Asansol Human Trafficking: ট্রেনের বাথরুমে গিয়েই ‘দাদা’র ফোনের কথা শুনে ফেলেছিল, আর তাতেই বিপদের হাত থেকে বাঁচল ওরা

Asansol Human Trafficking: জানা গিয়েছে, কাজ দেওয়ার নামে উত্তর ২৪ পরগনার সন্তোষপুর এলাকা থেকে চার নাবালিকা ও দুই যুবতীকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল নিউ দিল্লির কোনও এক জায়গায়।

Asansol Human Trafficking: ট্রেনের বাথরুমে গিয়েই 'দাদা'র ফোনের কথা শুনে ফেলেছিল, আর তাতেই বিপদের হাত থেকে বাঁচল ওরা
আসানসোলে নাবালিকা উদ্ধার (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 08, 2021 | 7:39 AM

আসানসোল: ওরা প্রত্যেকেই প্রায় দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারের মেয়ে। পড়াশোনা শেষ হয়েছে মাঝ পথেই। গ্রামেই টুকটাক কাজ করে সংসারের হাল ফেরানোর চেষ্টা করত। কিন্তু সামনেই ভিন রাজ্যে ‘বড় কাজ’ পাওয়ার সুযোগ আসে তাদের কাছে। তাদের প্রত্যেকেই বলা হয়েছিল, বাইরে কাজ করলেই মোটা টাকা পাওয়া যাবে। সংসারে সুখ ফিরবে। কাজের লোভেই অচেনা লোকের সঙ্গে ট্রেনের উঠে পড়েছিল তারা। কিন্তু দূর থেকে ফোনে ওই ব্যক্তির কথোপকথন শুনেই আসল ঘটনা আঁচ করতে পারেন তারা। সাহায্য করেন অনান্য যাত্রীরাও। উদ্ধার হয় একাধিক নাবালিকা। ধরা পড়ে অভিযুক্তও। আসানসোল স্টেশনে মঙ্গলবার ঘটে এক ভয়ঙ্কর ঘটনা।

আসানসোল স্টেশনে চার জন নাবালিকা ও দুজন যুবতীকে চলতি ট্রেন থেকে উদ্ধার করল আরপিএফ। মঙ্গলবার শিয়ালদহ দিল্লিগামী সম্পর্কক্রান্তি ট্রেন থেকে এদের উদ্ধার করা হয়। দিল্লি নিয়ে যাওয়ার পথে D3 কামরা থেকে তাদের উদ্ধার করা হয় মঙ্গলবার। এই ঘটনায় এক ব্যক্তিকে আটক করেছে আসানসোল আরপিএফ।

জানা গিয়েছে, কাজ দেওয়ার নামে উত্তর ২৪ পরগনার সন্তোষপুর এলাকা থেকে চার নাবালিকা ও দুই যুবতীকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল নিউ দিল্লির কোনও এক জায়গায়। কিন্তু এই নাবালিকারা তাদের সঙ্গে থাকা ওই ব্যক্তির ফোনের কথোপকথনের মাধ্যমে বুঝতে পারে যে তাদের অন্য বা অসৎ উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ট্রেনের যাত্রীরা এই বিষয়টি বুঝতে পেরে আরপিএফকে খবর দেয়।

এরপর আসানসোল রেল ডিভিশনের আরপিএফের কাছে খবর যায়। খবর পেয়ে তারা আসানসোল স্টেশনে ওই ট্রেন থেকে চারজন নাবালিকা ও দু’জন যুবতীকে উদ্ধার করে। তাদের সঙ্গে থাকা অভিযুক্তকেও আটক করা হয়। এই ঘটনা প্রসঙ্গে আরপিএফের আসানসোল ডিভিশনের চিফ সিকিউরিটি কমিশনার চন্দ্রকান্তা মিশ্র জানিয়েছেন. তারা প্রাথমিকভাবে ঘটনাটি হিউম্যান ট্রাফিকিং-এর ঘটনা বলেই মনে করছেন। আরপিএফ এর দাবি প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই নাবালিকা সহ যুবতীদের দেহ ব্যবসার কাজে নামানোর উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।

উদ্ধার হওয়া এক নাবালিকা বলেন, “ট্রেনের এক জন যাত্রী এসে বলেন, আমরা যাতে না যাই। আমাদের বাড়ির কাজ করার জন্য বলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। কিন্তু পরে সবাই বলে আমাদের খারাপ কাজে লাগানো হত। আমরা তখন কাঁদছিলাম। তখন ট্রেনের অনান্য মহিলা যাত্রীরাই আমাদের সাহায্য করেন।”

আরেক নাবালিকা বলে, “আমার বাড়ির পাশের ছেলেটাই নিয়ে যাচ্ছিল। ওর নাম সইদুল। আমাদের বলেছিল এখানে কাজ করে টাকা নেই। বাইরে কাজ করলে অনেক টাকা পাওয়া যাবে। আমার গরিব পরিবার। টাকার প্রয়োজন রয়েছে, তাই রাজি হয়ে গিয়েছিলাম। ট্রেনের বাকি যাত্রীরা বলেন, আমাদের নাকি বেঁচে দেওয়া হত।”

পুলিশ আধিকারিক বলেন, “ট্রেনটা প্ল্যাটফর্ম নম্বর ৪ এ আসে। আমাদের কাছে খবর আসে কয়েকটি মেয়েকে পাচারের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ওদের বলা হয়েছিল বাড়ির কাজের জন্য নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কিন্তু ওরা ফোনের কথা শুনে বুঝতে পেরেছিল, ওদের বিক্রি করে দেওয়া হতে পারে। পার হেড ১৫ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেওয়া হত। ”

আরও পড়ুন: ‘আর্নিং নেই, শুধুই বার্নিং’, টাকার জন্য বিধায়কদের ম্যাজিশিয়ান আনার পরামর্শ মমতার