আগের রাতে ঠিক কী ঘটেছিল নিউ বারাকপুরের সেই গেঞ্জি কারখানায়? কী থেকে লাগে আগুন? ৩০ ঘণ্টা পরও যা অনিয়ন্ত্রিত!
প্রায় ২৮ ঘণ্টা পেরোতে চলেছে। এখনও নিউ বারাকপুরের (New Barrackpur Fire) গেঞ্জি কারখানার আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নয়। দমকলের ছ'টি ইঞ্জিন নিরন্তর কাজ করে চলেছে।
নিউ বারাকপুর: প্রায় ২৮ ঘণ্টা পেরোতে চলেছে। এখনও নিউ বারাকপুরের (New Barrackpur Fire) গেঞ্জি কারখানার আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নয়। দমকলের ছ’টি ইঞ্জিন নিরন্তর কাজ করে চলেছে। কারখানার নিখোঁজ চার শ্রমিকেরও এখনও হদিশ নেই। আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এলে দমকলকর্মীরা কারখানার ভিতরে গিয়ে শ্রমিকদের খোঁজ করবেন বলে সূত্রের খবর।
প্রাথমিকভাবে জানা যাচ্ছে, রাতে কর্মীরা খাওয়াদাওয়া সেরে ভিতরেই শুয়ে গিয়েছিলেন। কারখানার এক পাশে প্রচুর গ্যাস সিলিন্ডার মজুত করা ছিল। বৃষ্টিভেজা ভোররাত গ্যাস সিলিন্ডার কোনওভাবে ফাটতে শুরু করে। তা থেকেই আগুন লাগে বলে প্রাথমিক অনুমান। পাশাপাশি ওষুধের দোকানে ছিল প্রচুর পরিমাণ স্যানিটাইজার। তাতে আগুন আরও ভয়ঙ্কর চেহারা নেয়। এমনকি মজুত ছিল পেট্রোলও। তবে কীভাবে বেআইনিভাবে এসব মজুত ছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
আগুন নেভানোর চেষ্টা এখনও চালিয়ে যাচ্ছেন দমকলকর্মীরা। কাছাকাছি রয়েছে জলাশয়। সেখান থেকেই জল এনে চলছে শেষ প্রচেষ্টা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত রয়েছেন উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। প্রচুর পরিমাণে দাহ্য পদার্থ মজুত থাকায় আগুন নেভাতে মারাত্মক বেগ পেতে হচ্ছে দমকলকর্মীদের।
এদিকে, আটকে পড়া কর্মীদের পরিবারের সদস্যরা ঠাঁয় কারখানার বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছেন। তবে আশা তাঁদের ক্ষীণ। চরম পরিণতির আশঙ্কায় তাঁরাও মনকে বুঝ দিতে শুরু করেছেন। ভিতরে আটকে পড়া শ্রমিকদের বেঁচে আশা ক্ষীণ। দু’জন কর্মী, এক জন অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার। বুধবার রাতে তাঁরাই কাজ করছিলেন ‘অভিশপ্ত’ সেই গেঞ্জি কারখানায়। আর তাঁদের নামই এখন পুলিশ-দমকলকর্মীদের নিখোঁজের তালিকায়!
খোঁজ নেই হরিণঘাটার বাসিন্দা অমিত সেনের। দীর্ঘদিন ধরেই ওই কারখানাতে কাজ করেন তিনি। তাঁর সঙ্গেই কাজ করতেন এলাকারই বাসিন্দা তন্ময় ঘোষ, তাঁর খোঁজ নেই। এদিকে, চাকদার বাসিন্দা সুব্রত ঘোষ হলেন এই কারখানার অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার। তিনিও বুধবার রাতে কারখানাতেই ছিলেন বলে খবর। কারখানায় আগুন লাগার পর থেকে তাঁদের আর খোঁজ মেলেনি।
বৃহস্পতিবার ভোর রাতেই নিউ ব্যারাকপুরের তাল বান্দার ওই গেঞ্জির কারখানায় আগুন লাগে। একটি তিনতলা বাড়ির ভিতরে ওই কারখানাটি। আবার ওই বাড়িরই নীচে ওষুধের গুদাম ও রঙের কারখানা রয়েছে। তাতেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
আরও পড়ুন: ইয়াসের ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখতে আজ বাংলা-ওড়িশায় প্রধানমন্ত্রী, কুলাইকুণ্ডায় মমতা-মোদী বৈঠক
আগুন লাগার সঠিক কারণ খুঁজে বার করতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন দমকলমন্ত্রী। বিষয়টির ওপর নজর রেখেছেন বারাকপুর পুলিশ কমিশনার মনোজ ভর্মা।