Paschim Medinipur: গরুর পরিচর্যা করতে করতেই দিন যাচ্ছে পুলিশের, রোজ খরচ ৮০০ টাকা!
Paschim Medinipur: সেজন্য প্রতিদিন ৮৬০ টাকা করে দিতে হতো খোয়াড়ে। সেখানে সেড না থাকায় ত্রিপলের ব্যবস্থা করে পুলিশ। রাতে পাহারার জন্য সিভিক পুলিশও দিয়েছিল।
পশ্চিম মেদিনীপুর: গরু ও মহিষ আটকে বিপাকে পড়েছে পুলিশ। তাঁদের দেখাশুনা থেকে পরিচর্যা করছে পুলিশ। এর জন্য মোতায়েন রয়েছে ৪ জন করে সিভিক পুলিশ। সরকারি বৃষ্টির কারণে রাখার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা না থাকায় অবশেষে চাঁদড়া স্ট্রাকো বাহিনীর ক্যাম্প চত্বরে রাখা রয়েছে ৯টি মহিষ ও ৫টি গরুকে। ওই ক্যাম্পটিতে আগে ছিল কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা । গবাদি পশুর মুখের সামনে খড়ের আঁটি এগিয়ে দিচ্ছেন কর্মরত সিভিক পুলিশ। তাছাড়া জল ও ভুষি ইত্যাদি।
জানা গিয়েছে, গত ২৯ নভেম্বর বিকেল পৌনে ৬টা নাগাদ নাকা তল্লাশির সময় গুড়িগুড়ি পাল থানার পুলিশ আটক করেছিল একটি গবাদি পশু বোঝাই পিকআপ ভ্যান। মেদিনীপুর সদর ব্লকের এনায়েতপুর মোড়ের কাছে। ঝাড়গ্রাম জেলার লালগড়ের দিক থেকে ওই পিকআপটি যাচ্ছিল মেদিনীপুর শহরের দিকে। ওই গবাদি পশু বোঝাই গাড়িটি যাচ্ছিল পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়ার দিকে। গাড়িতে খাঁচা দিয়ে দো-তলা করা ছিল। ৯টি মহিষ ও ৫টি গরু ছিল সেই পিকআপ ভ্যান টিতে।
গাড়ির চালক রবীন্দ্রনাথ বিশুই, শেখ শাহআলম এবং সহিল খান ছিল ওই গাড়িতে। তাদের গ্রেফতার করা হয়। জেল হেফাজতে রয়েছেন তাঁরা। তাঁদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৯, ৪১১, ৪১৩, ৪১৪, ৩৪ ধারা ছাড়াও ১১ (I)(d)(e)(f) প্রিভেনশন অফ্ ক্রয়েলটি টু অ্যানিম্যাল অ্যাক্ট ১৯৬০ ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। গবাদি পশুগুলি উদ্ধারের পর গুড়গুড়িপাল থানার অন্তর্গত একটি সরকারি খোয়াড়ে সেগুলি রাখার ব্যবস্থা করে পুলিশ।
সেজন্য প্রতিদিন ৮৬০ টাকা করে দিতে হতো খোয়াড়ে। সেখানে শেড না থাকায় ত্রিপলের ব্যবস্থা করে পুলিশ। রাতে পাহারার জন্য সিভিক পুলিশও দিয়েছিল। কিন্তু বাদ সাজে প্রাকৃতিক দূর্যোগ। তার মধ্যে একটি মহিষ ও তিনটি গরু অসুস্থ হয়ে পড়ে। সরকারি পশু চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুলিশ। মেদিনীপুর থেকে এক চিকিৎসক গিয়ে চিকিৎসা শুরু করেন। পরে সরকারি পশু হাসপাতালের বিএলডিও চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা চলছে। ওই খোয়াড়ে খড় ও কুড়া পাঠিয়ে দেয় পুলিশ।
থানার ওসি শঙ্খ চট্টোপাধ্যায় এবং থানার সেকেন্ড অফিসার মধুসূদন দাস নিয়মিত খোঁজ খবর নিচ্ছেন ওই পশু গুলির। মাঝে মধ্যেই ক্যাম্পে গিয়ে দেখে আসছেন তারা। জল, খাবার ঠিক মতো দেওয়া হচ্ছে কিনা তাও দেখছেন তাঁরা। তাছাড়া চিকিৎসকের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন। রবিবার বৃষ্টি শুরু হওয়ায় বাধ্য হয়ে ওই খোঁয়াড় থেকে গবাদি পশু গুলিকে উদ্ধার করে পুলিশেরই চাঁদড়া ক্যাম্পে নিয়ে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। ১২ টি পশুকে রবিবার আনা হলেও দুটির শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকায় সোমবার সিভিক পুলিশ পাঠিয়ে গাড়িতে করে সেখানে নিয়ে আসা হয়েছে। নিয়মিত গবাদি পশু গুলির দেখভাল করছেন সিভিক পুলিশ।
দেখা গেল, তাঁরাই খাবার, জল পৌঁছে দিচ্ছে। তাছাড়া সোমবার রাতেও এসেছিল পশু চিকিৎসক জিতেন মন্ডল। তিনি বলেন, “কয়েকটি গরু ও মহিষের অসুখ দেখা দিয়েছে। তাদের নিয়মিত ইনজেকশন ও ওষুধ দেওয়া হচ্ছে। পুলিশকে এভাবে এই কাজ করতে দেখে তিনিও অবাক হয়েছেন।” তিনি বলেন, “পুলিশ যে ভাবে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকেন তার মধ্যে উদ্ধার করা গবাদি পশু গুলির চিকিৎসা করানো বা তাদের দেখভাল করছেন খুবই ভালো ব্যাপার।” এদিকে খোয়াড়ে মালিক রাজেন সেন বলেন, “পুলিশ নিয়ে এসে রেখেছিল গরু ও মহিষ মিলিয়ে ১৪টি। খোয়াড়ে সেড না থাকায় সমস্যা হচ্ছিল তাছাড়া নিরাপত্তার জন্য পুলিশকে জানানো হয়েছিল। প্রতিদিনই সিভিক আসত।বৃষ্টির জন্য গবাদি পশুগুলিকে নিয়ে গিয়েছে পুলিশ।” এই প্রথম পুলিশ তার কাছে গবাদি পশু রেখেছিল। এটা পুলিশের ভালো উদ্যোগ। পুলিশের এ ধরনের কাজ এই প্রথম দেখছি ওই খোয়াড় মালিক । এর জন্য প্রতিদিন খরচ হচ্ছে প্রায় ৮০০ থেকে হাজার টাকা করে। সেই টাকা বহন করছেন পুলিশ কর্মীরাই।
আরও পড়ুন: কংগ্রেসের পতাকা লাগালে প্রাণনাশের হুমকি, কাঠগড়ায় তৃণমূল! উত্তপ্ত ২৬ নম্বর ওয়ার্ড