ইয়াস আতঙ্ক কাটতেই ফের টর্নেডো, মিনিট তিনেকেই পরপর বাড়ি ভেঙে পড়ল অশোকনগরে
গত কাল ইয়াসের ল্যান্ডফলের দিন কলকাতায় টর্নেডোর আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
অশোকনগর: সাইক্লোন ইয়াসের (Cyclone Yaas) ঠিক আগের দিনই হালিশহরের আকাশে দেখা গিয়েছিল কালো মেঘের ঘূর্ণি। নিমেষেই তছনছ হয়ে গিয়েছিল সব কিছু। এবার ইয়াস পেরিয়ে যেতে আবার টর্নেডোর (Tornado) হানা রাজ্যে। এবার উত্তর ২৪ পরগনা। অশোকনগরে মাত্র ৩-৪ মিনিটের ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছে বাড়ি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই বহু টাকার ক্ষতি হয়ে গিয়েছে এলাকায়। ভেঙে পড়েছে অন্তত ১৭টি বাড়ি, আহত হয়েছেন দু’জন।
গত কাল ইয়াসের ল্যান্ডফল হয়েছে ওড়িশা উপকূলে। তার প্রভাবে বাংলায় বেশ কিছু জায়গায় প্লাবন দেখা দিলেও বুধবার ঝড়ের দাপট তেমন দেখা যায়নি। ইতিমধ্যেই সেই সাইক্লোন বাংলা পেরিয়ে খাড়খণ্ডে পৌঁছেছে। আজ, সকালে বৃষ্টির ফাঁকে ফাঁকে রোদও দেখা যাচ্ছিল এলাকায়। কিন্তু, বৃহস্পতিবার দুপুরে আচমকাই আতঙ্কের ছবি। উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে কালিকাপুর ও খ্রিস্টান পাড়ার বাসিন্দারা দেখেন ধেয়ে আসছে কালো মেঘের কুণ্ডলী। কিছু সামলে ওঠার আগে ভেঙে পড়ে অনেকগুলি বাড়ির ছাদ। সব জিনিস তছনছ হয়ে যায়। আহত হন দু’জন। তাঁদের আপাতত স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন ঝড়ের দাপট ছিল ৩-৪ মিনিট। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ দিন সকালে হঠাৎই তাঁরা একটা কালো মেঘ দেখতে পান। কিছু বুঝে উঠার আগেই দুটি গ্রামের ১৭ টি বাড়ি লন্ডভন্ড করে হয়ে যায়। গত মঙ্গলবার বিকেলে এমনই দৃশ্য দেখা গিয়েছিল হুগলির হালিশহরে। এমনকি গত কাল, কলকাতাতেও টর্নেডো হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমনন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতায় এমন ঝড়ের আশঙ্কা করে সাধারণ মানুষকে বাড়ি থেকে বেরতে নিষেধ করেছিলেন তিনি।
আরও পড়ুন: গঙ্গার জল বাড়বে ১৮ ফুট উচ্চতায়, ভাসবে কলকাতা! বিকাল ৪টে পর্যন্ত তিলোত্তমার জন্য বিপর্যয়ের সতর্কতা
আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, খুব দ্রুত এই টর্নেডো তৈরি হয়। ফলে, আগে থেকে পূর্বাভাস দেওয়া অনেক সময় সম্ভব হয় না। বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে থাকে এক বিশেষ সাকিং মেকানিজম। সেটার কারণেই টর্নেডো সামনে যা পায় সেটাই উড়িয়ে নিয়ে যায়। এলাকায় আর্দ্রতা যত বেশি থাকে, ততই শক্তিশালী হয় এই ঝড়। সাইক্লোনের আগে কিংবা পরে এই ধরনের ঝড় হতে পারে বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, সাইক্লোন যখন তৈরি হয় তখন অনেক সময় ওপরের বায়ুস্তরে হাওয়ার বেগ বৃদ্ধি পায়, অথচ নীচের দিকে তখনও হাওয়ার বেগ কম থাকে। দুই বায়ুস্তরের মধ্যে এই ফারাক তৈরি হলেই ঘূর্ণির আকার ধারণ করে তৈরি হয় টর্নেডো।