Sandeshkhali: ‘রাতদুপুরে তুলে নিয়ে গেল, ওরা পার্টিতে এলে মেয়েরা শেষ…’ মিডিয়ায় মুখ খোলায় সন্দেশখালির মহিলা ও তার একরত্তির সঙ্গে ঘৃণ্য আচরণ
Sandeshkhali: গলা চড়ালেন ওই নির্যাতিতা মহিলার আশপাশে থাকা বাকি আক্রান্তরাও। সন্দেশখালিতে এখন জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা। কিন্তু তার মধ্যেও প্রদীপের নীচের অন্ধকার যে এখন জিইয়ে রয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় স্থানীয় কোনও তৃণমূল নেতৃত্ব কথাই বলছেন না।
সন্দেশখালি: গ্রামের ‘বাঘ’ শেখ শাহজাহান। আর তার ডান হাত শিবু হাজরা, উত্তম সর্দাররা… আর তাদের বিরুদ্ধে নাকি মুখ খুলেছেন ওঁরা। দিনের আলোয় পথে নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, লাঠি, ‘অস্ত্র’ হাতে তুলে নিয়েছেন আদ্যোপান্ত গ্রাম মহিলারা। এত সহজেই কি আর ছেড়ে দেবে গ্রামের ‘শাসক’রা। আর রাত হতেই তাই তাঁদের বাড়িতেই হামলার অভিযোগ। মেরে মহিলার মুখ ফাটিয়ে দেওয়া হল, রক্ত জমাট বেঁধে কালচিটে পড়ল মুখে। বাদ গেল না বছর খানেকের একরত্তিও। সন্দেশখালিতে এই বিক্ষোভের আড়ালেও চলছে অত্যাচার, অভিযোগ আন্দোলনকারীদের। অভিযোগ উঠছে উত্তম সর্দার ও তাঁর লোকজনের বিরুদ্ধে। সাংবাদিকদের সামনে মুখ খোলায় পেতে হচ্ছে শাস্তি। তারপরও TV9 বাংলার ক্যামেরার সামনে মুখ খুললেন নিগৃহীত সেই মহিলা।
সন্দেশখালির সরবেড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা সেই মহিলা বললেন, “আমরা এর আগে সাহস পায়নি। এতগুলো বছর ধরে অত্যাচারিত হয়েছি। কিন্তু এখন যে আমরা মিডিয়ার সামনে মুখ খুলেছি, সেটা ওরা মেনে নেবে কেন?” কোলে এক রত্তিকে নিয়েই তিনি অভিযোগ করলেন, “আমাদের ঘরের ব্যাটাছেলেদের মেরে দেশ থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। আমাদের গ্রামে কোনও রাস্তা নেই, একটা ঘর পর্যন্ত নেই। মাটির ঘর কোনও রকমে বেঁধেছি। সেটাও ভেঙে পড়ছে। আমরা আবাসের কাগজপত্র সবই জমা দিয়েছি। কিন্তু কোথায় কী! গ্রামের একটা লোকও ঘর পায়নি। আর তার জন্য বলতে গেলে আমাদের রাতবিরেতে তুলে নিয়ে গিয়ে মারধর করাচ্ছে লোক দিয়ে।”
গ্রামের নিগৃহীত মহিলারা মুখ খুলেছেন সাংসদ নুসরত জাহানের বিরুদ্ধেও। তাঁরা বললেন, “আমাদের সাংসদ একজন মেয়ে। কিন্তু আমাদের সাহায্য করতে কেউ আসেন না। পুলিশের কাছে গেলে, পুলিশ ওই সব সন্ত্রাসবাদী শেখ শাহজাহান, উত্তম সর্দার, শিবু হাজরাদের কাছে পাঠিয়ে দেয়। ওরা আইনের ওপরে। আইন ওদের ওপরে নয়। আমাদের পাশে কেউ নেই। আমাদের এখান থেকে তাড়িয়ে দখল করতে চায় এলাকা।” বিস্ফোরক দাবি করলেন ওই মহিলা। তিনি বললেন, “আমাদের এফআইআর জমা নেওয়া হয় না। আর জমা নিলেও সেটাকে নষ্ট করে দেওয়া হয়। ওরা পার্টিতে আসলে আবার অত্যাচার করবে আমাদের ওপরে।”
গলা চড়ালেন ওই নির্যাতিতা মহিলার আশপাশে থাকা বাকি আক্রান্তরাও। সন্দেশখালিতে এখন জারি রয়েছে ১৪৪ ধারা। কিন্তু তার মধ্যেও প্রদীপের নীচের অন্ধকার যে এখন জিইয়ে রয়েছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় স্থানীয় কোনও তৃণমূল নেতৃত্ব কথাই বলছেন না।
তবে সাংসদ নুসরত জাহান বলেন, “আমি সংসদের কাজে দিল্লি ছিলাম। ফিরে অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। তবে প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছি। আমাদের কাজ উস্কানো হয়। আমাদের কাজ প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করে পরিস্থিতির সামাল দেওয়ার, সেটা করছি।”