China: পাকিস্তানে সেনা মোতায়েন করছে চিন, আফগানিস্তানেও কি তৈরি হবে ঘাঁটি?

China: শ্রীলঙ্কায় গুপ্তচর জাহাজ পাঠানোর পর পাকিস্তানে সেনা মোতায়েন করতে চলেছে চিন।

China: পাকিস্তানে সেনা মোতায়েন করছে চিন, আফগানিস্তানেও কি তৈরি হবে ঘাঁটি?
পাকিস্তানের উপর চাপ বাড়াচ্ছেন শি জিনপিং
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 17, 2022 | 6:55 PM

ইসলামাবাদ: শ্রীলঙ্কার হাম্বানটোটা বন্দরে গুপ্তচর জাহাজ পাঠানোর পর, এবার পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে নিজস্ব বাহিনী মোতায়েন করতে চলেছে চিন। এমনটাই দাবি করেছে এক শীর্ষস্থানীয় কূটনৈতিক সূত্র। দুই দেশেই তারা বিপুল বিনিয়োগ করেছে। পাকিস্তান-আফগানিস্তান রুটের মাধ্যমে মধ্য এশিয়ায় প্রভাব বিস্তার করতে আগ্রহী চিন। এই কারণেই এই দুই দেশে কৌশলগত বিনিয়োগ করেছে বেজিং।

পাকিস্তানে চিনা বিনিয়োগের পরিমাণ, বর্তমানে ৬০০০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি হয়ে গিয়েছে বলে অনুমান করা হয়। তবে শুধুমাত্র আর্থিক দিক থেকেই নয়, সামরিক ও কূটনৈতিক দিক থেকেও সমর্থনের জন্যও ইসলামাবাদ চিনের উপর নির্ভরশীল। সূত্রের খবর, এই অতি নির্ভরশীলতাকে কাজে লাগিয়ে, পাকিস্তানকে সশস্ত্র চিনা পিএলএ সদস্যদের মোতায়েনের জন্য চাপ দিচ্ছে চিন। পাকিস্তানে সামরিক ফাঁড়ি স্থাপনের জন্য যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করছে বেজিং এমনটাই জানিয়েছে ওই সূত্র।

জানা গিয়েছে, চিনা রাষ্ট্রদূত নং রং এই বিষয়ে পাকর প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, বিদেশমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো এবং সেনাপ্রধান জেনারেল কামার জাভেদ বাজওয়ার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এটিই ছিল নতুন পাক সরকারের সঙ্গে সেই দেশের চিনা রাষ্ট্রদূতের প্রথম আনুষ্ঠানিক বৈঠক। বৈঠকে চিনা রাষ্ট্রদূত পাকিস্তানে চিনা প্রকল্পগুলির নিরাপত্তা এবং তাদের নাগরিকদের নিরাপত্তার বিষয়ে জোর দিয়েছেন। গ্বদর নিরাপত্তা ফাঁড়িতে চিনা পিএলএ সদস্য মোতায়েন এবং গ্বদর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরকে চিনা যুদ্ধবিমানগুলির জন্য ব্যবহার করার দাবি জানানো হয়েছে।

গত কয়েক বছরে পাকিস্তানের মাটিতে চিনা নাগরিকদের উপর বেশ কয়েকটি হামলা হয়েছে। ২০২১ সালের এপ্রিলে কোয়েটায় বোমা বিস্ফোরণে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছিলেন চিনা রাষ্ট্রদূত। তার এক বছর পর, করাচির কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের কাছেই একজন বেলুচ সন্ত্রাসবাদী আত্মঘাতী বোমা হামলা চালিয়ে তিন চিনা নাগরিককে হত্যা করেছিল। এই ঘটনাগুলির উল্লেখ করে পাকিস্তানে তাদের নিজস্ব নিরাপত্তা মোতায়েন করার জন্য চাপ দিয়েছে চিন। পাক সরকার বারবার এই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলেও, বেজিং তাদের মনে করিয়ে দিয়েছে কীভাবে একসময় আমেরিকা ও অন্যান্য দেশের সামরিক ফাঁড়ি ছিল পাকিস্তানে।

তবে, পাকিস্তানে চিনা সেনা মোতয়েন করাটা খুব একটা সহজ হবে না বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, পাক জনতা তাদের দেশে চিনা সামরিক উপস্থিতি চান না। তবে, তাদের দেশ ইতিমধ্যেই বেজিং-এর ঋণের জালে জড়িয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পাকিস্তানকে চিন কৌশলগত উপনিবেশ হিসেবে ব্যবহার করবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

অন্যদিকে, আফগানিস্তানে চিন সেনা মোতায়েন করার কাজটা মোটেই খুব একটা সহজ হবে না বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্রের দাবি আফগানিস্তানে বিনিয়োগ করতে আগ্রহী চিন। আফগান ভূমেও তারা তাদের বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। তালেবানরা আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের পর, চিন আশা করেছিল তারা প্রশ্নাতীত সহযোগিতা দেবে। কিন্তু বেজিং-এর সেই আশা বাস্তবায়িত হয়নি।

চিন মনে করেছিল, তালিবান ও হাক্কানিরা উইঘুর বিদ্রোহীদের বেজিং-এর হাতে তুলে দেবে। তবে, তালিবান কর্তৃপক্ষের দিক থেকে এই বিষয়ে কোনও আগ্রহ দেখা যায়নি। এই অবস্থায় বেজিংয়ের উদ্বেগ, উইঘুর চরমপন্থীরা বেলুচ গোষ্ঠী এবং তেহরিক-ই-তালিবা গোষ্ঠীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে আরও শক্তি বৃদ্ধি করবে। এই উদ্বেগ কাটাতেই আফগানিস্তানে সেনা মোতায়েন করতে চায় তারা। তবে, শেষ অবধি তালিবানরা তা হতে দেবে কি না, সেটাই দেখার।