Swastha Sathi: পরিষেবা নিতে গিয়ে নাজেহাল! স্বাস্থ্যসাথীর ভবিষ্যৎ কী? ক্ষোভের পাহাড় জমছে আমজনতার মনে
Private Health Care Facility: সাধারণ মানুষদের অনেকেই বলছেন, নার্সিং হোম প্রথমেও ফেরাচ্ছিল। কিন্তু এখন নেতাদের কথাতেও কাজ হচ্ছে না। কারণ, নার্সিং হোমের টাকা বকেয়া পড়ে গিয়েছে। আমরা সাধারণ মানুষ সেই সময় স্বাস্থ্য সাথী কার্ড পেয়ে আনন্দিত হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, বিনামূল্যে চিকিৎসা পাব। কিন্তু এখন দেখছি, আমাদের নাজেহাল হতে হচ্ছে।
বারাসত ও মালদা : সঙ্গে স্বাস্থ্যসাথী কার্ড আছে? ভাবছেন হাসপাতালে, নার্সিং হোমে গেলে চিকিৎসা পাবেন? এমনটাই হওয়ার কথা বটে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে এর মধ্যে তৈরি হয়েছে এক জটিলতা। রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের সাথী হতে নিমরাজি রাজ্যের বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলি। এই সংক্রান্ত প্রতিবেদন TV9 বাংলা শুক্রবারই প্রকাশ করেছিল। রীতিমতো স্বাস্থ্য কর্তাদের চিঠি দিয়ে আপত্তির কথা জানানো হয়েছিল। এরপরই রাজ্যের স্বাস্থ্য সাথী প্রকল্পের বাস্তর চিত্র কেমন তাঁর খোঁজখবর শুরু করে TV9 বাংলা। খোঁজখবর চালাতেই একাধিক জেলা থেকে উঠে এল দুর্ভোগ, দুর্গতির এক ভয়ঙ্কর ছবি।
কলকাতা সংলগ্ন উত্তর ২৪ পরগনা জেলায় ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে আমজনতাকে। স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড নিয়ে সাধারণ মানুষজন বিভিন্ন নার্সিং হোমে যাচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে অনেককেই ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। শুরুতেই বলে দেওয়া হচ্ছে বেড নেই। পরবর্তী সময়ে স্বাস্থ্য সাথীর কার্ড নিয়ে তাঁরা যখন বিভিন্ন নেতা-নেত্রীদের কাছে যাচ্ছেন, তাঁদের হস্তক্ষেপে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া যাচ্ছিল। কিন্তু সমস্যা অন্য জায়গায়। যে প্যাকেজ বা যে টাকা স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের মাধ্যমে চিকিৎসা করার জন্য বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলি পেয়ে থাকে, তা অত্যন্ত কম বলে মনে করছে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষগুলির একাংশ এবং সেই কারণেই অনেক ক্ষেত্রেই তাঁরা ভর্তি নিতে রাজি হচ্ছেন না। আর এই সবের মধ্যে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
উদাহারণ হিসেবে ধরা যেতে পারে, একটি গলব্লাডার অপারেশনের জন্য যে পরিমাণ টাকা একটি এ গ্রেডের হাসপাতালের ব্যয় করা হয়, তার এক তৃতীয়াংশ টাকা তাঁরা টিডিএস কেটে পাচ্ছেন। অর্থাৎ, যদি ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়, সেক্ষেত্রে পাওয়া যাচ্ছে ১৮-১৯ হাজার টাকা। আর এতেই আপত্তি বেসরকারি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানগুলির। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষগুলির একাংশ মনে করছে, যাঁরা ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কার, বা যাঁরা সামনে থেকে কাজ করেন, তাঁদের সঙ্গে কথা না বলেই এই রেট চার্ট তৈরি করা হয়েছে। ফলে সব মিলিয়ে, একদিকে যেমন স্বাস্থ্যসাথীর কার্ড নিয়ে রোগীর পরিবারের লোকেরা হয়রানির শিকার হচ্ছেন, অন্যদিকে নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষগুলিরও অভিযোগ, তাঁরা নির্দিষ্ট টাকা পাচ্ছেন না। অন্যদিকে যে টাকা দেওয়া হচ্ছে সেটা অনেক কম।
সাধারণ মানুষদের অনেকেই বলছেন, নার্সিং হোম প্রথমেও ফেরাচ্ছিল। কিন্তু এখন নেতাদের কথাতেও কাজ হচ্ছে না। কারণ, নার্সিং হোমের টাকা বকেয়া পড়ে গিয়েছে। আমরা সাধারণ মানুষ সেই সময় স্বাস্থ্য সাথী কার্ড পেয়ে আনন্দিত হয়েছিলাম। ভেবেছিলাম, বিনামূল্যে চিকিৎসা পাব। কিন্তু এখন দেখছি, আমাদের নাজেহাল হতে হচ্ছে। এক নার্সিং হোম থেকে অন্য নার্সিং হোমে যেতে হচ্ছে।
ঠিক একই ছবি ধরা পড়েছে মালদাতেও। কোলে শিশুকে নিয়ে এসেও হাসপাতাল থেকে ফিরে যেতে হচ্ছে। হাসপাতাল থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হল, স্বাস্থ্য সাথী কার্ডের মাধ্যমে চিকিৎসা হবে না। সেই অবস্থাতেই কোলে অসুস্থ শিশুকে নিয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে। আবার অন্য এক মহিলার দুই মেয়ে অসুস্থ, একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক, দ্রুত অপারেশন করা জরুরি। সেখানেও হাসপাতাল থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, স্বাস্থ্য সাথী কার্ডে কোনওরকম অপারেশন করা যাবে না। হাসাপাতালের কাছে অনেক অনুনয় বিনয় করেও যখন কাজ হয়নি, তখন ওই মহিলা ধার-দেনা করে কোনওরকমে ২৫ হাজার টাকা জোগাড় করেন মেয়ের অপারেশনের জন্য। এমনই একগুচ্ছ অভিযোগের পাহাড় জমতে শুরু করেছে।
আরও পড়ুন : Man beaten: মদের দোকান খোলা নিয়ে বচসা, বেধড়ক মারে মাথা ফাটল প্রৌঢ়ের