পোস্ট অফিসে ডিজিটাল রেশন কার্ডের পাহাড়, রাজ্যে এবার ‘ভুয়ো পিয়ন’!

Fake Postman: গ্রাহকদের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট পোস্ট অফিসে যাঁরা পিওন পদে কাজ করছেন তাঁরা অফিসেই আসেন না। তাঁদের বদলে কাজ করেন কয়েকজন 'বহিরাগত লোক'। তাতে সাধারণ মানুষের প্রাপ্য কাগজপত্র বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া তো দূর অস্ত, এই 'ভুয়ো কর্মীরা' ফোন করে চিঠিপত্র পোস্ট অফিস থেকে নিয়ে যেতে বাধ্য করেন!

পোস্ট অফিসে ডিজিটাল রেশন কার্ডের পাহাড়, রাজ্যে এবার 'ভুয়ো পিয়ন'!
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 30, 2021 | 5:46 PM

উত্তর দিনাজপুর: ভুয়ো আইএএস, আইপিএস, সেনা, পুলিশকর্মী, বিচারকের পর এবার ভুয়ো পিয়ন! এমনই অভিযোগকে কেন্দ্র করে তীব্র উত্তেজনা ছড়াল উত্তর দিনাজপুরের দেবীনগরে। অভিযোগ, কর্মীর অভাবে ধুঁকছে পোস্ট অফিস। আর এই সময়ে ‘ভুয়ো’ কর্মীদের দিয়ে পোস্ট অফিসের কাজ করানো হচ্ছে! কেন এমন অভিযোগ?

স্থানীয়দের অভিযোগ, দেবীনগর সাব-পোস্ট অফিস থেকে রাজ্য সরকারের ডিজিটাল রেশন কার্ড পাওয়া যাচ্ছে না। তাই সরকার প্রদত্ত খাদ্য সামগ্রী থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তাঁদের দাবি, আসলে সরকারি ভবে নিয়োজিত পোস্ট পিয়নের জায়গায় কাজ করছেন ভুয়ো কর্মী। আর এর ফলে দরকারি কাগজ থেকে রাজ্য সরকারের পাঠানো ডিজিটাল রেশন কার্ড সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছানোর বদলে তা এখন পোস্ট অফিসে পড়ে পড়ে স্তুপে পরিণত হয়েছে। এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগে শুক্রবার দুপুরে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়াল রায়গঞ্জের দেবীনগর পোস্ট অফিসে।

গ্রাহকদের অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট পোস্ট অফিসে যাঁরা পিওন পদে কাজ করছেন তাঁরা অফিসেই আসেন না। তাঁদের বদলে কাজ করেন কয়েকজন ‘বহিরাগত লোক’। তাতে সাধারণ মানুষের প্রাপ্য কাগজপত্র বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া তো দূর অস্ত, এই ‘ভুয়ো কর্মীরা’ ফোন করে চিঠিপত্র পোস্ট অফিস থেকে নিয়ে যেতে বাধ্য করেন! এমনকি রাজ্য সরকারের পাঠানো ডিজিটাল রেশন কার্ড পোস্ট অফিসে ডাঁই হয়ে পড়ে থাকছে।

সেগুলি গ্রাহকদের বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার বদলে পোস্ট অফিসেই ফেলে রাখা হচ্ছে দিনের পর দিন। যার ফলে সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকার হচ্ছেন। গ্রাহকদের আরও অভিযোগ, অনেকেই রেশন কার্ড না পেয়ে ফুড সাপ্লাই অফিসে যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু সেখানে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ। দেখা গিয়েছে, কারও নামের পাশে মৃত বলা হয়েছে। আর এর মূলে রয়েছে পোস্ট অফিসই বলে দাবি তাঁদের। অভিযোগ, কর্তৃপক্ষ রেশন কার্ড বাড়িতে না পৌঁছে দিয়ে মৃত বলে চালিয়ে দেয়।

অন্যদিকে ‘ভুয়ো কর্মী’ হিসাবে অভিযুক্ত সুব্রত সরকারের দাবি, তিনি দীর্ঘদিন ধরে এই কাজ করে চলছেন। যখন কোনও পোস্টম্যান আসেন না তাঁর জায়গায় তিনি কাজ করেন। এছাড়া কর্মীর অভাব রয়েছে। তাই কাজগুলো সম্পূর্ণ করার জন্য পোস্ট মাস্টারের নির্দেশেই তিনি কাজ করেন বলে জানান। কিন্তু তাঁর নিয়োগ সংক্রান্ত কোনও কথা বলতে অস্বীকার করেন তিনি।

এদিকে এই ঘটনায় রাজ্য সরকারের খাদ্যসাথী প্রকল্পের ডিজিটাল রেশন কার্ড না পেয়ে সরকারি বরাদ্দ খাদ্য সামগ্রী থেকে সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হচ্ছেন বলে তৃণমূলও অভিযোগ তুলেছে। যদিও এমন ভাবে কেউ কাজ করতে পারেন কিনা সেই প্রশ্নের উত্তরে দেবীনগর পোস্ট অফিসের পোস্টমাস্টার দেবাশিষ রায় জানান, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই এভাবেই অনেক পোস্ট অফিসেই কাজ করানো হচ্ছে! তবে সরকারি পোস্টে পিওনেরা না আসাতেই এমন হচ্ছে বলে যুক্তি দেন তিনি। আরও পড়ুন: ‘বাবার মুখ দেখিয়ে ভোট জেতেননি,’ তৃণমূল বিধায়ককে মারের হুমকি দলেরই বিধায়কের!