Purulia: কুরবানের কাছ থেকে পৈতে বানিয়ে পরেন হিন্দুরা, বাঘমুণ্ডিতে এই সম্প্রীতির নজির বহু পুরনো
Purulia: জঙ্গলমহলের অতি প্রত্যন্ত গ্রাম পুরুলিয়ার বাগমুন্ডি ব্লকের লহরিয়া। সেখানেই দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে এই প্রথা। লহরিয়ার শিব মন্দিরের গাজনের ভক্তরা চৈত্র সংক্রান্তির আগের দিন সকালে বাড়েরিয়া গ্রামের মুসলিম পরিবারের বাড়িতে যান।

পুরুলিয়া: বরাবরই সম্প্রীতির বাংলা দেখেছে আম-বাঙালি। সেই রকমই একটি ছবি উঠে এল পুরুলিয়া থেকে। মুসলিম পরিবারের কাছ থেকে বিনামূল্যে সুতো নিয়েই বংশপরম্পরায় নিজেদের পৈতে তৈরি করেন লহরিয়ার গাজনের হিন্দুভক্তরা। এমনকী, চারদিনের গাজনের পুজোর শেষে প্রসাদের নির্দিষ্ট অংশও পান ওই মুসলিম পরিবারের সদস্যরা। নীলের পুজো এবং গাজনের এই মেলাকে কার্যত নিজেদেরই উৎসব মনে করেন দুই সম্প্রদায়েরই মানুষ। আর এইভাবেই উগ্র ধর্মীয় ভাবাবেগের পরিবর্তে হিন্দু-মুসলমানের সম্প্রীতির অনন্য নজির তৈরি করেছে বাঘমুণ্ডির লহরিয়া শিব পুজো কমিটি।
জঙ্গলমহলের অতি প্রত্যন্ত গ্রাম পুরুলিয়ার বাগমুন্ডি ব্লকের লহরিয়া। সেখানেই দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে এই প্রথা। লহরিয়ার শিব মন্দিরের গাজনের ভক্তরা চৈত্র সংক্রান্তির আগের দিন সকালে বাড়েরিয়া গ্রামের মুসলিম পরিবারের বাড়িতে যান। তারপর তাঁদের কাছ থেকে সকলেই পৈতের জন্য বিনামূল্যে সুতো নেন। এরপর সেখানে বসেই পৈতে তৈরি করেন।
গত কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, ওই সকল পৈতে মন্দির চত্বরে এসেই সকলের হাতে তুলে দেন বাড়েরিয়া গ্রামের ওই মুসলিম পরিবারের সদস্যরা। কুরবান আনসারি বলেন, “বাবার (শিব) আবির্ভাব যবে থেকে, সেদিন থেকে আমরা এই পৈতের সুতো দিয়ে আসছি। আগে আমার বাড়ি থেকেই সুতো নিতে যেত। কিন্তু এখন আমার বাড়ি দূরে। সেই কারণে আমি নিয়ে আসি। তারপর সেই সুতো দিয়ে পৈতে বাঁধা হয়।”
বস্তুত, বাঘমুণ্ডির লহরিয়াতে চড়কের মেলাতে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত ছাড়াও ঝাড়খণ্ড থেকেও কয়েক হাজার মানুষের সমাগম হয়। চৈত্র সংক্রান্তির দু’দিন আগে ‘ফলারের’ মধ্য দিয়ে পুজো শুরু হয়। পরের দিন সারারাত ধরে চলে ছৌনাচ ও মেলা। সেই মেলায় সব সম্প্রদায়ের মানুষ অংশগ্রহণ করেন। শিব মন্দিরের পুরোহিত তপন মাহাতো বলেন, “আমাদের পূর্ব পুরুষ এই মেলা পরিচালনা করে আসছে। এই মেলায় সব ধর্মের লোক অংশগ্রহণ করে। এমনকী পৈতে নেওয়া হয় কুরবানের কাছ থেকে। ভারতে বিভিন্ন জায়গায় যেভাবে ধর্ম নিয়ে মাথাচাড়া দিচ্ছে, আমরা কিন্তু এখানে মিলেমিশে থাকি। ”





