বুকে নেই দুধ, প্রথম সন্তানের জন্ম দিয়েই হাসপাতালের তিন তলা থেকে ঝাঁপ দিলেন মা, বেঁচে গেলেন প্রাণেও!

পুরুলিয়া: মর্মান্তিক একইসঙ্গে অকল্পনীয়! সদ্য এক কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন এক মহিলা। কিন্তু, বুকে প্রয়োজনীয় স্তনদুগ্ধ তৈরি হয়নি। অবসাদে হাসপাতালের তিনতলার গরাদহীন জানলা দিয়ে ঝাঁপ দিতে যান (Suicide) মহিলা। আশ্চর্যজনকভাবে বেঁচে গেলেন প্রাণেও। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পুরুলিয়া দেবেন মাহাত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে। পুরুলিয়ার বোড়ো থানার চিরুগড়া গ্রামের বাসিন্দা বছর পঁচিশের কাজলী সিং সম্প্রতি এক […]

বুকে নেই দুধ, প্রথম সন্তানের জন্ম দিয়েই হাসপাতালের তিন তলা থেকে ঝাঁপ দিলেন মা, বেঁচে গেলেন প্রাণেও!
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 20, 2021 | 9:23 PM

পুরুলিয়া: মর্মান্তিক একইসঙ্গে অকল্পনীয়! সদ্য এক কন্যা সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন এক মহিলা। কিন্তু, বুকে প্রয়োজনীয় স্তনদুগ্ধ তৈরি হয়নি। অবসাদে হাসপাতালের তিনতলার গরাদহীন জানলা দিয়ে ঝাঁপ দিতে যান (Suicide) মহিলা। আশ্চর্যজনকভাবে বেঁচে গেলেন প্রাণেও। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে পুরুলিয়া দেবেন মাহাত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে।

পুরুলিয়ার বোড়ো থানার চিরুগড়া গ্রামের বাসিন্দা বছর পঁচিশের কাজলী সিং সম্প্রতি এক কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু, সন্তান জন্মানোর পর দেখা যায়, কাজলীর দেহে প্রয়োজনীয় স্তনদুগ্ধ তৈরি হয়নি। অথচ, সদ্যোজাত শিশুর জন্য সর্বাধিক জরুরি ওই ‘মায়ের বুকের দুধ’। চিকিৎসকেরা যদিও আশ্বাস দিয়েছিলেন কিছুদিনের মধ্যেই স্তনদুগ্ধ তৈরি হবে কাজলীর। কিন্তু মায়ের মন মানেনি। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, সদ্যোজাত জন্মেই জন্ডিসে আক্রান্ত হয়। কেবল অপুষ্টি নয়, মাতৃদুগ্ধ না পাওয়ায় এর অন্যতম একটি কারণ বলে মনে করেন চিকিৎসকেরা। এরপরেই অবসাদে ভুগতে শুরু করেন কাজলী। রবিবার, হাসপাতালের তিনতলার একটি গরাদহীন জানলা থেকে ঝাঁপ দেন কাজলী। কিন্তু, বর্ষায় কাদা ভর্তি একটি জায়গায় পড়ে গিয়ে প্রাণে বেঁচে যান কাজলী। আপাতত, ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন তিনি।

আহত কাজলীর দিদি নিয়তি মাহাত বলেন, “কয়েকদিন ধরেই বোন মনমরা হয়েছিল। প্রায়ই বলত, ‘দিদি আমায় বাড়ি নিয়ে চল’। ওর বুকে দুধ তৈরি হয়নি। সেইজন্য কান্নাকাটি করত। বাচ্চাটাও জন্ডিসে ভুগছে। সব মিলিয়ে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিল বোন।” নিয়তি আরও জানিয়েছেন কয়েকবছর আগে ঝাড়খণ্ডে বিয়ে হয় কাজলীর। শ্বশুরবাড়িতেও কোনও সমস্যা ছিল না। কন্যা সন্তান হওয়া নিয়েও কোনও সমস্যা ছিল না।

হাসপাতাল সূত্রে খবর, কাজলী গুরুতর আহত। তাঁর চিকিৎসা চলছে। সিটিস্ক্যান করা হয়েছে। কাজলীর মেয়েকেও সিক নিউন্যাটাল কেয়ার ইউনিটে রাখা হয়েছে। চিকিৎসকদের দাবি, কাজলীর বুকে শিশুর জন্য় প্রয়োজনীয় দুধ তৈরি হচ্ছিল না। কারণ, কাজলী কেবল অপুষ্টিতে ভুগছিলেন এমন নয়, স্তনদুগ্ধের জন্য দায়ী অক্সিটোসিন হরমোনটিও পরিমাণ মতো তৈরি হতে পারেনি তাঁর শরীরে। ফলে জোগান কমেছে স্তনদুগ্ধের। এতেই মানসিক অবসাদে ভুগতে শুরু করেন কাজলী। তারপরেই রবিবার চূড়ান্ত পদক্ষেপ করেন তিনি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, হাসপাতালের তিনতলায় বাতানূকুল যন্ত্র বসানোর জন্য একটি জানলার গ্রিল কেটে রাখা হয়েছিল। সেই জানলা দিয়ে লাফ দেন কাজলী। গোটা ঘটনাটাই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

আরও পড়ুন: Malda Murder: বাড়িতেই ‘সাইবার ল্যাব’ বানানোর পরিকল্পনা আসিফের, যোগ অস্ত্র পাচারেও! অনুমান পুলিশের