TMC Leader Murder: ‘বাবা উন্নতি করছিল, তাই সরিয়ে দিল’, কান্না তৃণমূল নেতার মেয়ের, আটক ‘অর্জুন ঘনিষ্ঠ’ বিজয়
Ichapur: ঘটনায় বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং ঘনিষ্ঠ বলেই এলাকায় পরিচিত বিজয় মুখোপাধ্যায় নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শনিবার রাতে দলীয় কার্যালয় থেকে একাই বাড়ি ফিরছিলেন তৃণমূল নেতা
উত্তর ২৪ পরগনা: ‘বাবা বলেছিল, ওরা বাবাকে মেরে ফেলবে। কিন্তু, কারা কোনওদিন জানায়নি। উন্নতি করছিল, তাই সরিয়ে দিল।’ চোখের জলে ভাসছেন তৃণমূল নেতার মেয়ে। আর কাঁদতে কাঁদতে বলছেন, বাবার মৃত্যুর বিচার চান তিনি! ইছাপুরে তৃণমূল নেতার খুনে (TMC Leader Murder Case) কার্যত চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনায় শাসক শিবিরের অভিযোগ বিরোধীদের দিকে। ইতিমধ্যেই খুনের ঘটনায় বিজয় মুখোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। শোনা গিয়েছে, অভিযুক্ত বিজয় ব্যারাকপুর সাংসদ অর্জুন সিংয়ের ঘনিষ্ঠ।
অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হলেন ইছাপুরের তৃণমূল নেতা গোপাল মজুমদার। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, বেশ কিছুদিন ধরেই খুনের হুমকি পাচ্ছিলেন তৃণমূল নেতা। তাঁর স্ত্রী শিপ্রা মজুমদারকেও কুপিয়ে খুন করার চেষ্টা করে দুষ্কৃতীরা। কিন্তু দুজনেই সেযাত্রায় পালিয়ে বাঁচেন তাঁরা। ফের শনিবার রাতে গোপালবাবুর উপর হামলা চালানোর অভিযোগ ওঠে। তখনই তাঁকে কুপিয়ে খুন করা হয় বলে অভিযোগ।
পুলিশ জানিয়েছে, গোপালবাবুর মাথার পিছনে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। প্রথমে তাঁকে অজ্ঞান করে তারপর ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে খুব কাছ থেকে গুলি করা হয়। ঘটনাস্থলেই গোপালবাবুর মৃত্যু হয়। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশিতে নেমেছে পুলিশ। এই ঘটনায় এক জনকে আটক করা হয়েছে।
শনিবার রাতে, ইছাপুর বাবজি কলোনি এলাকায় নিজের বাড়ি ফিরছিলেন নোয়াপাড়া শহর তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি গোপাল। সেইসময় তাঁর উপর হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, শনিবার রাত ৯টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে খুন করা হয়েছে গোপালকে। তাঁরা জানিয়েছেন, উত্তর ব্যারাকপুর পুরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শিপ্রা মজুমদারের স্বামী গোপাল। শনিবার ঘটনার পর রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে ইছাপুর রাইফেল ফ্যাক্টরি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানান চিকিৎসকেরা। এর পর তাঁর দেহ ব্যারাকপুর বি এন বসু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
ঘটনায় বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং ঘনিষ্ঠ বলেই এলাকায় পরিচিত বিজয় মুখোপাধ্যায় নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শনিবার রাতে দলীয় কার্যালয় থেকে একাই বাড়ি ফিরছিলেন তৃণমূল নেতা। সেইসময় কিছু দুষ্কৃতী তার পথ আটকে দাঁড়ায়। গুলির শব্দ শুনেই ছুটে আসেন এলাকাবাসী।
নিহত তৃণমূল নেতার স্ত্রীয়ের কথায়, “আমার স্বামীকে ফিরিয়ে দিন। লোকটা এত ভাল ছিল, সারাদিন পার্টি আর পার্টি…কোনওদিন অন্য কোনও নেশা দেখিনি। মানুষের যখন যা দরকার হয়েছে ছুটে গিয়েছে। কখনও না বলতে শুনিনি। সেই মানুষটাকে এইভাবে সরিয়ে দিল। আমি এর বিচার চাই।”
নিহত তৃণমূল নেতার মেয়ে অন্যদিকে একটি অন্য অভিযোগ এনেছেন। কাঁদতে কাঁদতেই তিনি বলেছেন, “আমার বাবা উন্নতি করছিল। তাই সরিয়ে দিল। বাবা বেশ কিছুদিন ধরেই বলছিল ওরা বাবাকে নাকি মেরে দেবে। নাম ধরে কিছু বলেনি। আমি মুখ্যমন্ত্রীর কাছে বিচার চাই। তিনি খুব ভাল করেই আমার বাবাকে চেনেন। খুব ভাল যোগাযোগ। আমি কিছু চাই না, কেবল বিচার চাই।”
শনিবার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছয় নোয়াপাড়া থানার পুলিশ। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের কমিশনার মনোজ বর্মা বিশাল পুলিশবাহিনী নিয়ে পৌঁছন। খুঁটিয়ে দেখেন ঘটনাস্থল। কে বা কারা এই খুনের সঙ্গে জড়িত, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে তৃণমূলের তরফে দুষ্কৃতীদের শাস্তির পাশাপাশি বিজেপির দিকেই আঙুল তোলা হয়েছে। যদিও সে অভিযোগ মানতে নারাজ বিজেপি।প্রসঙ্গত, ইছাপুর এলাকায় জনপ্রিয় তৃণমূল নেতা বলে পরিচিত ছিলেন গোপাল। কিছুদিন আগে বিজয়ের সঙ্গে তাঁর গণ্ডগোল হয় বলে অভিযোগ। সেই গণ্ডগোলের জেরেই এই খুন কি না তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
আরও পড়ুন: Bengal BJP: শান্তনুর বাড়িতে ফের বৈঠকে রীতেশ-জয়প্রকাশ, রবিবারই দিল্লি যাত্রা কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর