বেজিং: রেহাই নেই! ফের ডিসেম্বরে চিনে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে কোভিড-১৯। ইতিমধ্যে চিনে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা হু-হু করে বাড়িতে শুরু করেছে। হাসপাতালগুলিতে থিক-থিক করছে করোনা রোগীর ভিড়। লাফিয়ে-লাফিয়ে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে, তাতে আগামী তিন মাসের মধ্যে ফের করোনা পরিস্থিতি সারা বিশ্বে ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
চলতি বছরের অক্টোবর থেকেই চিনে করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়তে শুরু করেছিল। যদিও চিনা সরকারের তরফে বিষয়টি স্পষ্ট করে জানানো হয়নি। করোনায় কোনও মৃত্যু নেই বলেও দাবি জানিয়েছিল বেজিং। গত ১৯ নভেম্বর থেকে ২৩ নভেম্বরে পর্যন্ত করোনা আক্রান্ত হয়ে চারজনের মৃত্যু হয়েছে বলে সরকারিভাবে জানিয়েছিল বেজিং। তারপর থেকে আর মৃতের সংখ্যা প্রকাশ করা হয়নি। তবে বেজিংয়ের এক শ্মশানকর্মী জানান, পুনরায় করোনা ঢেউ ফিরে আসার পর থেকে তাঁদের কাজের চাপ বেড়ে গিয়েছে। ২৪ ঘণ্টা-ই কাজ করতে হয়। এখন দিনে গড়ে ২০০টি দেহ দাহ করতে হয়। আগে দৈনিক দাহ করার সংখ্যা ছিল ৩০ থেকে ৪০।
করোনা পরিস্থিতি নিয়ে শি জিনপিংয়ের সরকার মুখ না খুললেও ডিসেম্বরের শুরুতেই জিরো-কোভিড নীতির উপর জোর দেয়। কিন্তু, সরকারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে পথে নামে চিনা জনগণ। চাপে পড়ে অবশেষে কড়া কোভিড-নীতি প্রত্যাখ্যান করে সরকার। কিন্তু পরিস্থিতি ক্রমে যে ভয়াবহ হয়ে উঠছে তা স্পষ্ট করেছেন চিনের ভাইরাস ও স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এরিক ফিইগি-ডিং। পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে ফের দু-বছর আগের স্মৃতি ফিরে আসতে পারে বলে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
⚠️THERMONUCLEAR BAD—Hospitals completely overwhelmed in China ever since restrictions dropped. Epidemiologist estimate >60% of 🇨🇳 & 10% of Earth’s population likely infected over next 90 days. Deaths likely in the millions—plural. This is just the start—🧵pic.twitter.com/VAEvF0ALg9
— Eric Feigl-Ding (@DrEricDing) December 19, 2022
করেনা বিশেষজ্ঞদের মতে, আগামী ৯০ দিনে চিনে কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ হতে পারে। সংক্রমণ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ফের কয়েক লক্ষ মানুষের মৃত্যু হতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তাঁরা। আমেরিকার ইনস্টিটিউট অফ হেলথ ম্যাট্রিক্স অ্যান্ড এভিলিউশন নামে সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, এপ্রিল মাসের চিনে করোনা সংক্রমণ শীর্ষে পৌঁছবে। চিনের মোট জনগণের এক-তৃতীয়াংশ করোনায় আক্রান্ত হতে পারে। ৩ লক্ষের বেশি মানুষের মৃত্যু হতে পারে।
বয়স্কদেরই করোনায় সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি বলে আশঙ্কা স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের। বিশেষত, যাঁরা এখনও পর্যন্ত ভ্যাকসিন নেননি এবং ভ্যাকসিন নেওয়ার আগ্রহ নেই। সবমিলিয়ে, কোভিড-১৯ নতুন করে ভাবাতে শুরু করেছে চিন সরকারকে। চিনের এই পরিস্থিতি ফের সারা বিশ্বে প্রভাব ফেলবে কিনা তা নিয়েও আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।