লকডাউনে বাড়িতে ছিলেন, আগের দিনই ম্যানেজার কাজে ডাকেন! তারপরই গেঞ্জি কারখানার অভিশপ্ত সেই রাত
অশোকনগরের (Ashoknagar) ছোট্ট গলির ভিতর টালির চালের এক চিলতে বাড়িতে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ছাপ স্পষ্ট। বৃহস্পতিবারই ক্ষণিকের টর্নেডো ধ্বংসলীলা চালিয়েছে সেখানে। কিন্তু এই বাড়ির বিপর্যয় যে আরও বড়! ঘরের ছেলেই যে ৩০ ঘণ্টা আটকে রয়েছে নিউ বারাকপুরের (New Barrackpur) সেই অগ্নিকুণ্ড কারখানায়।
অশোকনগর: অশোকনগরের (Ashoknagar) ছোট্ট গলির ভিতর টালির চালের এক চিলতে বাড়িতে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের ছাপ স্পষ্ট। বৃহস্পতিবারই ক্ষণিকের টর্নেডো ধ্বংসলীলা চালিয়েছে সেখানে। কিন্তু এই বাড়ির বিপর্যয় যে আরও বড়! ঘরের ছেলেই যে ৩০ ঘণ্টা আটকে রয়েছে নিউ বারাকপুরের (New Barrackpur) সেই অগ্নিকুণ্ড কারখানায়। বছর পঁচিশের স্বরূপ ঘোষের মায়ের মনের ঝড় আরও বেশি উথাল পাতাল।
বৃহস্পতিবার রাত ১১টা নাগাদ মা শেষবার ফোন করেছিলেন তাঁর ছেলে স্বরূপকে। সেই কথা ক্যামেরার সামনে বলতে গিয়েই হাউ হাউ করে কেঁদে ফেললেন তিনি। ছেলে বলেছিলেন, “মা আমার খাওয়া হয়ে গিয়েছে, ঘুমোতে যাব, খুব ক্লান্ত। তুমিও খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ো।” ব্যস, সেটাই শেষ কথা। তারপর আর স্বরূপের সঙ্গে কোনও ভাবে যোগাযোগ করতে পারেনি পরিবার।
বৃহস্পতিবার ভোররাতে আগুন লাগে নিউ বারাকপুরের অভিশপ্ত সেই গেঞ্জি কারখানায়। সেখানেই তাঁর আটকে পড়ার সম্ভাবনা প্রবল। এখনও খোঁজ মেলেনি তাঁর। স্বরূপের মা জানিয়েছেন, বেশ কয়েক বছর ধরেই ছেলে সেখানে কাজ করতেন। নিত্য যাতায়াত করতেন তিনি। তবে লকডাউনে বাড়ি চলে এসেছিলেন। দুূ’দিন আগেই কারখানার ম্যানেজার ফোন করে তাঁকে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে থেকেই কাজ করছিলেন স্বরূপ। কারখানায় কাজ করছিলেন আরও বেশ কয়েকজন কর্মী।
ঘটনার রাতে স্বরূপের সঙ্গে ছিলেন আরও বেশ কয়েক জন। ভোর রাতে গেঞ্জি কারখানায় আগুন লাগার পর তাঁদের অনেকেই বেরিয়ে আসতে পেরেছিলেন। কিন্তু ভিতরে তিন থেকে চার জনের আটকে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাঁদের মধ্যে স্বরূপ একজন। খোঁজ নেই হরিণঘাটার বাসিন্দা অমিত সেনের। দীর্ঘদিন ধরেই ওই কারখানাতে কাজ করেন তিনি। তাঁর সঙ্গেই কাজ করতেন এলাকারই বাসিন্দা তন্ময় ঘোষ, তাঁর খোঁজ নেই। এদিকে, চাকদার বাসিন্দা সুব্রত ঘোষ হলেন এই কারখানার অ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার। তাঁরও খোঁজ নেই। আশার আলো ক্ষীণ হয়ে আসছে। ৩০ ঘণ্টা পরেও সম্ভব হয়নি আগুন নেভানো।