‘বাবার মুখ দেখিয়ে ভোট জেতেননি,’ তৃণমূল বিধায়ককে মারের হুমকি দলেরই বিধায়কের!

TMC: 'শক্তিপুরের বাড়ি থেকে বেরতে দেব না। যে ভোটে জিতেছেন (রবিউল), ওঁর বাবা ঈশা চৌধুরীর নামে কেউ ভোট দেননি। এলাকায় ঢুকলে মেরে তাড়িয়ে দেব।'

'বাবার মুখ দেখিয়ে ভোট জেতেননি,' তৃণমূল বিধায়ককে মারের হুমকি দলেরই বিধায়কের!
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 30, 2021 | 5:31 PM

মুর্শিদাবাদ: ফের প্রকাশ্যে মুর্শিদাবাদে তৃণমূলের (TMC) গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। এক তৃণমূল বিধায়কের বাপবাপান্ত করে মারের হুমকি আরেক বিধায়কের। অস্বস্তিতে তৃণমূল নেতৃত্ব।

রেজিনগরের তৃণমূল বিধায়ক রবিউল আলম চৌধুরীকে এলাকায় ঢুকতে দেবেন না। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ দেখে ভোট পেয়েছেন। তাঁর বাবার মুখ দেখে কেউ ভোটে জেতাননি! তৃণমূল বিধায়ক সম্পর্কে যিনি এই মন্তব্য করেছেন তাঁর নাম হুমায়ুন কবির। প্রাক্তন মন্ত্রী তথা ভরতপুরে তৃণমূল বিধায়ক তিনি। দুই বিধায়কের প্রকাশ্য দ্বন্দ্বে তীব্র শোরগোল জেলা তৃণমূলের রাজনৈতিক মহলে।

বৃহস্পতিবার বেলডাঙ্গা ২ ব্লকের শক্তিপুরে একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় তৃণমূলের তরফে। সেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন দুই বিধায়কই। কিন্তু অনুপস্থিত ছিলেন রবিউল আলম চৌধুরী। আর সেখান থেকেই তাঁর সম্পর্কে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন রাজ্য প্রাক্তন মন্ত্রী তথা ভরতপুরে তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন।

হুমায়ুনের দাবি, এর আগে তাঁর একটি অনুষ্ঠান নাকি পণ্ড করার চেষ্টা করেছিলেন দলেরই সতীর্থ রবিউল। রেজিনগরের পাশেই ভরতপুর বিধানসভা। অভিযোগ, রবিউল সেখানকার মানুষকে তাঁর বিরুদ্ধে খেপিয়ে তুলছেন ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুনের বিরুদ্ধে। প্রকাশ্য সভা থেকে হুমায়ুন জানান, তাঁর এলাকাই তাঁর বাড়ি। তাই এখানে আর ঢুকতে দেবেন না রবিউলকে। এখানেই থামেননি হুমায়ুন। বলতে থাকেন, ‘শক্তিপুরের বাড়ি থেকে বেরতে দেব না। যে ভোটে জিতেছেন (রবিউল), ওঁর বাবা ঈশা চৌধুরীর নামে কেউ ভোট দেননি। এলাকায় ঢুকলে মেরে তাড়িয়ে দেব।’

এদিকে এই সভায় আমন্ত্রিত থাকলেও উপস্থিত ছিলেন না তৃণমূল জেলা তৃণমূল সভাপতি আবু তাহের খান। তবে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ শাহানাজ বেগম ছিলেন। জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষকেও বলতে শোনা যায়, রেজিনগরের বিধায়ককে ফোন করেও পাওয়া যায় না। ব্লক সভাপতিকেও মানেন না রবিউল। কোনও অনুষ্ঠান হলেও বিডিও-কে দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি। আর তাতেই আরও সুর চড়ান ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক।

উল্লেখ্য, রবিউল বনাম হুমায়ুনের লড়াই দীর্ঘদিনের। কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে আসার সময় থেকেই রবিউলের সঙ্গে তাঁর ঝামেলার কথা শোনা যায়। তখন থেকেই এলাকা দখলের লড়াই করতে শোনা যায় দুই নেতাকে। গত এক দশকে বার বার দল বদলাতে দেখা গিয়েছে হুমায়ুনকে।

তৃণমূল-বিজেপি-কংগ্রেসের টিকিটে বিধানসভা, লোকসভা, জেলা পরিষদে লড়েও জিততে পারেননি। এগারো সালে একবার জোট প্রার্থী হিসাবে জয়লাভ করেছিলেন। শেষ পর্যন্ত একুশের ভোটে তৃণমূলের টিকিটে থেকে ফের বিধায়ক হন হুমায়ুন কবির। ভরতপুর বিধানসভা কেন্দ্রে বিজেপি-র ইমনকল্যাণ মুখোপাধ্যায়কে ৪৩ হাজার ভোটে পরাজিত করে জয়ের হাসি হেসেছেন তিনি। বার বার রাজনৈতিক রং পাল্টানো হুমায়ুন ভোটের কয়েক মাস আগে তৃণমূলে যোগদান করে তাঁর টিকিট পাকা করেছিলেন। তবে তাঁর সঙ্গে রবিউলের ঝামেলা মেটেনি বলে দলীয় সূত্রে খবর।

এদিকে তাঁকে দলীয় বিধায়কের আক্রমণ নিয়ে রবিউল আলম চৌধুরীর প্রতিক্রিয়া, ওই সভা আসলে তৃণমূলের নামে বিজেপির সভা। দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে এ নিয়ে অনুযোগ করবেন বলে জানান তিনি। সেই সঙ্গে যোগ করেন, ওই সভায় তাঁকে আমন্ত্রণও জানাননি কেউ। সবমিলিয়ে চরমে উঠেছে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। আরও পড়ুন: বাড়ির একতলায় জল ঢুকে গিয়েছিল, বিপদ এড়াতে মেইন সুইচ অফ করতে গিয়েছিলেন যুবক! পরিণতি ভয়াবহ