আগ্রাসী মনোভাবে ‘বিষফোঁড়া’র কাজ করেছে করোনা, বিশ্ব বাজারেও একঘরে হচ্ছে চিন

জ্যোতির্ময় রায় | Edited By: ঈপ্সা চ্যাটার্জী

Jul 05, 2021 | 12:12 PM

লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা নিয়েও ভারতের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছে চিন, যার কারণে দু'দেশের সম্পর্কে উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে। একই অবস্থা ভিয়েতনামের ক্ষেত্রেও।

আগ্রাসী মনোভাবে বিষফোঁড়ার কাজ করেছে করোনা, বিশ্ব বাজারেও একঘরে হচ্ছে চিন
ফাইল চিত্র।

Follow Us

নয়া দিল্লি: বিশ্বজুড়ে চলছে করোনা মহামারি। শতাব্দীর সবথেকে বড় আতঙ্ক এই করোনা সংক্রমণ(COVID-19)। চারিদিকে শুধু হাহাকার। মৃত্যুর তাণ্ডবে শঙ্কিত গোটা মানবজাতি। বিশ্বের ২২০ টি রাষ্ট্রের মোট ১৮.৪৪ কোটি মানুষ করোনায় আক্রান্ত। এই সংক্রমণের প্রভাব পড়েছে গোটা দেশেই এবং চিকিৎসা পরিকাঠামোর পাশাপাশি অর্থনৈতিক পরিকাঠামোও ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে।

করোনার উৎপত্তি (COVID-19 Origin) নিয়ে প্রথম থেকেই চিন(China)-র দিকে আঙ্গুল তোলে আমেরিকা (USA)। কঠোর গলায় আমেরিকার পূর্ব রাষ্ট্রপতি  চীনের সমালোচনা করেন, একই সুরে সুর মিলিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান রাষ্ট্রপতি বাইডেন (Joe Biden)-ও। করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পরার পরই চিনের প্রতি বিশ্বের দৃষ্টিভঙ্গি অনেকটা পালটে যায়, বিশেষ করে পশ্চিমি দেশগুলির। তাছাড়া, চিনের আগ্রাসী মনোভাবের কারণে, এমনকি ছোট দেশগুলিও চীনের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক নিয়ে সচেতন হয়েছে। অনেক দেশ চিন থেকে অস্ত্র এবং অন্যান্য সামরিক উপকরণের আমদানি কম করতে শুরু করেছে। পরিস্থিতি এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে যে এখন পাকিস্তান ছাড়া বড় বড় দেশগুলির পাশাপাশি ছোট দেশগুলিও চীনের অস্ত্র ও যুদ্ধবিমান কেনা থেকে নিজেদের দূরে রাখছে।

গত মাসে ফিলিপিন্সে চিনের পদক্ষেপের পর থেকে বেশিরভাগ দেশই চিনের সঙ্গে অংশীদারিত্ব থেকে সরে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, গত মাসে চিনা নৌবাহিনীর জাহাজগুলি বিনা অনুমতিতে ফিলিপিন্সের জলসীমায় প্রবেশ করেছিল। একমাত্র পাকিস্তানই চিন থেকে  অস্ত্র কেনার বিষয়ে আগ্রহী। বিশেষজ্ঞদের মতে, পাকিস্তান বর্তমানে ঋণের জ্বালায় জর্জরিত।

লাদাখের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা নিয়েও ভারতের সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছে চিন, যার কারণে দু’দেশের সম্পর্কে উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে। একই অবস্থা ভিয়েতনামের ক্ষেত্রেও। ভিয়েতনাম এবং চিনের মধ্যে সমুদ্রসীমা নিয়েও বিরোধ বাড়ছে। চিন তার যুদ্ধবিমান মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়াকে বিক্রি করতে চাইলেও তারা কিনতে রাজি নয়। একমাত্র পাকিস্তানই অস্ত্রের জন্য চিনের উপর নির্ভরশীল। ইসলামাবাদ গত পাঁচ বছরে যেসব অস্ত্র আমদানি করেছে, তার ৭৪ শতাংশই চিনের থেকে কেনা।

এই বছর স্টকহোম আন্তর্জাতিক শান্তি গবেষণা ইনস্টিটিউট (এসআইপিআরআই)-এর একটি প্রতিবেদনে বলা হয় যে, ‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পের আওতায় নিজেদের উপর নির্ভরশীলতা অবিরাম বাড়িয়ে চলেছে ভারত। অস্ত্র আমদানি ২০১১ থেকে ২০১৫ সাল এবং ২০১৬ থেকে ২০১৮ সালে ৩৩ শতাংশ কমেছে। অন্যদিকে, চিনের রফতানিও ৭.৮ শতাংশ কমেছে।

চিন ক্রমাগত তার যুদ্ধবিমানের প্রযুক্তি উন্নত করছে। ড্রাগন জে-১০, জে-১০ সি এবং এফসি-৩১ এর মতো যুদ্ধবিমান তৈরি করেছে। কিন্তু এসআইপিআরআই-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিন যেখানে ২০০০ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে ৭.২ আরব ডলারের সামরিক বিমান রফতানি করেছে, সেখানে আমেরিকা ৯৯.৬ আরব ডলারের বিমান রফতানি করেছে এবং রাশিয়া  ১৬.৫ আরব ডলারের বিমান রফতানি করেছে। এমনকি ফ্রান্সও চীনের থেকে দ্বিগুণ পরিমাণ, অর্থাৎ ১৪.৭ আরব ডলারের বিমান রফতানি করেছে।

চিনের সামরিক বিমান প্রযুক্তিগত ভাবে উন্নত হলেও, চীনা সরকারের আগ্রাসী মনোভাবের কারণে চিনের উপর আস্থা রাখতে পারছেনা ছোট-বড় রাষ্ট্রগুলি, ফলে ভবিষ্যতে বিশ্বের সামরিক বাজারে চিনের যোগদান আরও কমবে।

আরও পড়ুন: ‘করোনাকে সঙ্গে নিয়েই বাঁচতে শিখুন’, আনলকের সিদ্ধান্তের আগেই বার্তা প্রধানমন্ত্রী বরিসের 

⇜ TV9 EXCLUSIVE: না পড়লেই নয় ⇝

 

Next Article