Bhawanipur Bypoll Results 2021: ‘মুখ্যসচিবের আবেদনে ভুল ছিল না’, মমতার জয় ‘বিধান মেনেই’, দাবি বিমানের
Assembly Speaker Biman Banerjee: মুখ্যসচিবের চিঠি দেওয়ার এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল। উপ নির্বাচনের দিন ঘোষণার সময় নির্বাচন কমিশনের তরফে প্রেস বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, সাংবিধানিক সংকট তৈরি হতে পারে বলেই দ্রুত উপ-নির্বাচন করা হচ্ছে ভবানীপুরে।
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: নিজের রেকর্ড নিজেই ভেঙে জয়ের নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। ভবানীপুরে ৫৮ হাজার ৩৮৯ ভোটের ব্যবধানে নিজের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালকে বিরাট মার্জিনে পরাজিত করেন তিনি। মমতার নজিরবিহীন জয়ে আপ্লুত বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় (Assembly Speaker Biman Banerjee)। উপনির্বাচন প্রসঙ্গে মুখ্যসচিবের মন্তব্যে ভুল ছিল না বলেই দাবি করেন স্পিকার।
এদিন উপনির্বাচনের ফল ঘোষণার পর বিমান বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জয়লাভ করবেন এ নিয়ে কোনও সংশয় ছিল না। তাঁর যা জনপ্রিয়তা তেমন আর বাংলা কেন গোটা ভারতেও কারোর নেই। মমতা বিধানসভার সদস্য নির্বাচিত হলে আরও স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। যেভাবে তিনি এই রাজ্যকে পরিচালনা করছেন সেইদিকে গোটা দেশ তাকিয়ে রয়েছে। তিনি বিধানসভার সদস্য না থাকায় অনেকেই অনেক কথা বলেছিলেন। সংবিধান মেনেই তিনি মুখ্যমন্ত্রী হন। তবে আজ সব বিরোধের অবসান।”
এখানেই থামেননি বর্ষীয়ান স্পিকার (Assembly Speaker Biman Banerjee)। তিনি আরও বলেন, “মুখ্যসচিবের ভূমিকা নিয়ে যাঁরা সমালোচনা করেছেন তাঁদেরও জানা উচিত, মুখ্যসচিবের আবেদনে কোনও ভুল ছিল না। তিনি কেবল নির্বাচন কমিশনের ভূমিকার কথা স্মরণ করিয়েছিলেন। প্রচার পেতে অনেকেই অনেক কিছু করেন। কিন্তু, সাধারণ মানুষ তাঁদের প্রত্যাখ্যান করেছেন। ভবানীপুরের ফলাফলই তার উদাহরণ।”
উল্লেখ্য, ভবানীপুরে উপনির্বাচন করার আবেদন জানিয়ে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি লেখেন রাজ্যের মুখ্যসচিব হরেকৃষ্ণ দ্বিবেদী। কমিশনের পক্ষ থেকেও জানানো হয়, রাজ্য সরকারের বিশেষ অনুরোধেই ভবানীপুরে উপনির্বাচন ঘোষণা করা হয়েছে। কিন্তু, মুখ্যসচিবের সেই চিঠিতে কেবল ভবানীপুর কেন্দ্রেরই উল্লেখ ছিল। সামশেরগঞ্জ, জঙ্গিপুরের নাম ছিল না। কেন কেবল ভবানীপুরেই উপনির্বাচনের আবেদন মুখ্য়সচিবের এই মর্মে সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় নামে এক আইনজীবী হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন।
গুরুত্বপূর্ণ এই মামলায় একাধিক প্রশ্ন তোলেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল। মুখ্যসচিবের চিঠি দেওয়ার এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি। উপ নির্বাচনের দিন ঘোষণার সময় নির্বাচন কমিশনের তরফে প্রেস বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, সাংবিধানিক সংকট তৈরি হতে পারে বলেই দ্রুত উপ-নির্বাচন করা হচ্ছে ভবানীপুরে। রাজ্যের মুখ্যসচিব হরেকৃষ্ণ দ্বিবেদী এই মর্মেই আবেদন জানিয়েছিলেন। মুখ্যসচিব প্রশাসনিক পদে থেকে নির্বাচনের জন্য এ ভাবে চিঠি লিখতে পারেন কি না, সেই প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি। কার্যত, হাইকোর্টের প্রশ্নে ধাক্কা খায় রাজ্য। যদিও, পরে পিছিয়ে যায় মামলার শুনানি।
রবিবার উপনির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, “ভবানীপুরে ১ লক্ষ ১৫ হাজার মাত্র ভোট পড়েছে। এটা চিরকালের ধারা, কম ভোট পড়ে। ‘১১ সালে ৪৪ শতাংশ ভোট পড়েছিল, সেবার জিতেছিলাম। ১৬ সালে সম্ভবত ২৫-২৬ শোভনদেব ২৮ হাজার ভোটে জিতেছিলেন। এবার অ্যাবাউট ৬০ হাজাার ভোটে জিতেছি। কোনও ওয়ার্ডে মানুষ আমাদের হারায়নি। এটাই চ্যালেঞ্জ। মাথার রাখতে হবে।”
নন্দীগ্রামে ফল-বিতর্কের পরে সতর্ক কমিশন। ভবানীপুরের গণনা নিয়ে বাড়তি সতর্কতা। রিটার্নিং অফিসার ছাড়া কাউকে ফোন দেওয়া হয়নি। সব দিকে খতিয়ে দেখে তবেই ফল ওয়েবসাইটে। নন্দীগ্রামে মুখ্যমন্ত্রীর জেতার খবর ছড়িয়ে পড়ে সংবাদমাধ্যমে। পরে ফল বদলে যায়। এই ঘটনা যাতে আর না হয় তাই আগে থেকেই সূত্রের খবর দিল্লি থেকেই নির্দেশ কমিশনের কলকাতার অফিসে।
আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: ‘নিজের চেয়ার বাঁচাতে ৫০ লক্ষ মানুষকে ডুবিয়েছেন দিদিমণি’, বিস্ফোরক শুভেন্দু
আরও পড়ুন: CM Mamata Banerjee: বাতিল জেলাশাসকের সঙ্গে বৈঠক, আকাশপথেই বন্যা কবলিত বাঁকুড়া দর্শন মুখ্যমন্ত্রীর