধবার রাতে কারখানাতেই ছিলেন বলে খবর। কারখানায় আগুন লাগার পর থেকে তাঁদের আর খোঁজ মেলেনি। জতুগৃহের মধ্যেই আটকে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে তাঁদের।
ইতিমধ্যেই তাঁদের পরিবারের সদস্যরা কারখানার বাইরে ভিড় জমাতে শুরু করেছেন। বাইরে এখন শুধু হাহাকার। কোনওমতে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার সম্ভব হলেও, বেলা ১ টা পর্যন্ত পাওয়া খবর অনুযায়ী, কারখানার ভিতরে ঢুকতে পারেননি দমকলকর্মীরা। আগুন পুরোপুরি না নেভা পর্যন্ত তাঁদের উদ্ধার করাও সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন দমকলকর্মীরা।
বৃহস্পতিবার ভোর রাতেই নিউ ব্যারাকপুরের তাল বান্দার ওই গেঞ্জির কারখানায় আগুন লাগে। একটি তিনতলা বাড়ির ভিতরে ওই কারখানাটি। আবার ওই বাড়িরই নীচে ওষুধের গুদাম ও রঙের কারখানা রয়েছে। তাতেও আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। দমকল কর্মীরা বলছেন, গেঞ্জি কারখানায় বেশ কয়েকটি গ্যাস সিলিন্ডার মজুত ছিল। পাশাপাশি ওষুধের গুদামে রাখা ছিল প্রচুর পরিমাণ স্যানিটাইজার। কারখানায় প্রচুর পেট্রোল মজুত ছিল বলেও খবর। ফলে আগুন বিধ্বংসী চেহারা নিয়েছে।
আরও পড়ুন: পাতে কেন নেই মাছ-মাংস? ইয়াসে বিপর্যস্ত বাসন্তীর ত্রাণশিবিরে ভিটেহারাদের সংঘর্ষে কাটল কান!
স্থানীয়রা জানাচ্ছেন, কারখানার ভিতর থেকে বিকট শব্দ এসেছে বেশ কয়েকবার। অনুমান করা হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডারগুলিই ফেটেছে। ঘটনাস্থলে যান দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু। ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। ঘটনাস্থলে রয়েছেন বারাকপুর পুলিশ কমিশনার মনোজ ভর্মা।