Sandeshkhali: স্রেফ ২ টাকা! সন্দেশখালির প্রত্যন্ত গ্রামেই চলত আসল ‘হর্তাকর্তা’র খেলা, সে গন্ধ তো এতদিন পাননি তদন্তকারীরা
Sandeshkhali: চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত নদী পারাপারের এই টিকিটে লেখা থাকত 'হাজরা এগ্রো ইন্ডিয়া'। ইডি তল্লাশিতে গোলমালের পর থেকে বদলে যায় টিকিটের উপরে লেখা। এখন লেখা থাকে 'সন্দেশখালি ফেরিঘাট'।
সন্দেশখালি: ধামাখালি ঘাট থেকে সন্দেশখালি কিংবা আশপাশের তিনটি ঘাটে একবার পার হতে জন প্রতি ৩ টাকা ভাড়া দিতে হয়। সেই বাবদ যে টিকিট দেওয়া হয়, তাতে কোথাও লেখা নেই ভাড়ার অঙ্ক। যাত্রীরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরেই এইরকম টিকিটে তিন টাকা ভাড়া দিয়ে যাতায়াত করতে হয়। এখানেই রয়েছে দুর্নীতির গন্ধ। সন্দেশখালিতে কান পাতলেই শোনা যাচ্ছে এর পিছনেও রয়েছে শাহজাহানের খেলা।
কীরকম?
জানা যাচ্ছে, তিন বছর অন্তর জেলা পরিষদ থেকে টেন্ডার ডাকা হয় ঘাটের জন্য। আগে সেই টেন্ডারে যাত্রী প্রতি ১ টাকা ভাড়া নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখন যাত্রীদের ভাড়া হিসেবে গুনতে হচ্ছে ৩ টাকা করেই। অর্থাৎ বাড়তি ২ টাকা গুনছেন যাত্রীরা। এই বাড়তি টাকারই ভাগ যায় শাহজাহানের কাছে তেমনটাই স্থানীয় সূত্রে খবর। জেলা পরিষদ থেকে যিনি টেন্ডার পাচ্ছেন, তাঁকেই সেই টাকার ভাগ দিতে হচ্ছে। না দিলে টেন্ডার মিলবে না। ফলে যাত্রীদের থেকে নেওয়া অতিরিক্ত টাকার ভাগ পাচ্ছে শাহজাহান অ্যান্ড কোম্পানি।
স্থানীয় সূত্র বলছে, চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি পর্যন্ত নদী পারাপারের এই টিকিটে লেখা থাকত ‘হাজরা এগ্রো ইন্ডিয়া’। ইডি তল্লাশিতে গোলমালের পর থেকে বদলে যায় টিকিটের উপরে লেখা। এখন লেখা থাকে ‘সন্দেশখালি ফেরিঘাট’। পুরনো টিকিটে লেখা হাজরা অর্থে শিবু হাজরাকেই মনে করতেন যাত্রীরা। আচমকা টিকিটের উপরে লেখা নাম বদলে যাওয়া ভাবিয়েছে যাত্রীদের।
এলাকাবাসী সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, নৌকা পারাপারের টাকার ভাগ যেত শাহজাহান অনুগামী উত্তম সর্দারের কাছেও। ধামাখালি ঘাটে টিকিট বিক্রির দায়িত্বে থাকা কর্মীদের অবশ্য দাবি, অতিরিক্ত টাকা নেওয়ার কারণ জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়া ও নৌকার কর্মীদের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় জন্যই ২ টাকা বেশি নেওয়া হয়।
দুর্নীতির গন্ধ পাওয়ার আরও কারণ রয়েছে। ধামাখালি, সন্দেশখালি ঘাটগুলি আসলে ভেসেল চালানোর জন্যই তৈরি করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে চলছে মটর চালিত কাঠের নৌকো। ভেসেলের ভাড়া বেশি হয়, সেটা যাত্রীরা মেনে নিতে রাজি। কিন্তু মোটর চালিত নৌকার এত ভাড়া হয় না। সরকারি নিয়ম মানার জন্য দুটি ভেসেল আনা হলেও টেন্ডারের দায়িত্ব পাওয়া সংস্থা সেগুলি ডাঙায় তুলে রেখেছে।
ফলে যাত্রীরা অতিরিক্ত ভাড়া গুনেও আসল পরিষেবা পাচ্ছেন না। মোটর চালিত কাঠের এই নৌকায় কোন নির্দিষ্ট যাত্রী সংখ্যা বাধা নেই। যখন যেমন তখন তেমন সংখ্যক যাত্রী ও পণ্য নিয়ে চলে এই নৌকা। যার ফলে বিপদের সম্ভাবনাও সব সময় লেগে থাকে। ফলে যাত্রীরা বেশি টাকা দিয়েও প্রত্যেকদিন ঝুঁকিপূর্ণ যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন। আর আড়ালে থেকে ফুলেফেঁপে উঠছে শাহজাহান ও তাঁর বাহিনী। রাজ্য পরিবহণ দফতর কি এই দিকে নজর দেবে? প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।