Sandeshkhali: এক রাতে পাঁচশো! ‘বাইরের দাদারা এসে যেন এমন না করে’, সন্দেশখালির মহিলারা এবার নামগুলো বলেই ফেললেন সাহস করে

Sandeshkhali: অভিযোগ, তাঁদের চিহ্নিত করে 'টার্গেট' করে নেওয়া হচ্ছে। উত্তম সর্দারের অনুগামীরা এরকমই এক আন্দোলনকারী মহিলার বাড়িতে ঢুকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ। চোয়ালে তাঁর রক্ত জমাট বাঁধা।

Sandeshkhali: এক রাতে পাঁচশো! 'বাইরের দাদারা এসে যেন এমন না করে', সন্দেশখালির মহিলারা এবার নামগুলো বলেই ফেললেন সাহস করে
সন্দেশখালিতে বিস্ফোরক মহিলারাImage Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 13, 2024 | 2:43 PM

সন্দেশখালি:   শেখ শাহজাহান নিয়ে এখন খুব একটা কথা বলছেন না সন্দেশখালির মহিলারা। কিন্তু যাদের নাম বারবার বলছেন, তাঁরা আদতে সন্দেশখালির বাসিন্দাই নয়। কিন্তু অভিযোগ, তারাই গ্রামে ঢুকে রাতবিরেতে অত্যাচার চালিয়েছে দীর্ঘদিন। অভিযোগ, লুঠ করেছে, শোষণ চালিয়েছে, রাতবিরেতে ঘর থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নিগ্রহ করেছে। তারা সন্দেশখালির বাইরের মানুষ। ‘বাইরের দাদা’, শিবু হাজরা, উত্তম সর্দার। তাদের বিরুদ্ধে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগে সোচ্চার গ্রামবাসীরা।

রাজ্যের এখন হটস্পট সন্দেশখালি।  প্রকাশ্যে আসছে একের পর এক বিস্ফোরক সব অভিযোগ। শেখ শাহজাহান দিয়ে যে অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল, তাতে নাম জুড়েছে আরও বড় ‘মাতব্বরদের’। শিবু হাজরা, সন্দেশখালি ২-এর ব্লক সভাপতির বিরুদ্ধে এসেছে গুচ্ছ গুচ্ছ অভিযোগ। তাতে একশো দিনের কাজে ৮০ লক্ষ টাকার দুর্নীতির অভিযোগ যেমন রয়েছে, তেমনি শিবু হাজরা, উত্তম সর্দারদের বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগও তুলেছেন গ্রামের মহিলারা। TV9 বাংলার ক্যামেরার সামনে মুখ খুলেছেন অনেকেই। প্রেক্ষাপট এক-একটা গ্রামে এক এক রকমের। কোথাও জমি দখল, কোথাও মাছের ভেড়ির জন্য বাঁধ নির্মাণের টাকা দাবি। আর সেক্ষেত্রেই বারবার অত্যাচারিত-নিগৃহীত হয়েছেন গ্রামের মহিলারা। অভিযোগ তেমনই। এক জন বললেন, ” এমনও হয়েছে, গ্রামে বাঁধ নির্মাণের নামে আমাদের কাছ থেকেই টাকা তোলা হয়েছে। এই টাকা তো আমাদের দেওয়ার কথা নয়। আমাদের তো জীবনে ভয় আছে। ওর মতো নেতাদের হাতে মার খাওয়ার থেকে না খেয়ে পেটে গামছা বেঁধে টাকা দিয়ে দিই। না হলেই তো রাতবিরেতে লোক ঢুকে যাবে ঘরে! তুলে নিয়ে যাবে। আমাদের বাড়ির ব্যাটাছেলেগুলোকে মেরে মেরে শেষ করে দেবে।”

আরেক বয়স্ক মহিলা বললেন, “হাজার টাকার কাজ করলে, পাঁচশো টাকা ওদের দিয়ে দিতে হচ্ছে। না দিলেই রাতে এসে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। বাড়িতে এসে কোদালের বাঁট মেরে যাচ্ছে। বাইরের দাদারা এসে যেন আমাদের গ্রামের বাসিন্দা না হয়। শিবু হাজরা, উত্তম সর্দাররা বাইরে বাসিন্দা। এখানকার নয়। আমাদের দিতে বাধ্য করছে।”  ক্যামেরার সামনে মুখ খুলেছেন গ্রামের মহিলারা। আর তার জন্য নিগ্রহের শিকারও হতে হচ্ছে তাঁদের। অভিযোগ, তাঁদের চিহ্নিত করে ‘টার্গেট’ করে নেওয়া হচ্ছে। উত্তম সর্দারের অনুগামীরা এরকমই এক আন্দোলনকারী মহিলার বাড়িতে ঢুকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ। চোয়ালে তাঁর রক্ত জমাট বাঁধা। কোলের এক রত্তিও সেই অত্যাচারের হাত থেকে রেহাই পাননি বলে অভিযোগ।

শাহজাহান, উত্তম সর্দারের বিরুদ্ধে যা যা অভিযোগ সামনে আনছেন গ্রামের মহিলারা, তা শিউরে ওঠার মতো। গত শুক্রবারই সন্দেশখালির সরবেরিয়ার রাস্তায় বাঁশ,লাঠি, গাছের ডাল-‘অস্ত্র’ হাতে রাস্তায় নেমেছিলেন হাজার হাজার মহিলা। সেখানে সাংবাদিকদের সামনে বিস্ফোরক সব অভিযোগ করেছিলেন। এক মহিলা প্রকাশ্যেই বলেছিলেন, “শিবু হাঁসদা, উত্তম সর্দাররা রাতে মা-বোনেদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে।”  আরেক বয়স্ক মহিলা বলেন, ” শিবু হাঁসদা, উত্তম সর্দার সব মিলে আমাদের দেওয়ালে পিঠ ঠেকিয়েই দিয়েছে। বাইরে থেকে লোক ঢোকায় ঘরে। রাত সাড়ে দশটার সময়েও আমাদের উঠিয়ে আনত।”

উত্তম সর্দারকে সোমবারই জামিন দিয়েছিল বসিরহাট মহকুমা আদালত। কিন্তু পুলিশ সেই রাতেই আবার তাকে গ্রেফতার করে। আর এদিকে এখনও পুলিশের চোখে ফেরার শিবু হাজরা। তাই তাদের কোনই প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে কী বলছেন সেখানকার সাংসদ।  তাঁকে তো এখনও পর্যন্ত পাশেই পাননি গ্রামের নির্যাতিতারা। সাংসদ নুসরত জাহানের অবশ্য দাবি, “আমার কাজ আগুনে ঘি ঢালা নয়। আমি প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। প্রশাসনকে সব রকম ভাবে সাহায্য করছি।”